৫.৬ গাজওয়াতুল হিন্দের সৈনিকগণ

 এখন পর্যন্ত যত বর্ণনা এসেছে হিন্দের যুদ্ধের বিষয়ে সেগুলো সব দেখলে আমরা এই বিষয়ে উপনীত হতে পারি যে, এই হিন্দের যুদ্ধের মাধ্যমেই মুসলিমরা একটি বড় বিজয় পাবে এবং হিন্দ বিজয় করে মুজাহিদরা পশ্চিমে গমন করবে বাইতুল মুকাদ্দাস ও আরব বিজয় করতে। এরাই হবে কালো পতাকাবাহী সৈন্যদল এবং এরাই মাহদীর খিলাফতকে প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাবে এবং সর্বশেষ এরাই মাহদীর সৈন্য হিসেবে গণ্য হবে। এই সকল সৈন্যদের মধ্য থেকেই উত্তম সেনাপতিরা ইমাম মাহদীর কাছে বায়াত নেয়ার সুযোগ পাবে। একারণেই হিন্দের মুজাহিদদের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। তাই সকলেরই উচিত হবে এই যুদ্ধে একজন মর্দে মুজাহিদ, বীর সেনা হিসেবে যুক্ত হওয়া এবং তাতে যুক্ত হওয়ার জন্য নিয়ত রাখা। হাদিসে এসেছে-

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে হারিস (রা:) থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ বলেন, পূর্বদিক থেকে কিছু লোক বের হয়ে আসবে, যারা ইমাম মাহদীর খিলাফত প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করবে এবং খিলাফত প্রতিষ্ঠা সহজ করে দিবে।

অন্য অনুবাদে এসেছে- প্রাচ্য দেশ থেকে কতক লোকের উত্থান হবে এবং তারা মাহ্দীর রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত করবে।
-       (যঈফ, সহীহুল মুসলিম, খণ্ড ৩, হাদিস নং ২৮৯৬; সুনানে ইবনে মাজা, খণ্ড ৩, তাঃ পাঃ ৪০৮৮; যইফাহ ৪৮২৬, যইফ আল-জামি' ৬৪২১)
-       এ বিষয়ে সহীহ হাদিসও থাকায় এটিকে গ্রহণ করা যেতে পারে।

আবূ হুরাইরা (রা:) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ বলেছেন: খুরাসানের দিক হতে কালো পতাকাবাহীগণ আবির্ভূত হবে (মাহ্দীর সর্মথনে)। অবশেষে সেগুলো ইলিয়া (বায়তুল মাকদিস)-এ স্থাপিত হবে এবং কোন কিছুই তা ফিরাতে পারবে না।
-       (সুনান আত তিরমিজী (আল মাদানী প্রকাঃ) ২২৬৯ [ইঃ ফাঃ ২২৭২]; মুসনাদে আহমাদ ৮৭৬০)

প্রাচ্যদেশ (পূর্ব) থেকে কালো পতাকাধারী কতক লোক তাদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসবে। তারা কল্যাণ (খিলাফত) প্রার্থনা করবে, কিন্তু তা তাদের দেয়া হবে না। তারা লড়াই করবে এবং বিজয়ী হবে। শেষে তাদেরকে তা (খিলাফত) দেয়া হবে, যা তারা চেয়েছিল। কিন্তু তারা তা গ্রহণ করবে না। অবশেষে আমার আহলে বাইত-এর একজন লোকের (ইমাম মাহাদীর) নিকট তা (খিলাফত) সোপর্দ করা হবে। সে পৃথিবীকে ইনসাফে পরিপূর্ণ করবে, যেমনিভাবে লোকেরা একে যুলুমে পূর্ণ করেছিলো। তোমাদের মধ্যে যারা সে যুগ পাবে, তারা যেন বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাদের নিকট চলে যায়।
-       (যঈফ, সুনানে ইবনে মাজাহ ৪০৮২; রাওদুন নাদীর ৬৪৭; তারিখে তাবারী; আস সাওয়ায়িকুল মুহ্রিকাহ্, অধ্যায় ১১, উপাধ্যায় ১, পৃ. ২৫০-২৫১)

হযরত জাবির (রা:) বলেন, রসূল বলেছেন, অভিশপ্ত জাতির নিকট থেকে হিন্দুস্তান বিজয়ের সৈনিকরা অর্থাৎ গাজওয়াতুল হিন্দের বিজয়ী সৈনিকরা জেরুজালেম তথা বাইতুল মুকাদ্দাস দখলে নেবে। আর তাদের সেনাপতি হবে শামীম বারাহ, যার উপাধী হবে সাহেবে কিরান।
-       (আখীরুজ্জামানা আল মাহদী ফিল আলামাতিল কিয়ামাহ ১০০)

তাহলে দেখা যাচ্ছে হিন্দের যুদ্ধের এই সকল সৈন্যরাই মাহদীর খিলাফত প্রতিষ্ঠার সাহায্যকারী হবে, এক কথায় তারাই মাহদীর সৈন্য। এই সকল সৈন্যরা কারা হবেন, কোন নেতার অধীনে, কোন জামায়াতের অন্তর্ভুক্ত হবেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ইমাম মাহদীর খিলাফত প্রতিষ্ঠার সাহায্যকারী, যিনি তার পূর্বে আত্মপ্রকাশ করবেন, তার নেতৃত্বেই তার জামায়াতেই এই সকল সৈন্যরা থাকবেন। তাই যারাই সেই জামায়াতের অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে তারাই হবে হিন্দের যুদ্ধের মুজাহিদ এবং মাহদীর খিলাফত প্রতিষ্ঠার সাহায্যকারী সৈন্যদলের সৈন্য।

 

 আল্লাহ আমাদেরকে ইমাম মাহদীর খিলাফত প্রতিষ্ঠার একজন সাহসী সৈনিক হিসেবে কবুল করুন, আমীন ইয়া রব্বাল আলামীন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ