৪.৩ গাজওয়াতুল হিন্দের মর্যাদা

 হিন্দুস্তানের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকলের জন্যই রয়েছে বিশেষ মর্যাদা। অসংখ্য হাদিস দেখলে বুঝা যায় যে, যেন এসকল গাজী ও শহীদরা আল্লাহর বাছাই করা ব্যক্তিগণ। তাদের নেতারা হচ্ছে এই জামানার সবচেয়ে বেশি হেয়ায়েতপ্রাপ্তগণ। হিন্দুস্তানে যত যুদ্ধ হয়েছে আর ভবিষ্যতে হবে তাদের সকলেরই মর্যাদা তেমনই হবে ইনশাআল্লাহ যেমন হাদিসে বলা হয়েছে।

হযরত কাতাদাহ (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলে পাক ﷺ বলেছেন, অদূর ভবিষ্যতে মুশরিকদের সাথে মুমিনদের একটি জিহাদ হবে, আর সেই যুদ্ধের শহীদরা কতইনা উত্তম। (প্রয়োজনীয় অংশ)
-       (আস সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ৭৮৭)

মুহাম্মাদ ইবন আবদুল্লাহ ইবন আব্দুর রহীম (রহঃ) ... রসূলুল্লাহ ﷺ এর গোলাম ছাওবান (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ আমার উম্মতের দুটি দল আল্লাহ্ তা'আলা তাদেরকে জাহান্নাম হতে পরিত্রাণ দান করবেন, একদল যারা হিন্দুস্তানের জিহাদ করবে, আর একদল যারা ঈসা ইবনে মারিয়াম (আঃ) এর সঙ্গে থাকবে।
-       (সহীহ, সূনান নাসাঈ ৩১৭৫ (ইঃ ফাঃ ৩১৭৮); সহীহাহ ১৯৩৪; সহীহ জামে' আস-সগীর ৪০১২; আস সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ৮৬৫)

হজরত সাফওয়ান ইবনে আমর (রা:) থেকে বর্ণিত এবং হুকুমের দিক থেকে মারফু দরজার অন্তর্ভূক্ত। তিনি বলেন, তাকে কিছু লোকে বলেছেন, নবীজী বলেছেন, আমার উম্মতের একদল লোক হিন্দুস্তানে যুদ্ধ করবে এবং আল্লাহ তাআলা তাদেরকে বিজয়ী করবেন। এক পর্যায়ে তারা হিন্দুস্তানের রাজা-নেতাদের শিকল দিয়ে বেঁধে নিয়ে আসবে। আল্লাহ তাআলা তাদের যাবতীয় গুনাহ মাফ করে দিবেন এবং তারা শামের দিকে ফেরত যাবে। অতঃপর শাম দেশে হযরত ঈসা (আঃ) কে পেয়ে যাবে।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১২৩৯ [পথিক প্রকা: ১২৩৫; তাহকীক: যঈফ])

হযরত আবু হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ ﷺ একদা হিন্দের আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, তোমাদের পক্ষ থেকে একদল সৈন্য হিন্দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলে আল্লাহ তাআলা হিন্দের বিপক্ষে তোমাদেরকে জয়লাভ করাবেন। তাদের নেতা-রাজাদের শিকল দ্বারা বেধে বায়তুল মোকাদ্দাসে নিয়ে আসা হবে। আল্লাহ তাআলা তাদের (যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের) যাবতীয় গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন। অতঃপর যখন সেই বিজয়ী মুসলিমরা (শামে) ফিরে আসবে তখন ঈসা ইবনে মারইয়াম আলাইহিস সালামকে (শামে) সিরিয়াতে পাবে। হযরত আবু হুরায়রা (রা:) উল্লিখিত হাদীস বর্ণনার পর বলেন, আমি যদি হিন্দের সেই যুদ্ধ পাই তাহলে আমি আমার নতুন ও পুরাতন সকল সম্পদ বিক্রি করে দেবো এবং তাতে অংশগ্রহণ করবো। যখন আল্লাহ তাআলা আমাকে বিজয় দান করবেন এবং আমি ফিরে আসবো, তখন আমি এক (জাহান্নাম হতে) মুক্ত আবু হুরায়রা হয়ে ফিরে আসবো। যে সিরিয়াতে এমন মর্যাদা নিয়ে ফিরে আসবে, সে সেখানে ঈসা ইবনে মারইয়াম আলাইহিস সালামকে পাবে। হে আল্লাহর রসূল ﷺ ঐ সময় আমার একান্ত ইচ্ছে হলো, যে আমি তাঁর নিকট পৌঁছে তাঁকে বলবো, যে আমি আপনার সাহাবী। (বর্ণনাকারী বলেন) নবীজী ﷺ আবু হুরাইরা (রা:) এর একথা শুনে মুচকি হাসলেন এবং হাসি দিয়ে বললেন, অনেক কঠিন (অনেক দূর) বা এমনটা হবার নয়! এমনটা হবার নয়
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১২৩৬ [পথিক প্রকা: ১২৩২; তাহকীক: যঈফ])

অর্থাৎ যারা অংশগ্রহণ করবে তারা-

১। যদি শহীদ হয় তাহলে তাদের সকল গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিবেন এবং মর্যাদাপূর্ণ শহীদ হিসেবে কবুল করবেন (উত্তম শহীদদের মধ্যে গণ্য হবে)।

২। যদি গাজী হিসেবে ফিরে আসে তাহলেও তাদের সকল গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন এবং জাহান্নাম হতে মুক্ত বলে বিবেচিত হবেন। এবং

৩। তারা অনেক মর্যাদাবান হিসেবে দুনিয়া ও আখিরাতে গণ্য হবেন।

৪। এছাড়াও এই যুদ্ধে আবু হুরাইরাহ (রা:) তার সকল সম্পদ বিক্রি করে দিয়ে অংশগ্রহণ করার ইচ্ছা থেকে বুঝা যায় এই যুদ্ধটি কত মর্যাদাপূর্ণ এবং এতে অর্থ-সম্পদ দান করাও হবে অনেক বড় আমলের কাজ।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ