৬.৩৫ ইমাম মাহদীকে মারতে সুফিয়ানী দলের প্রস্তুতি

 ইমাম মাহদীর আবির্ভাব হয়েছে এটি শুনে সুফিয়ানী তার দলবল নিয়ে সিরিয়া থেকে বাহিনী নিয়ে মক্কার উদ্দেশ্যে বের হবে আর লক্ষ্য হবে মাহদীকে আক্রমণ করা। মাহদীও তখন এটি জেনে মদিনা থেকে মক্কার দিকে তার পরিবার পরিজন ও কিছু অনুসারী নিয়ে রওনা হবে। যখন সুফিয়ানীর বাহিনী মদিনা ও মক্কার মধ্যবর্তী স্থান বায়দাহ নামক স্থানে পৌঁছাবে তখন তাদেরকে জমিনে ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে।

মুহাম্মদ ইব্‌ন মুছান্না (রহঃ) .... নবী -এর স্ত্রী উম্মু সালামাহ (রা:) সূত্রে বর্ণিত। নবী বলেনঃ জনৈক খলীফাহর মৃত্যুকালে মতানৈক্য সৃষ্টি হবে। এ সময় মদীনাবাসী জনৈক ব্যক্তি পালিয়ে মক্কায় চলে যাবে। মক্কাবাসীরা তার নিকট এসে তাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিয়ে আসবে এবং তারা রুকন ও মাকামে ইবরাহীমের মাঝখানে তার হাতে বাইআত করবে। অতঃপর তার বিরুদ্ধে সিরিয়া থেকে একটি সৈন্যবাহিনী পাঠানো হবে। এদেরকে মক্কা ও মদীনার মধ্যবর্তী স্থানে দেখতে পাবে, তখন সিরিয়ার ধার্মিক ব্যক্তিগণ ও ইরাকবাসীদের কয়েকটি দল তার নিকট এসে রুকুন ও মাকামের মাঝখানে তার হাতে বাইআত করবে। অতঃপর কুরাইশ বংশের জনৈক ব্যক্তির উদ্ভব হবে, কাল্‌ব গোত্র হবে তার মাতুল গোত্র।

সে তাদের মুকাবিলায় একটি বাহিনী পাঠাবে। যুদ্ধে মাহদীর অনুসারীরা কালব বাহিনীর উপর বিজয়ী হবে। এ সময় যারা কালবের গনীমাত নিতে উপস্থিত হবে না তাদের জন্য আফসোস! মাহদী গানীমাতের সম্পদ বণ্টন করবেন এবং নবী -এর সুন্নাত অনুযায়ী মানুষের মাঝে কার্য পরিচালনা করবেন, আর ইসলাম সারা পৃথিবীতে প্রসারিত হবে। অতঃপর তিনি সাত বছর অবস্থান করার পর মারা যাবেন। আর মুসলিমরা তার জানাযার সালাত পড়বে। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, কেউ কেউ হিশাম থেকে বর্ণনা করে বলেন, নয় বছর অবস্থান করবেন, আবার কেউ বলেন, সাত বছর।
-       (যঈফ, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত/ আলবানী একাঃ) ৪২৮৬ [ইঃ ফাঃ ৪২৩৭]; মুসনাদে আহমাদ ২৫৪৬৭; আল-মুজামুল কাবীর, ত্বাবরানী ২৩/২৯০; আল-মুসান্নাফ, ইবনু আবি শায়বা ৮/৬০৯; মুসতাদরাকে হাকিম ৪/৪৭৮)

উম্মুল মুমিনিন হযরত উম্মে সালামা (রা:) বর্ণনা করেন, আমি আল্লাহর রসূল কে বলতে শুনেছি, জনৈক খলীফার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে করে বিরোধ সৃষ্টি হবে। তখন মদিনার একজন লোক পালিয়ে মক্কা চলে আসবে। মক্কার লোকেরা তাঁকে খুঁজে বের করে অনিচ্ছা সত্ত্বেও রুকুন এবং মাকামে ইব্রাহিমের মাঝামাঝি স্থানে বাইয়াত গ্রহণ করবে। বাইয়াতের খবর শুনে সিরিয়ার দিক থেকে এক বিশাল বাহিনী প্রেরিত হবে। মক্কা মদিনার মাঝামাঝি বায়দা নামক স্থানে এসে পৌঁছানোর পর এই বাহিনীটিকে ভূগর্ভে ধসিয়ে দেওয়া হবে। বাহিনী ধ্বসের সংবাদ শুনে সিরিয়ার আবদাল (শ্রেষ্ঠ মুসলমানগণ) ও ইরাকের আসাইব (সম্মানিত মুসলিম ব্যক্তিবর্গ) মক্কায় এসে তাঁর (ইমাম মাহদির) নিকট বাইয়াত হবে। অতঃপর সিরিয়ার বনু কালব গোত্রের এক কুরায়শীর আবির্ভাব হবে। সিরিয়ার দিক থেকে সে বাহিনী প্রেরণ করবে। কিন্তু আল্লাহ তাদেরকে পরাস্ত করবেন, যার ফলে তাদের উপর বিপদ নেমে আসবে। এটিই হল কালবের যুদ্ধ। যে ব্যক্তি কালবের যুদ্ধলব্ধ সম্পদ থেকে বঞ্চিত হবে, সে ব্যর্থ বলে বিবেচিত হবে। তাঁরপর তিনি ধনভাণ্ডার খুলে দেবেন, মাল দৌলত বণ্টন করবেন এবং ইসলামকে বিশ্বময় খেলাফতের আদলে সুপ্রতিষ্ঠিত করবেন। এই অবস্থা অব্যাহত থাকবে সাত বছর কিংবা (বলেছেন) নয় বছর
-       (আল মুজামুল আওসাত, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৩৫; মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদিস ৬৯৪০; ইবনে হিব্বান, হাদিস ৬৭৫৭; আল মুজামুল কাবীর, হাদিস ৯৩১)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ