৬.৭০ বাকি ঈমানদারদের জান কবজ

 আখেরী জামানায় একটি বাতাস এসে সমস্ত মুমিনদের জান কবয করে নিবে। তারপর পৃথিবীতে আল্লাহ, আল্লাহ বলার মত তথা আল্লাহর নাম উচ্চারণ করার মত কোন লোক থাকবেনা। নিকৃষ্ট লোকেরাই বেঁচে থাকবে। তাদের উপরেই কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবে। আখেরী যামানায় সৎ লোকদের চলে যাওয়ার ধরণ সম্পর্কে নবী বলেনঃ

আল্লাহ তাআলা ইয়ামানের দিক থেকে রেশমের চেয়ে অধিক নরম একটি বাতাস প্রেরণ করবেন। সেদিন যার অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণ ঈমান থাকবে সেও এ বাতাসের কারণে মৃত্যু বরণ করবে। (প্রয়োজনীয় অংশ)
-       (সহীহ, সহীহুল মুসলিম ইসঃ ফাঃ ৭১০৬)

হযরত আবু যার (রা:) বলেন, রসূল বলেছেন, পৃথিবী ধ্বংসের কিছু পূর্বে আল্লাহ তায়ালা একটি শীতল বাতাস দিয়ে মুমিনদের মৃত্যু ঘটাবেন। আর তার পরেই পশ্চিমে সূর্যোদয় হবে, যখন কোন মানুষের তাওবাহ আল্লাহ কবুল করবেন না।
-       (কিতাবুল আক্বিব ২৯৪)

আবু হুরাইরা (রা:) থেকে বর্ণিত, রসূল বলেন, আল্লাহ তায়ালা ডান দিক থেকে একটি বাতাস প্রেরণ করবেন। যা ফেনার থেকেও নরম (আরামদায়ক), মধুর চেয়ে মিষ্টি হবে। উক্ত বাতাস এমন কোন ব্যক্তিকে ছাড়বে না, যার অন্তরে কুরআন শরীফের একটি আয়াতও আছে, তাকে (কবজ করে) নিয়ে যাবে। (উক্ত বাতাস মুমিনগণকে মৃত্যু দান করবে)
-       (সহীহ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ, পথিক প্রকাঃ ১৬৬৩)

হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা:) বলেন, রসূল বলেছেন, মুসলমানদের শেষ বিজয় হবে মরিয়ম পুত্র ঈসা (আঃ) এর মাধ্যমে আর তিনি ৩৩ বছর পৃথিবী শাসন করবে। তারপর আল্লাহ এক শীতল বাতাস দিয়ে মুমিনদের মৃত্যু ঘটাবেন।
-       (আস সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ১৫০৩; আখীরুজ্জামানা আল মাহদী ফিল আলামাতিল কিয়ামাহ ২২৮)

হযরত আবু যার (রা:) বলেন, রসূল বলেছেন, যখন দ্বীনের পক্ষে যুদ্ধের জন্য কোনো নেতা থাকবে না, তখন আল্লাহ তায়ালা একটি শীতল বাতাস দিয়ে তার দুর্বল মুমিন বান্দাদের মৃত্যু ঘটাবেন। আর সেই বাতাসের এক দশক (১০ বছর) পূর্বে আল্লাহ তার কাবা ঘরের রহমত তুলে নিবেন। *
-       (আস সুনানু কিতাবুল ফিরদউস ১৮০০; কিতাবুল আক্বিব ২৯২)
-       * এই হাদিস থেকে এটি জানা যায় যে কাবাঘর হাবশীরা ধ্বংস করার আরো ১০ বছর পর সেই শীতল বাতাস আসবে ও সকল (দুর্বল) মুমিনদের জান কবজ করবে। অর্থাৎ কাবা ঘর ধ্বংসের পরে এই শীতল বাতাস দিয়ে মুমিনদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটবে।

আনাস (রা:) হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ বলেছেন: কিয়ামত তখনই সংঘটিত হবে, যখন জমিনের মধ্যে আল্লাহ আল্লাহ বলার মতো কেউ থাকবে না। অপর এক বর্ণনায় আছে- এমন কোন লোকের ওপরে কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যে আল্লাহ আল্লাহ বলেছে।
-       (সহীহ, সহীহুল মুসলিম ২৩৪-(১৪৮); মিশকাত হাঃ একাঃ ৫৫১৬; তিরমিযী ২২০৭; সহীহুল জামি ৭৪২০; মুসনাদে আহমাদ ১১৬৩২, ১২০৬২; আবূ ইয়া'লা ৩৫২৬; সহীহ ইবনু হিব্বান ৬৮৪৯; শুআবূল ঈমান ৫২৪; আল মুসতাদরাক লিল হাকিম ৮৫১১; আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ, পথিক প্রকাঃ ১৮০৮)

বাতাসটি রেশমের চেয়ে নরম ও কোমল হবে। ফিতনার সময় ঈমানের উপর অটল মুমিনদের সম্মানার্থেই আল্লাহ এ ধরণের বাতাস প্রেরণ করবেন। নবী আরো বলেনঃ

অতঃপর আল্লাহ তাআলা শাম দেশের দিক থেকে একটি ঠান্ডা বাতাস প্রেরণ করবেন। এ বাতাসের কারণে যার অন্তরে সামান্য পরিমাণ ঈমান আছে, সেও মৃত্যুবরণ করবে। সে যদি পাহাড়ের গুহায় ঢুকে পড়ে বাতাসটিও সেখানে প্রবেশ করে তার জান কবজ করবে। (প্রয়োজনীয় অংশ)
-       (সহীহ, সহীহুল মুসলিম, হাদীস একাঃ ৭২৭১)

আব্দুর রহমান ইবনে শুমাসাহ আল মাহরি বলেন, আমি মাসলামা ইবনে মাখলাদের নিকট উপস্থিত ছিলাম, এ সময় আব্দুল্লাহ ইবনে আমার ইবনুল আসও (রা:) তার কাছে উপস্থিত ছিলেন। আব্দুল্লাহ (রা:) বলেন, আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে নিকৃষ্টতম লোকগুলো যখন পৃথিবীর বুকে অবশিষ্ট থাকবে তখনই কিয়ামাত হবে। তারা জাহিলি যুগের লোকদের চেয়েও নিকৃষ্ট হবে। তারা আল্লাহর কাছে যা-ই চাইবে তাই তাদের দেয়া হবে। আব্দুর রাহমান ইবনে শুমাসাহ বলেন, তারা এই আলোচনায় রত ছিলেন এমন সময় উকবা ইবনে আমের (রা:) সেখানে উপস্থিত হলেন। মাসলামা তাকে বললেন, হে উকবা! আব্দুল্লাহ কি বলছে তা শুনুন। জবাবে উকবা (রা:) বলেনঃ তিনি আনেক অভিজ্ঞ। তবে আমি রসূলুল্লাহ কে বলতে শুনেছিঃ আমার উম্মতের একদল লোক সর্বদা আল্লাহর হুকুমের উপর অবিচল থাকার জন্য শত্রুর বিরুদ্ধে কিতাল (লড়াই) করতে থাকবে। যারা তাদের বিরোধিতা করবে তারা তাদের কোন ক্ষতিই করতে পারবে না। এই অবস্থায় তাদের কাছে কিয়ামাতের মুহূর্ত এসে যাবে এবং তারা হক প্রতিষ্ঠায় শত্রুর মুকাবিলা করতে থাকবে।

আব্দুল্লাহ (রা:) বলেন, হাঁ, আপনি ঠিকই বলেছেন। অতঃপর আল্লাহ এমন এক বায়ু প্রবাহিত করবেন যা কস্তূরীর ন্যায় সুগন্ধযুক্ত এবং রেশমের ন্যায় মোলায়েম হবে। অতঃপর তা এমন কোন ব্যাক্তিকে অবশিষ্ট রাখবে না যার অন্তরে সামান্য পরিমাণও ঈমান থাকবে। তা তাদের সবাইকে মৃত্যুর কোলে ঢলিয়ে দিবে। অতঃপর পৃথিবীতে কেবল নিকৃষ্টতম লোকগুলোই অবশিষ্ট থাকবে। আর তাদের উপর কিয়ামাত কায়েম হবে।
-       (সহীহ, সহীহুল মুসলিম, কিতাবুল ইমারাহ, ২০/৪৭২১)

আবূ কামিল আল জাহদারী, আবু মান যায়দ ইবনু ইয়াযীদ আর রাকাশী (রহঃ) ..... আয়িশাহ (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ কে বলতে শুনেছি, রাত্র ও দিন শেষ হবে না, যতক্ষণ না লাত ও উযযা দেবতার পূজা আবার শুরু করা হয়। এ কথা শুনে আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল ! পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ নাযিল করেছেন তিনিই তার রসূলকে পাঠিয়েছেন হিদায়াত ও সত্য দ্বীনসহ, সকল দ্বীনের উপর বিজয়ী করার জন্য, যদিও মুশরিকরা তা পছন্দ করে না"- (সূরা আত তওবা ৯:৩৩ ও আস-সাফ ২১:৯)। এ আয়াত নাযিলের পর আমি তো মনে করছিলাম যে, এ প্রতিশ্রুতি অবশ্যই পূর্ণ করা হবে। রসূলুল্লাহ বললেন, তা অবশ্যই হবে। তবে যতদিন আল্লাহ ইচ্ছা করবেন ততদিন পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে। অতঃপর তিনি এক মনোরম বাতাস প্রেরণ করবেন। ফলে যাদের অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণ ঈমান আছে তাদের প্রত্যেকেই মৃত্যুবরণ করবে। পরিশেষে যাদের মাঝে কোন প্রকার (ঈমান) কল্যাণ নেই তারাই শুধু বেঁচে থাকবে। অতঃপর তারা আবার পিতৃ-পুরুষদের ধর্মের (শিরকের) দিকে ফিরে যাবে।
-       (সহীহ, সহীহুল মুসলিম হাঃ একাঃ ৭১৯১-(৫২/২৯০৭) [ইঃ ফাঃ ৭০৩৫; ইঃ সেঃ ৭০৯২]; সুনান তিরমিযী ২২২৮; মিশকাত হাঃ একাঃ ৫৫১৯; সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ২৪৪১; মুসনাদে আহমাদ ৮৩৪৬; আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯০৯১)

উক্ত রাবী (আবূ হুরাইরা) (রা:) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ -কে বলতে শুনেছি, মদিনার অবস্থা উত্তম থাকা সত্ত্বেও তার অধিবাসীরা মদিনা ত্যাগ করে চলে যাবে। [সে সময়] সেখানে কেবল বন্য হিংস্র পশু-পক্ষীতে ভরে যাবে। সব শেষে যাদের উপর কিয়ামত সংঘটিত হবে, তারা মুযাইনাহ গোত্রীয় দুজন রাখাল, যারা নিজেদের ছাগলের পাল হাঁকাতে হাঁকাতে মদিনা অভিমুখে নিয়ে যাবে। তারা মদিনাকে হিংস্র জীব-জন্তুতে ঠাসা অবস্থায় পাবে। তারপর যখন তারা [মদিনার উপকণ্ঠে অবস্থিত] সানিয়্যাতুল্ অদা নামক স্থানে পৌঁছবে, তখন তারা মুখ থুবড়ে মাটিতে পড়ে যাবে।
-       (সহীহ, সহীহুল বুখারী ১৮৭৪; সহীহুল মুসলিম ১৩৮৯; মুসনাদে আহমাদ ৮৭৭৩; মুওয়াত্তা মালিক ১৬৪৩; রিয়াযুস স্বা-লিহীন তাঃ পাঃ ১৬/১৮৩২ [আন্তঃ ১৮২৩])

হুযাইফাতুল ইয়ামান (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইসলাম পাঠ করা হবে, যেমনিভাবে পাঠ করা হয় কাপড়ের অলংকার। এমনকি মানুষ জানবে না, রোজা কি, সদকাহ কি, ইবাদাত কি। একরাত্রে আল্লাহ তায়ালার কিতাব উঠিয়ে নেয়া হবে। ফলে পৃথিবীতে কুরআন শরীফের একটি আয়াতও রাখা হবে না। মানুষদের থেকে অধিক ঘোরাফেরাকারী অবশিষ্ট থাকবে। তাদের মধ্যে থাকবে অতিবৃদ্ধ এবং অতিঅক্ষম। তারা বলবে, আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' এই কালিমার উপর পেয়েছি। সুতরাং, আমরাও এই কালিমা বলবো। সিলাহ ইবনু যুফার হুযাইফা (রা:) কে বললেন, তিনি তার সঙ্গে বসা ছিলেন। (তিনি বললেন) লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ কি ফায়দা দিবে? তারা তো রোজা কি, সদকাহ কি, ইবাদাত কি, জানে না। হুযাইফা (রা:) তার থেকে তিনবার মাথা ঘুরিয়ে নিলেন এবং বললেন, হে সিলাহ! এই কালিমা-ই তাদের দুইবার বা তিনবার মুক্তি দিবে।
-       (সহীহ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ, পথিক প্রকাঃ ১৬৬৪; মুসতাদরাকে হাকেম ৩৪৯৭; মুসনাদে বাযযার ২৮৩৮)

আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ বলেছেন: দাজ্জাল বের হবে এবং সে চল্লিশ পর্যন্ত অবস্থান করবে। আবদুল্লাহ (রা:) বলেন, আমি জানি না তিনি চল্লিশ দিন অথবা মাস অথবা বছর এটার কোনটি বলেছেন? অতঃপর আল্লাহ তাআলা ঈসা ইবনু মারইয়াম আলাইহিস সালাম-কে পাঠাবেন। দেখতে তিনি উরওয়া ইবনু মাসঊদ-এর মতো। তিনি দাজ্জালের খোঁজ করবেন এবং তিনি তাকে হত্যা করবেন। তিনি (ঈসা আলাইহিস সালাম) সাত বছর এ জমিনে অবস্থান করবেন, সেই যুগে দুজন লোকের মধ্যেও শত্রুতা থাকবে না। অতঃপর আল্লাহ তাআলা সিরিয়ার দিক থেকে একটি ঠাণ্ডা বাতাস প্রবাহিত করবেন, উক্ত বায়ু ভূপৃষ্ঠে এমন একজন লোককেও জীবিত রাখবে না, যার অন্তরে অণু-কণা পরিমাণ পুণ্য বা ঈমান থাকবে। যদি সে সময় তোমাদের কেউ পাহাড়ের ভিতরেও আত্মগোপন করে, উক্ত বাতাস সেখানে প্রবেশ করেও তার রূহ কবয করবে।

তিনি বলেছেন, অতঃপর কেবলমাত্র নিকৃষ্ট ফাসিক ও খারাপ লোকগুলোই অবশিষ্ট থাকবে। তারা নিষ্ঠুর পাখিদের মতো দ্রুতগামী এবং খুন-খারাবিতে হিংস্র জন্তুর ন্যায় নিষ্ঠুর হবে। ভালো-মন্দ তারতম্য করার কোন যোগ্যতা তাদের মধ্যে বিদ্যমান থাকবে না। তখন শয়তান একটি আকৃতি ধারণ করে তাদের কাছে এসে বলবে, তোমাদের ডাকে কী সাড়া দিব না? তখন লোকেরা বলবে, আচ্ছা তুমিই বল আমাদের কি করা উচিত। অতঃপর শয়তান তাদেরকে মূর্তিপূজায় আদেশ করবে। এ অবস্থায় তারা অতি সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে ও ভোগ-বিলাসে জীবনযাপন করতে থাকবে। অতঃপর শিঙ্গায় ফুক দেয়া হবে এবং যে লোকই উক্ত আওয়াজ শুনবে, সে ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় এদিক-সেদিক মাথা ঘুরাতে থাকবে।

তিনি বললেন, সর্বপ্রথম উক্ত আওয়াজ সেই লোকই শুনতে পাবে, যে তার উটের জন্য পানির হাওয মেরামত কার্যে রত। সে তখন ভীত হয়ে সেখানেই মৃত্যুবরণ করবে এবং তার সাথে সাথে অন্যান্য লোকও মারা যাবে। অতঃপর আল্লাহ তাআলা কুয়াশার মতো খুব হালকা ধরনের বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। তাতে ঐ সকল দেহগুলো সজীব হয়ে উঠবে, যেগুলো কবরের মধ্যে নিশ্চিহ্ন হয়ে রয়েছিল। অতঃপর দ্বিতীয়বার শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে, তখন সমস্ত লোক উঠে দাঁড়াবে। অতঃপর ঘোষণা দেয়া হবে, হে লোকসকল! তোমরা দ্রুত তোমাদের প্রভুর দিকে ছুটে আসো। (ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দেয়া হবে) ঐখানে তাদেরকে থামিয়ে রাখ, তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে। অতঃপর মালায়িকা- (ফেরেশতাদেরকে) বলা হবে, ঐ সকল লোকদেরকে বের কর যারা জাহান্নামের উপযোগী হয়েছে। তখন মালায়িকাহ্ বলবেন, কতজন থেকে কতজন বের করব? বলা হয়, প্রত্যেক হাজার থেকে নয়শত নিরানব্বইজনকে জাহান্নামের জন্য বের কর। এ পর্যন্ত বলার পর তিনি বললেন, এটা সেদিন যেদিন সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছে- (يَوْمَ يَجْعَلُ الْوِلْدَانَ شِيبًا) সেদিন শিশুদেরকে বৃদ্ধ করে ফেলবে। (অর্থাৎ সেদিনের বিভীষিকায় শিশুও বৃদ্ধ হয়ে যাবে)।

(يَوْمَ يُكْشَفُ عَنْ سَاقٍ) সেদিন বিরাট সংকটময় অবস্থায় প্রকাশ পাবে। মুআবিয়াহ্ (রা:) কর্তৃক বর্ণিত হাদীস (لَا تَنْقَطِعُ الْهِجْرَةُ) পূর্বে তাওবার অধ্যায়ে বর্ণিত হয়েছে। *
-       (সহীহ, সহীহুল মুসলিম ১১৬-(১৯৪০); মিশকাত হাঃ একাঃ ৫৫২০; মুসনাদে আহমাদ ৬৫৫৫; সহীহ ইবনু হিব্বান ৭৩৫৩; দারিমী ১৪১৭)
-       * আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা:) থেকে অনেকগুলি ফিতনা সংক্রান্ত হাদিসই সহীহ রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু তাতে তথ্য বিভ্রান্তি তথা ভুল পরিলক্ষিত হয়। এটি হয়তো স্মরণশক্তি দুর্বলের কারণেই হয়ে থাকতে পারে। যেমন এখানের কিছু বর্ণনা অন্য সহীহ হাদিসের বিপরীত এবং অনেকগুলো বর্ণনারই বিপরীত। যেমন ঈসা (আঃ) সাত বছর শাসন করবেন। মূলত আরো দুইটি সহীহ হাদিসে রয়েছে ৪০ বছর এবং ৩৩ বছর। ৩৩ বছরের টিই বেশি সহীহ। হয়তো ইমাম মাহদীর খিলাফত সময়কালকে তিনি গুলিয়ে ফেলেছেন এবং এটা স্বাভাবিক। তার কথা থেকেই তা বুঝা যায় যেমন, দাজ্জাল ৪০ দিন পৃথিবীতে অবস্থান করবে কিন্তু সেই চল্লিশ দিন না মাস না বছর তা তিনি সঠিকভাবে জানেন না বা ভুলে গেছেন। কিন্তু অন্য সহীহ হাদিসে ৪০ দিন হবে এবং তা কেমন হবে তাও উল্লেখ রয়েছে। সেই তথ্যই বেশি সঠিক। এই রাবি থেকে বর্ণিত ফিতনার হাদিসগুলো যেহেতু ভুল তথ্য দিয়ে বর্ণিত তাই তার হাদিসগুলোকে কট্টরভাবে নেওয়া ও তা দিয়ে ব্যাখ্যা করা ঠিক হবে না।

আব্বাস ইবনু আবু রবিআ (রা:) থেকে। তিনি বলেন, আমি রসূল কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামতের সামনে (পূর্বে) একটি বাতাস আসবে, যাতে প্রত্যেক মুমিনের রুহ কবজ করা হবে।
-       (সহীহ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ, পথিক প্রকাঃ ১৬৭১)

হানযালা (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি কাসেম ইবনু আবু বাযযাহকে তাউসের নিকট কিয়ামতের পূর্বের নিদর্শন সম্পর্কে প্রশ্ন করতে শুনেছি। অতঃপর তিনি বলেন, আমি জানিনা, সেটা কি! তবে কিয়ামতের দিনের পূর্বে একটি ভালো বাতাস আসবে। যা প্রত্যেক মুমিনের রুহ কবজ করে নিবে। যদিও সে শিলা খণ্ডের গুহায়ও থাকে।
-       (সহীহ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ, পথিক প্রকাঃ ১৬৭২)


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ