৬.৩৪ ইমাম মাহদীর কাছে বায়াত

 হযরত আবু কুবাইল (রা:) বলেন, (খেলাফত ধ্বংসের) একশত চার বছরের মাথায়, মানুষ ইমাম মাহদীর উপরে ভিড় জমাবে (বায়াত হবে)। ইবনে লাহইয়া (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, উক্ত খিলাফতটি আরবীয় নয়।

-       (আস-সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ৮১১)

হযরত আবু হুরাইরা (রা:) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন মাহদী রুকুন ও মাকামের মাঝামাঝি স্থানে বাইয়াত গ্রহণ করবেন। কোন ঘুমন্ত ব্যক্তির ঘুমও ভাঙ্গবে না। কোন রক্তও প্রবাহিত হবে না।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৯১)

হযরত কাতাদা (রা:) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন রসূল বলেন সে মদীনা থেকে মক্কার দিকে বের হবে। অতঃপর তাদের মধ্য থেকে লোকজন তার দিকে বের হতে চাইবে। অতঃপর তারা রুকন ও মাকামের মাঝখানে তার নিকট বাইয়াত গ্রহণ করবে। আর সে (এ বিষয় থেকে) বিমুখ হবে।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৯৪)

হযরত যুহরী থেকে বর্ণিত যে, মাহদী মক্কাতে (থাকবেন) এবং তিনি হযরত ফাতেমা (রা:) এর ছেলের বংশ থেকে হবেন, তিনি (প্রথমে) অপছন্দ করবেন (বায়াত), অতঃপর বাইয়াত করবেন।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৯৮)

রসূলুল্লাহ বলেছেন, একজন লোক (মাহদী) মদিনা থেকে মক্কায় আসবেন, লোকজন তার অনিচ্ছা সত্ত্বেও কাবা শরীফ ও মাকামে ইব্রাহিমের পাশে বাইয়াত দিবে (খলিফা নিয়োগ করবে)
-       (ফাতাওয়ায়ে আল ফিকহ ফিল মাহদী আল মুনতাজার, লেখকঃ মারী বিন ইউসুফ কারামী হাম্বলী)

বদরী সংখ্যক লোক বায়াত নিবে যারা হবে উত্তম

মুহাম্মাদ ইবনে হানাফিয়াহ রহ. থেকে নির্ভরযোগ্য সনদে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন, আমরা আলী রাঃ-এর কাছেই ছিলাম, এমন সময় এক ব্যাক্তি তাঁকে আল-মাহদীর ব্যাপারে প্রশ্ন করলো। আলী (রা:) বললেন: (ওনার দেখা পাওয়া তোমাদের জন্য) অসম্ভব! অতঃপর তিনি তার হাতে(-র আঙ্গুলে) সাত (পর্যন্ত) গণনা করে বললেন: তিনি শেষ জাামানায় বের হবেন (এমন এক বিশ্ব পরিস্থিতিতে), যখন কোনো (মুসলিম) ব্যাক্তি বলবে: (আমার একমাত্র রব হলেন) আল্লাহ ! আল্লাহ ! (আর তাকে এই দোষেই) কতল করে ফেলা হবে। তখন আকাশের বিক্ষিপ্ত সাদা মেঘপুঞ্জের মতো বিক্ষিপ্ত একটি জামাআতকে আল্লাহ তাআলা তার পক্ষে একত্রিত করে দিবেন। আল্লাহ তাদের অন্তরগুলোর মাঝে ভালবাসা সৃষ্টি করে দিবেন। তারা না কারো প্রতি (অযাচিত) আশক্ত হবে, আর না কারো প্রতি (অযাচিত) আনন্দিত হবে। তাদের মাঝে বদরী সাহাবীদের সম-সংখ্যক (মুমিন এসে) শামিল হবে। (তাদের মর্যাদা এমন হবে যে,) না আগের লোকরা তাদেরকে পিছনে ফেলে অগ্রসর হতে পারবে, আর না পরবর্তীরা তাদের পর্যন্ত পৌছতে পারবে। তারা হবে তালুতের সাথিদের সমসংখ্যক যারা তার সাথে (জর্ডান) নদী অতিক্রম করেছিল।

আবু তুফাইল বলেন: ইবনুল হানাফিয়্যাহ (আমাকে) জিজ্ঞেস করলেন: তুমি কি তাঁকে (দেখতে) চাও? আমি বললাম: জি হ্যাঁ (সম্ভব হলে কেনো নয়!)। তিনি বললেন: নিশ্চই তিনি এই দুই পিলারের মাঝখান থেকে আবির্ভূত হবেন। আমি বললাম: কোনো সমস্যা নেই। আল্লাহর শপথ, আমি না মরা পর্যন্ত এই দুটিকে ছাড়বো না। এরপর তিনি সেখানেই অর্থাৎ মক্কায় মারা যান। আল্লাহ তাআলা ওটির হিফাজত করুন
-       (মুসতাদরাকে হাকিম ৪/৫৯৬, হাঃ ৮৬৫৯)

বাইয়াত গ্রহণকারী মুসলমানের সংখ্যা হবে বদরী মুজাহিদগণের সংখ্যার সমান। অর্থাৎ তিনশ তের জন
-       (আল মুজামুল আসওসাত, তাবারানী, খণ্ড ৯, পৃষ্ঠা ১৭৬)

...অতঃপর তাকে রুকুন ও মাকামের মাঝখানে নিয়ে আসবে। আর সে (এ বিষয় থেকে) বিমুখ হবে। তাকে বলা হবে যদি তুমি অস্বীকার করতে তাহলে আমরা তোমার গর্দানে মারতাম (উদাহরণ স্বরূপ)। অতঃপর আহলে বদরের সমপরিমাণ লোক তার নিকট বাইয়াত গ্রহণ করবে। আকাশবাসী ও জমিনবাসী সকলেই তার থেকে খুশি থাকবে। (সংক্ষিপ্ত)
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৮৬)

হযরত আমর ইবনে শুআইব এর দাদা বর্ণনা করেন, আল্লাহর রসূল বলেছেন, জুলকাদা মাসে বিভিন্ন গোত্রের মাঝে দ্বন্দ ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের ঘটনা ঘটবে। ফলে হজ্জ পালনকারীরা লুণ্ঠিত হবে এবং মিনায় যুদ্ধ সংগঠিত হবে। সেখানে ব্যাপক প্রানহানির ঘটনা ঘটবে এবং রক্তের স্রোত বয়ে যাবে। অবশেষে তাদের নেতা (হযরত মাহদি) পালিয়ে রোকন ও মাকামে ইব্রাহিমের মধ্যখানে চলে আসবে। তাঁর অনীহা সত্ত্বেও মানুষ তাঁর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করবে। তাঁকে বলা হবে, আপনি যদি আমাদের থেকে বাইয়াত নিতে অস্বীকার করেন, তাহলে আমরা আপনার ঘাড় উড়িয়ে দিব। বদর যুদ্ধের সংখ্যার সমসংখ্যক মানুষ তাঁর হাতে বায়আত গ্রহণ করবে। সেদিন যারা তার হাতে বাইয়াত গ্রহণ করবে, আকাশ ও পৃথিবীর অধিবাসীরা তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হবে।
-       (মুসতাদরাকে হাকেম, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৫৪৯)

৬.৩৪.১ কাবাগৃহের পাশে মাহদীর সত্যায়ন করবেন জিবরাঈল (আঃ)

হযরত বাকির (রহঃ) বলেন, যদি দেখ আশুরার দিন বা ১০ মুহাররম শনিবার ইমাম কায়িম (মাহদী) মাকামে ইব্রাহিম ও কাবার এর মধ্যখানে দাঁড়িয়ে থাকেন তখন হযরত জিব্রাইল (আঃ) তার পাশেই দাঁড়িয়ে থাকবেন এবং মানুষকে ডাকবেন তাকে বাইয়াত দেয়ার জন্য। *
-       (বিহারুল আনোয়ার, খন্ড ৫২, পৃষ্ঠা ২৭০; গাইবাত, লেখকঃ শাইখ আত তুসী, পৃষ্ঠা ২৭৪; কাশফ উল গাম্মাহ, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ২৫২)
-       * সৌদি আরবের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১০ মুহাররম শনিবার ১৪৫০ হিজরী বা, ৩ জুন ২০২৮ সাল হয়।

হযরত বাকের (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, যদি দেখ দশই মহরম শনিবার ইমাম মাহদী মাকামে ইব্রাহিম ও কাবার মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকেন। তখন হযরত জিবরাঈল (আঃ) তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে থাকবেন এবং মানুষকে ডাকবেন তাঁর নিকট হতে বায়াত নেয়ার জন্য।
-       (আস সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ৭৫৮)

হযরত কাব (রা:) হতে বর্ণিত যে, হযরত কাতাদা (রা:) বলেন উত্তম মানুষ হল মাহদীর সাহায্যকারী ও তার বাইয়াত গ্রহণকারী। দুই কূফার, ইয়ামানের অধিবাসীদের, ও সিরিয়ার সূফী সাধকদের থেকে। তার সামনে থাকবে হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম। তাদের পিছনে থাকবে মিকাঈল আলাইহিস সালাম। তারা হল আল্লাহ তাআলার সৃষ্টিতে প্রিয় সৃষ্ট। আল্লাহ তাআলা যুদ্ধ বিগ্রহ, অন্ধকারতা দূর করে দিবেন। আর পৃথিবী নিরাপদ হবে (শান্তি ফিরে আসবে)। এমনকি একজন মহিলা পাঁচ জন মাহিলার মাঝে হজ্ব করবে, আর তাদের সাথে কোন পুরুষ থাকবে না। তারা আল্লাহ তাআলাকে ব্যতীত আর কাউকে ভয় পাবে না। যমিন তার প্রবৃদ্ধিতা দিবে। আসামান তার বরকত দিবে।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১০৩০ [পথিক প্রকা: ১০২৮; তাহকীক: যঈফ])

এই ঘটনার আগে জিবরাঈল (আঃ) আকাশ থেকে মাহদীর অর্থাৎ নেতার নাম ঘোষণা করবেন সেটির বর্ণনা পিছনের পরিচ্ছেদে দেওয়া হয়েছে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ