৬.৪৯ কায়সারের (সম্রাটের) শহর (ইউরোপ) / রোম বিজয় ও খ্রিষ্টানদের পরাজয়

 ইমাম জাহজাহ এর শাসনামলে মুসলিমরা বড় বড় বিজয় অর্জন করবে। তার আমলের যুদ্ধগুলোর ব্যাপারে অসংখ্য হাদিস বর্ণিত হয়েছে। কুস্তুনতুনিয়া বিজয়, ইউরোপ বিজয়, রোম বিজয় হবে এবং হিন্দুস্তানেও আরেকবার যুদ্ধ হবে তাতেও মুসলিমরা বিজয় পাবে আর এই সকল বিজয়ই দাজ্জালের রাগের কারণ হবে আর এই সকল বিষয় ঘটার পরপরই দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে।

মাহমূদ ইবন গায়লান (রহঃ) ..... আনাস ইবন মালিক (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কিয়ামতের নিকটবর্তী সময় কুসতুনতুনিয়া (কনস্টান্টিনোপল) (মুসলিমদের হাতে) বিজয় হবে।
-       (সহীহ, মাওকুফ, সুনান আত তিরমিজী (আল মাদানী প্রকাঃ) ২২৩৯ [ইঃ ফাঃ ২২৪২]; মিশকাত হাঃ একাঃ ৫৪৩৬; আল মুসতাদরাক লিল হাকিম ৮৪৬৯)
-       মাহমূদ বলেনঃ হাদীসটি গারীব। কুসতুনতুনিয়া হল রোম দেশের একটি শহর। দাজ্জালের আবির্ভাবকালে এটি জয় করা হবে। কতক সাহাবীর (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) যামানাতেই কুসতুনতুনিয়া জয় হয়। (এখন আবার হাতছাড়া এবং ভবিষ্যতে আবার জয় হবে)

আব্দুল্লাহ ইবনু ইয়াসার (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবনু বুছর (রা:) থেকে শুনেছেন, তিনি বলেছেন, কুস্তুনতুনিয়ার বিজয় ও দাজ্জালের আবির্ভাবের মধ্যে সাত বছরের ব্যবধান হবে।
-       (সহীহ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ, পথিক প্রকাঃ ১৯৬৪)

আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) ... উসায়র ইবনু জাবির (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার কুফা নগরীতে লাল ঝঞ্ঝা বিশিষ্ট বায়ু প্রবাহিত হলো। এমন সময় জনৈক লোক কুফায় এসে বলল যে, হে আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ সতর্ক হও, কিয়ামত এসে গেছে। তিনি (আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ) যেভাবে বসে ছিলেন সেভাবেই বসে রইলেন এবং বললেন কিয়ামত কায়িম হবে না, যতক্ষন না উত্তরাধিকার সম্পদ অবণ্টিত থাকবে এবং যতক্ষন না লোক গনীমতে আনন্দিত হবে না। অতঃপর তিনি তার হাত দ্বারা সিরিয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে বললেন, আল্লাহর শত্রুরা সমবেত হবে মুসলিমদের সাথে লড়াই করার জন্য এবং মুসলিমগণও তাদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য সমবেত হবে।

(এ কথা শুনে) আমি বললাম, আল্লাহর শত্রু বলে আপনাদের উদ্দেশ্য হল রোমীয় খ্রীষ্টান সম্প্রদায়। তিনি বললেন, হ্যাঁ এবং তখন ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হবে। তখন মুসলিম সম্প্রদায় একটি দল অগ্রে প্রেরণ করবে, তারা মৃত্যুর জন্য সামনে অগ্রসর হবে। জয়লাভ করা ব্যতিরেকে তারা পেছনে ফিরবে না। এরপর পরস্পর তাদের মাঝে যুদ্ধ হবে। যুদ্ধ করতে করতে রাত হয়ে যাবে। অতঃপর উভয় পক্ষের সৈন্য জয়লাভ করা ব্যতিরেকেই ফিরে চলে যাবে। যুদ্ধের জন্য মুসলিমদের যে দলটি অগ্রে এগিয়ে গিয়েছিল তারা সকলেই মরে যাবে। অতঃপর পূর্ববর্তী দিন মুসলিমগণ মৃত্যুর জন্য অপর একটি দল অগ্রে প্রেরণ করবে। তারা বিজয়ী না হয়ে প্রত্যাবর্তন করবে না। এদিনও পরস্পরের মাঝে মারাত্মক যুদ্ধ হবে। অবশেষে সন্ধ্যা হয়ে যাবে। উভয় বাহিনী জয়লাভ করা ব্যতীতই নিজ নিজ শিবিরে ফিরে আসবে। দলটি নিঃশেষ হয়ে যাবে। অতঃপর তৃতীয় দিন পুনঃরায় মুসলিমগণ মৃত্যুর জন্য একটি বাহিনী পাঠাবে। যারা বিজয়ী না হয়ে ফিরবে না। সে দিন পৃথিবীর সর্বোত্তম অশ্বারোহী দলের অন্তর্ভুক্ত হবে তারা।

এ যুদ্ধ সন্ধ্যা পর্যন্ত চলতে থাকবে। অবশেষে জয়লাভ করা ব্যতিরেকেই এ দল ও ঐ দল ফিরে যাবে। (তবে মুসলিম বাহিনীর সামনের) সেনাদলটি শেষ হয়ে যাবে। এরপর যুদ্ধের চতুর্থ দিবসে অবশিষ্ট মুসলিমগণ সকলেই যুদ্ধের জন্য সম্মুখ পানে এগিয়ে যাবে। সেদিন কাফিরদের উপর আল্লাহ তায়ালা অমঙ্গল চক্র চাপিয়ে দিবেন। অতঃপর এমন যুদ্ধ হবে যা জীবনে কেউ দেখবেনা অথবা যা জীবনে কেউ দেখেনি। অবশেষে তাদের শরীরের উপর পাখী উড়তে থাকবে। পাখী তাদেরকে অতিক্রম করবে না; এমতাবস্থায় তা মাটিতে পড়ে মরে যাবে। একশ মানুষ বিশিষ্ট পূর্ন পুরুষদের একটি গোত্র, এদের থেকে মাত্র এক ব্যক্তি বেঁচে থাকবে। এমতাবস্থায় কেমন করে গনীমতের সম্পদ নিয়ে লোকেরা আনন্দ উৎসব করবে এবং কেমন করে উত্তরাধিকার সম্পদ বন্টন করা হবে। মুসলিমগণ এ সময় আরেকটি ভয়াবহ বিপদের সংবাদ শুনতে পাবে এবং এ মর্মে একটি আওয়াজ তাদের নিকট পৌছবে যে, দাজ্জাল তাদের পেছনে তাদের পরিবার পরিজনের মধ্যে চলে এসেছে। এ সংবাদ শুনতেই তারা হাতের সমস্ত কিছু ফেলে দিয়ে রওয়ানা হয়ে যাবে এবং দশজন অশ্বারোহী ব্যক্তিকে সংবাদ সংগ্রাহক দল হিসাবে প্রেরণ করবে। রসূলুল্লাহ বলেনঃ দাজ্জালের সংবাদ সংগ্রাহক দলের প্রতিটি ব্যক্তির নাম, তাদের বাপ-দাদার নাম এবং তাদের অশ্বের রং সম্পর্কেও আমি অবগত আছি। এ পৃথিবীর সর্বোত্তম অশ্বারোহী দল সেদিন তারাই হবে। অথবা (বলেছেন) ইবন আবু শায়বা (তার) রিওয়ায়াতের মধ্যে يُسَيْرِ بْنِ جَابِرٍ এর পরিবর্তে أُسَيْرِ بْنِ جَابِرٍ বর্ণনা করেছেন।
-       (সহীহ, সহীহুল মুসলিম হাঃ একাঃ ৭১৭৩-(৩৭/২৮৯৯) [ইঃ ফাঃ ৭০১৭, ইঃ সেঃ ৭০৭৪]; মিশকাত হাঃ একাঃ ৫৪২২; মুসনাদে আহমাদ ৩৬৪৩; মুসান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ্ ৩৭৪৮০; আবূ ইয়া'লা ৫২৫৩; সহীহ ইবনু হিব্বান ৬৭৮৬)

যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ..... আবু হুরাইরাহ্ (রা:) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ বলেছেনঃ কিয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না রোমীয় (সিরিয়ার অন্তর্গত) সেনাবাহিনী আমাক অথবা দাবিক শহরের কাছে অবতীর্ণ হবে। তখন তাদের মুকাবিলায় মদীনাহ হতে এ দুনিয়ার সর্বোত্তম মানুষের এক দল সৈন্য বের হবে। তারপর উভয় দল সারিবদ্ধভাবে দণ্ডায়মান হবার পর রোমীয়গণ বলবে, তোমরা ঐ সমস্ত লোকেদের থেকে পৃথক হয়ে যাও, যারা আমাদের লোকেদেরকে বন্দী করেছে। আমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করব। তখন মুসলিমগণ বলবে, আল্লাহর শপথ আমরা আমাদের ভাইদের থেকে কক্ষনো সম্পর্কচ্ছেদ করব না। পরিশেষে তাদের পরস্পর যুদ্ধ হবে। এ যুদ্ধে মুসলিমদের এক তৃতীয়াংশ সৈন্য পলায়নপর হবে। আল্লাহ তাআলা কক্ষনো তাদের তওবা্ গ্রহণ করবেন না। সৈন্যদের এক তৃতীয়াংশ নিহত হবে এবং তারা হবে আল্লাহর কাছে শহীদানের মাঝে সর্বোত্তম শহীদ। আর সৈন্যদের অপর তৃতীয়াংশ বিজয়ী হবে। জীবনে আর কক্ষনো তারা ফিতনায় আক্রান্ত হবে না। তারাই কুম্ভনতিনিয়া বিজয় করবে।

তারা নিজেদের তলোয়ার যাইতুন বৃক্ষে লটকিয়ে যুদ্ধলব্ধ সম্পদ ভাগ করতে থাকবে। এমতাবস্থায় তাদের মধ্যে শাইতান (শয়তান) উচ্চঃস্বরে বলতে থাকবে, দাজ্জাল তোমাদের পেছনে তোমাদের পরিবার-পরিজনের মধ্যে চলে এসেছে। এ কথা শুনে মুসলিমরা সেখান থেকে বের হবে। অথচ এ ছিল মিথ্যা সংবাদ। তারা যখন সিরিয়া পৌছবে তখন দাজ্জালের আগমন ঘটবে। যখন মুসলিম বাহিনী যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করবে এবং সারিবদ্ধভাবে দণ্ডায়মান হতে শুরু করা মাত্র সালাতের সময় হবে। অতঃপর ঈসা (আঃ) অবতরণ করবেন এবং সালাতে তাদের ইমামাত করবেন। আল্লাহর শত্রু তাকে দেখামাত্রই বিচলিত হয়ে যাবে যেমন লবণ পানিতে মিশে যায়। যদি ঈসা (আঃ) তাকে এমনিই ছেড়ে দেন তবে সেও নিজে নিজেই বিগলিত হয়ে ধ্বংস হয়ে যাবে। অবশ্য আল্লাহ তাআলা ঈসা (আঃ) এর হাতে তাকে হত্যা করবেন এবং তার রক্ত ঈসা (আঃ) এর বর্শাতে তিনি তাদেরকে দেখিয়ে দিবেন। *
-       (সহীহ, সহীহুল মুসলিম হাঃ একাঃ ৭১৭০-(৩৪/২৮৯৭) [ইঃ ফাঃ ৭০১৪, ইঃ সেঃ ৭০৭১])
-       * সালাতে তাদের ইমামত করবেন কথাটি ভুল ও অন্যান্য সহীহ হাদিসের বিপরীত। তবে প্রথম সালাত মুসলিমদের নেতা জাহজাহ এর পিছনে পড়ার পর তাদের ইমাম বা নেতা হবেন ঈসা (আঃ) এটি বাস্তবসম্মত ও সকল হাদিসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

কুতাইবাহ ইবনু সাঈদ (রহঃ) ..... নাফি ইবনু উতবাহ (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক যুদ্ধে আমরা রসূলুল্লাহ এর সঙ্গে ছিলাম। তখন পশ্চিম দিক হতে নবী এর কাছে এক দল লোক আসলো। তাদের শরীরে ছিল পশমের কাপড়। তারা এক টিলার কাছে এসে রসূলুল্লাহ এর সঙ্গে দেখা করল। এ সময় তারা ছিল দাঁড়ানো এবং রসূলুল্লাহ ছিলেন বসাবস্থায়। তখন আমার মন আমাকে বলল, তুমি যাও এবং তাদের ও রসূলুল্লাহ এর মাঝে গিয়ে দাঁড়াও, যেন তারা প্রতারণা করে তাকে হত্যা করতে না পারে। আবার আমার মনে হলো, সম্ভবতঃ তিনি তাদের সঙ্গে কোন গোপন আলাপরত আছেন। তথাপিও আমি গেলাম এবং তাদের ও রসূলুল্লাহ এর মাঝে দাঁড়িয়ে রইলাম। এমন সময় আমি তার থেকে চারটি কথা আয়ত্ত করলাম এবং তা আমার হাত দ্বারাই গণনা করলাম। তিনি বললেন, তোমরা জাযিরাতুল আরবে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ তা বিজিত করে দিবেন। অতঃপর পারস্যবাসীদের সঙ্গে লড়াই করবে, আল্লাহ তাও তোমাদের আয়ত্তে এনে দিবেন। এরপর রোমীয়দের সঙ্গে লড়াই করবে, আল্লাহ তাআলা এতেও তোমাদের বিজয় দান করবেন। পরিশেষে তোমরা দাজ্জালের সঙ্গে লড়াই করবে, এখানেও আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে বিজয়ী করবেন। বর্ণনাকারী নাফি (রহঃ) বলেন, হে জাবির! আমাদের মনে হয় রোম বিজিতের পর দাজ্জালের আগমন ঘটবে।
-       (সহীহ, সহীহুল মুসলিম হাঃ একাঃ ৭১৭৬-(৩৮/২৯০০) [ইঃ ফাঃ ৭০২০, ইঃ সেঃ ৭০৭৭]; মিশকাত হাঃ একাঃ ৫৪১৯; মুসনাদে আহমাদ ৪/৩৩৮, হাঃ ১৫৪১; সুনানে ইবনে মাজাহ ২/১৩৭০ হাঃ ৪০৯১; সহীহুল জামি' ২৯৬৯; সহীহ ইবনু হিব্বান ৬৬৭২; আল মু'জামুল কাবীর লিত্ব তবারানী ১৮০১; আল মু'জামুল আওসাত্ব ৩৬৯১; হিলইয়াতুল আউলিয়াহ, আবু নুআইম ৮/২৮১)

নাফে ইবনে উতবা ইবনে আবূ ওয়াক্কাস (রা:) থেকে বর্ণিত। নবী বলেনঃ তোমরা আরব উপদ্বীপে যুদ্ধ করবে। আল্লাহ তা তোমাদের অধীনে করে দিবেন। অতঃপর তোমরা রোমকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। আল্লাহ সেখানেও তোমাদের বিজয়ী করবেন। অতঃপর তোমরা দাজ্জালের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। আল্লাহ তার বিরুদ্ধেও তোমাদের জয়যুক্ত করবেন। জাবির (রা:) বলেন, রোম বিজিত না হওয়া পর্যন্ত দাজ্জাল আবির্ভূত হবে না।
-       (সহীহ, সুনান ইবনু মাজাহ তাঃ পাঃ ৪০৯১; মুসনাদে আহমাদ ১৮৪৯৩)

হযরত আওফ ইবনে মালেক আশজারী (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূল আমাকে বললেন, হে আওফা কিয়ামতের পূর্বের ছয়টি নির্দেশনকে তুমি গণনা করে রাখ। (১) আমার ওফাত। (হযরত আওফ বলেন) একথা আমাকে কাঁদিয়ে দিল। তখন রসূল আমাকে চুপ করিয়ে দিলেন। অতঃপর রসূল বললেন বলো এক, (২) বায়তুল মুকাদ্দস বিজয়, (রসূল বললেন) বলো দুই। (৩) ব্যাপক মহামারী যা আমার উম্মতের মধ্যে বকরির মাড়কের ন্যায় দেখা দিবে। (রসূল বললেন) বলো তিন। (৪) আমার উম্মতের মধ্যে ফিতনা সংঘটিত হবে এবং বিরাট আকার ধারন করবে। (রসূল বললেন) বলো চার। (৫) তোমাদের মধ্যে ধন সম্পদের এত প্রাচুর্য হবে যে, কোন ব্যক্তিকে একশত দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) প্রদান করলেও সে (এটাকে নগন্য মনে করে) অসন্তুষ্টি প্রকাশ করবে। (রসূল বললেন) বলো পাঁচ। (৬) বনুল আসফার (রোমক) দের সাথে তোমাদের একটি সন্ধিচুক্তি হবে। অতঃপর তারা তোমাদের নিকট গিয়ে তোমাদেরকে হত্যা করবে এবং মুসলমানরা তখন এমন ভূমিতে থাকবে যাকে মদীনার নিম্নাঞ্চল বলা হয় এবং তাকে দামেস্ক (নগরী) ও বলা হয় (যা সিরিয়ার রাজধানী)।
-       (সহীহ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭২; কানযুল উম্মাল ৩৯৫৯৬)

হযরত আউফ ইবনে মালেক (রা:) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ আমাকে সম্মোধন করে বলেছেন হে আউফ! তুমি কিয়ামতের ছয়টা আলামত চিহ্নিত করে রেখো, তার মধ্যে সর্বপ্রথম তোমাদের নবীর মৃত্যুবরণ করা। এটা হচ্ছে একটা, আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে, বায়তুল মোকাদ্দাসের জয়লাভ করা, তৃতীয় হচ্ছে, ছাগলের মাড়কের ন্যায় ব্যাপক মহামারী দেখা দিবে। চতূর্থ হচ্ছে, তোমাদের মাঝে এমন ব্যাপক ফিতনা দেখা দিবে যার সাথে আরবের প্রতিটি ঘর জড়িয়ে যাবে। পঞ্চম হচ্ছে, তোমাদের ও বনুল আসফার তথা রোমবাসীদের মাঝে চুক্তি হওয়া। অতঃপর তারা তোমাদের বিরুদ্ধে নয় মাসের গর্ভবতী মহিলাদের ন্যায় ভারি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জমায়েত হবে।
-       (সহীহ; যদিও বিচ্ছিন্নতা রয়েছে, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭৩; অনুরূপ ৭৪, ৭৫)

হযরত আরতাত (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার কাছে সংবাদ পৌঁছেছে যে, মাহদী দীর্ঘ চল্লিশ বৎসর জীবিত/ক্ষমতায় থাকবেন, এরপর নিজের বিছানায় মৃত্যুবরণ করবে, অতঃপর কাহতান গোত্রের আরেকজন লোক (মানসূর) যার উভয় কান ছিদ্র বিশিষ্ট হবে খলীফা নিযুক্ত হবেন এবং খলীফা মাহদীকে অনুসরণ করবেন। তিনি বিশ বছর পর মারা যাবে। মূলতঃ তাকে হত্যা করা হবে। অতঃপর রসূলুল্লাহ এর বংশধর থেকে একজন লোক খলীফা হবেন, যার নাম মাহদী হবে, তিনি হবেন উত্তম চরিত্রের অধিকারী। তার হাতে কায়সারের শহর জয় হবে। তিনি উম্মতে মুহাম্মদিয়ার সর্বশেষ আমীর। তার যুগেই দাজ্জালের আবির্ভাব হবে এবং হযরত ঈসা ইবনে মারইয়াম (আঃ) পৃথিবীর বুকে পূনরায় আগমন করবেন। *
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১২১৪ [পথিক প্রকা: ১২১১, তাহকীক: যঈফ])

-       * ১। মাহদী ৪০ বছর জীবিত বা ক্ষমতায় থাকবেন এ বিষয়টি বিভ্রান্তিমূলক। তবে মাহদী যে ৪০ বছরে আত্মপ্রকাশ করবেন ও এরপর বায়াত নিয়ে খলীফা হবেন সেটি বাস্তবসম্মত। ২। পরের মাহদী দ্বারা জাহজাহকে বুঝানো হয়েছে। তাকে অনেক হাদিসেই এরকম মাহদী নামক হবে বলে উল্লেখ এসেছে।

হযরত আরতাত (রা:) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, মাহদীর মৃত্যুবরণ করার পর কাহতান গোত্রের উভয় কান ছিদ্রবিশিষ্ট একজন লোক (মানসূর) শাসন ক্ষমতা গ্রহণ করবে। তার চরিত্র হবে হুবহু মাহদীর মত। তিনি দীর্ঘ ২০ বছর পর্যন্ত শাসক হিসেবে থাকার পর, তাকে অস্ত্রের দ্বারা হত্যা করা হবে। এরপর রসূলুল্লাহ এর বংশধর থেকে জনৈক লোকের (জাহজাহ) আত্মপ্রকাশ হবে। যিনি উত্তম চরিত্রের অধিকারী হবেন। তার হাতে কায়সার সম্রাটের শহর (ইউরোপ) বিজয় হবে। তিনিই হবেন, রসূলুল্লাহ এর উম্মতের মধ্যে সর্বশেষ খলীফা বা বাদশাহ। তার যুগে দাজ্জালের আবির্ভাব হবে এবং সায়্যিদুনা হযরত ঈসা (আঃ) আসমান থেকে অবতরণ করবেন।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১২৩৪ [পথিক প্রকা: ১২৩০, তাহকীক: সহীহ])

হযরত আরতাত (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উক্ত ইয়ামানী (জাহজাহ) খলীফার নেতৃত্বে কুস্তুনতুনিয়া (ইস্তাম্বুল) এবং রোমানদের (কায়সার সম্রাটের শহর ইউরোপ) এলাকা বিজয় হবে। তার যুগে দাজ্জালের আবির্ভাব হবে এবং হযরত ঈসা (আঃ) আগমন করবেন। তার আমলে ভারতের যুদ্ধ সংগঠিত হবে, যে যুদ্ধের কথা হযরত আবু হুরায়রা বলে থাকেন।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১২৩৮ [পথিক প্রকা: ১২৩৪; সহীহ])

বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, প্রথমে যে কুস্তুনতিনিয়া নামক এলাকা জয়লাভ করা হবে, অতঃপর রোম বাহিনীর সাথে ভয়াবহ একযুদ্ধ হবে, এবং সে যুদ্ধে রোমবাহিনী মুসলমান বিপক্ষে জয়লাভ করবে। হাদীস বর্ণনাকারী আবুকাবীল বলেন, মুহাম্মদ ইবনে সাঈদ নামক একলোক আফ্রিকিয়্যারে শাসক নিযুক্ত হবে, যিনি মূলতঃ আসবে। এরপর আরেকজন বনি হাশেম থেকে আত্মপ্রকাশ করবে, যার নাম হবে ইসবা ইবনে ইয়াযিদ (জাহজাহ), সে হবে রোম বাহিনীর (বিরুদ্ধে) নেতৃত্ব দানকারী এবং তার হাতে রোমের বিজয় নিশ্চিত হবে।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১৩৩৭ [পথিক প্রকা: ১৩৩৫; তাহকীক: যঈফ])

হযরত আবু কুবাইল (রহ:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বনু হাশেমের জনৈক লোক, যার নাম হবে, আসবাগ ইবনে ইয়াযিদ। তার হাতেই রোমানদের বিরুদ্ধে (কায়সার সম্রাটের শহর ইউরোপ) বিজয় অর্জন হবে। *
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১২২০ [পথিক প্রকা: ১২১৮; তাহকীক: যঈফ])
-       * সহীহ সূত্রে নাম এসেছে জাহজাহ। এটিও তার আরেকটি নাম কিনা জানা নেই।

আবু হুরাইরাহ (রা:) সূত্রে আল্লাহর রসূল হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কিসরা ধ্বংস হবে, অতঃপর আর কিসরা হবে না। আর কায়সার অবশ্যই ধ্বংস হবে, অতঃপর আর কায়সার হবে না এবং এটা নিশ্চিত যে, তাদের ধনভাণ্ডার আল্লাহর পথে বণ্টিত হবে।
-       (সহীহ, আল-লুলু ওয়াল মারজান ১৮৪৭, ১৮৪৮; সহীহুল বুখারী, পর্ব ৫৬ : জিহাদ ও যুদ্ধাভিযান, অধ্যায় ১৫৭, হাঃ ৩০২৭; সহীহুল মুসলিম, পর্ব ৫২: ফিতনা এবং তার অশুভ আলামতসমূহ, অধ্যায় ১৮, হাঃ ২৯১৮ [হাঃ একাঃ ৭২১৯]; সুনান আত তিরমিজী (আল মাদানী প্রকাঃ) ২২১৬ [ইঃ ফাঃ ২২১৯]; মিশকাত হাঃ একাঃ ৫৪১৮; সুনান নাসায়ী ৫৩৮৮; সহীহুল জামি' ৮৪৬; মা'রিফাতুস্ সুনান ওয়াল আসার লিল বায়হাকী ৫৭২১; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ২০৮১৫; মুসনাদুশ শাফিঈ ১০০২; মুসনাদে আদ ইবনু হুমায়দ ১০৯৪; মুসনাদে বাযযার ৪২৮৬; মুসনাদে আহমাদ ৭১৮৪; আবূ ইয়া'লা ৫৮৮১; সহীহ ইবনু হিব্বান ৬৬৮৯; আল মু'জামুল আওসাত্ব ১৮২৯; আল মুসতাদরাক লিল হাকিম ৪৬০৮; আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী ১৯০৭৩; আস্ সুনানুস সুগরা ৪০৪১)

আমর আন নাকিদ ও ইবনু আবু উমর (রহঃ) ..... আবু হুরাইরাহ (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ বলেছেনঃ কিসরা (পারস্য রাজ) মারা গেছে। অতঃপর পারস্য রাজ আর হবে না। আর যখন রোম সম্রাট ধ্বংস হবে তারপর আর কোন রোম সম্রাট হবে না। কসম ঐ প্রতিপালকের, যার হাতে আমার জীবন, অবশ্যই তাদের ধন-সম্পদ আল্লাহর পথে বিলিয়ে দেয়া হবে।

হারমালাহ্ ইবনু ইয়াহইয়া অপর সূত্রে ইবনু রাফি ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ..... যুহরী (রহঃ) হতে সুফইয়ান (রহঃ) এর সানাদে অবিকল হাদীস বর্ণনা করেছেন।
-       (সহীহ, সহীহুল মুসলিম হাঃ একাঃ ৭২১৮-(৭৫/২৯১৮) [ইঃ ফাঃ ৭০৬৪, ইঃ সেঃ ৭১১৯])

কুতাইবাহ ইবনু সাঈদ (রহঃ) ..... আবু হুরাইরাহ (রা:) থেকে বর্ণিত। নবী বলেছেনঃ তোমরা কি ঐ শহরের কথা শুনেছ, যার একদিকে স্থলভাগ এবং একদিকে জলভাগ? উত্তরে সাহাবাগণ বললেন, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রসূল ! শুনেছি। অতঃপর তিনি বললেন, কিয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত ইসহাক (আঃ) এর সন্তানদের সত্তর হাজার লোক এ শহরের লোকেদের সঙ্গে লড়াই না করবে। তারা শহরের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌছবে কোন অস্ত্র দ্বারা যুদ্ধ করবে না এবং কোন তীরও চালাবে না; বরং তারা একবার লা ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াল্লা-হু আকবার বলবে, সাথে সাথে এর এক প্রান্ত ধ্বসে যাবে।

বর্ণনাকারী সাওর (রহঃ) বলেন, আমার যতদূর মনে পড়ে, আমার নিকট বর্ণনাকারী লোক সমুদ্রস্থিত প্রান্তের কথা বলেছিলেন। অতঃপর দ্বিতীয়বার তারা লা ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াল্লা-হু আকবার বলবে। এতে শহরের অপর প্রান্ত ধ্বসে যাবে। এরপর তারা তৃতীয়বার লা ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াল্লা-হু আকবার বলবে। তখন তাদের শহরের দ্বার খুলে দেয়া হবে। তারা যখন তাতে প্রবেশ করে গনীমাতের মাল ভাগাভাগিতে ব্যতিব্যস্ত থাকবে, তখন কেউ উচ্চঃস্বরে বলে উঠবে, দাজ্জালের আগমন ঘটেছে। এ কথা শুনা মাত্রই তারা ধন-সম্পদ ফেলে দেশে ফিরে যাবে।
-       (সহীহ, সহীহুল মুসলিম হাঃ একাঃ ৭২২৩, ৭২২৪-(/২৯২০) [ইঃ ফাঃ ৭০৬৯, ইঃ সেঃ ৭১২৩]; মিশকাত হাঃ একাঃ ৫৪২৩; সহীহুল জামি ৩৬৩৮; আল মুসতাদরাক লিল হাকিম ৮৪৬৯)

হাসসান ইবনু আতিয়্যাহ (রা:) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, মাকহুল ও ইবনু আবূ যাকারিয়া খালিদ ইবনু মাদান-এর নিকট যেতে রওয়ানা হলে আমিও তাদের সঙ্গে গেলাম। তারা জুবায়র ইবনু নুফাইরের সূত্রে আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করলেন সন্ধি সম্পর্কে। তিনি বলেন, জুবায়র (রহঃ) বললেন, আপনি আমাদের সঙ্গে নবী -এর সাহাবী যু-মিখবার রাঃ-এর নিকট চলুন। সুতরাং আমরা তার নিকট উপস্থিত হলে জুবায়র তাকে সন্ধি সম্পর্কে প্রশ্ন করেন।

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ -কে বলতে শুনেছিঃ অচিরেই তোমরা রোমানদের সঙ্গে সন্ধি করবে। অতঃপর তোমরা ও তারা একত্র হয়ে তোমাদের পশ্চাৎবর্তী একদল শত্রুর মোকাবিলা করবে। তোমরা তাতে বিজয়ী হবে, গানীমাত অর্জন করবে এবং নিরাপদে ফিরে আসবে। শেষে তোমরা টিলাযুক্ত একটি মাঠে যাত্রাবিরতি করবে। অতঃপর খৃষ্টানদের মধ্য থেকে এক ব্যক্তি ক্রুশ উপরে উত্তোলন করে বলবে, ক্রুশ বিজয়ী হয়েছে। এতে মুসলিমদের মধ্যকার এক ব্যক্তি উত্তেজিত হয়ে তাকে হত্যা করবে। তখন রোমানরা চুক্তি ভঙ্গ করবে এবং যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিবে।

অন্য বর্ণনাতে (মিশকাতে) আছে- সেখানে খ্রিষ্টানদের এক ব্যক্তি একটি ক্রুশ উঁচু করে বলবে, ক্রুশের বরকতে আমরা বিজয় লাভ করছি। এটা শুনে মুসলিমদের এক ব্যক্তি ক্ষুদ্ধ হয়ে ক্রুশটি ভেঙ্গে ফেলবে। ফলে রূমক খ্রিষ্টানরা চুক্তি ভঙ্গ করে ফেলবে এবং ভীষণ যুদ্ধের জন্য বিরাট সেনাবাহিনী একত্রিত করবে। কোন কোন বর্ণনাকারী অতিরিক্ত বলেছেন, তখন মুসলিমগণ সাথে সাথে আপন অস্ত্রসমূহ ধারণ করবে এবং যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে। অবশেষে আল্লাহ তাআলা এ দলকে শাহাদাতের দ্বারা সম্মানিত করবেন।
-       (সহীহ, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত/ আলবানী একাঃ) ২৭৬৭, ৪২৯২ [ইঃ ফাঃ ৪২৪২; সহীহ আবু দাউদ ২৪৭২]; সুনান ইবনু মাজাহ তাঃ পাঃ ১/৪০৮৯; মিশকাত হাঃ একাঃ ৫৪২৮; মুসনাদে আহমাদ ১৬৩৮৪, ২২৬৪৬, ২২৯৬৬; সহীহুল জামি' ৩৬১২; সহীহ ইবনু হিব্বান ৬৭০৯; আল মু'জামুল কাবীর লিত্ব তবারানী ৪১১২)

আবদুর রহমান ইবনে ইবরাহীম আল-দিমাশকী, ওলীদ ইবনে মুসলিম, আওযাঈ, হাসসান ইবনে আতিয়্যা (রা:) তার সূত্রে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে তার বর্ণনায় আরো আছে- তারা যুদ্ধের জন্য ঐক্যবদ্ধ হবে এবং আশিটি পতাকার অধীনে যুদ্ধক্ষেত্রে অবতীর্ণ হবে। প্রতিটি পতাকার অধীনে থাকবে বারো হাজার সৈন্য।
-       (সহীহ, সুনান ইবনু মাজাহ তাঃ পাঃ ২/৪০৮৯(১))

আব্দুর রহমান ইবনু যুবাইর (রহ:) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি রসূলুল্লাহ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি এরশাদ করেন, যুদ্ধ বিগ্রহকালীন মানুষের আশ্রয়স্থল হবে দিমাশক নামক একটি শহর। গুতাহ নামক অন্য আরেকটি এলকায়ও লোকজন আশ্রয় গ্রহণ করবে।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৭১৯; এর সহীহ সনদ রয়েছে- তারিখে দিমাশক ১/১০৬; আল ইলাল ওয়াল মানাহিয়াহ ৪৯২)

হাস্‌সান ইব্‌ন আতিয়া (রহঃ) থেকে হাদীছ বর্ণনা করেছেন। সেখানে এতটুকু অতিরিক্ত বর্ণিত হয়েছে যে, সে সময় মুসলিম সৈন্যগণ দ্রুত তাদের অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে যুদ্ধে লিপ্ত হবে। তখন আল্লাহ্‌ তাদেরকে শহীদ হওয়ার কারণে সম্মানিত করবেন। ওয়ালীদ (রহঃ) .... জুবায়র ও মিখবার (রা:) থেকে। তিনি নবী থেকে বর্ণনা করেছেন।
-       (সহীহ, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত/ আলবানী একাঃ) ৪২৯৩ [ইঃ ফাঃ ৪২৪৩]; ইবনু মাজাহ; আহমাদ)

আব্বাস আম্বারী (রহঃ) .... মুআয ইব্‌ন জাবাল (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্‌ বলেছেনঃ বায়তুল মাকদিসের পার্থিব উন্নতি মদীনাহ্ ধ্বংস হওয়ার কারণ হবে। আর মদীনার ধ্বংস বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও মহাযুদ্ধের সূচনা করবে এবং মহাযুদ্ধ কনস্টান্টিনোপল বিজয়ের পূর্ব সংকেত হবে, আর কনস্টান্টিনোপলের বিজয় হবে দাজ্জালের আবির্ভাবের পূর্ব সংকেত। এরপর রসূলুল্লাহ্‌ তাঁর হাত মুআয রাঃ-এর কাঁধে বা হাঁটুতে মেরে বলেনঃ এ সবই সত্য, যেমন তুমি এখানে আছো-তা সত্য; যেমন তুমি বসে আছো-তা সত্য। অর্থাৎ তিনি মুআয ইবনু জাবাল রাঃ-কে লক্ষ করে বলেন।
-       (হাসান, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত/ আলবানী একাঃ) ৪২৯৪ [ইঃ ফাঃ ৪২৪৪]; মিশকাত হাঃ একাঃ ৫৪২৪; সহীহুল জামি ৪০৯৬; মুসান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ ৩৭২০৯; মুসনাদে আহমাদ ২২০৭৬; আল মু'জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ১৬৬৩৮; আল মুসতাদরাক লিল হাকিম ৮২৯৭)

মুআয ইবনু জাবাল রা: সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ বলেছেনঃ ভয়ঙ্কর যুদ্ধ/ফিতনা (মহাযুদ্ধ) ও কুস্‌তুন্‌তুনিয়া বিজয় এবং দাজ্জালের আবির্ভাব মাত্র সাত মাসের মধ্যে ঘটবে।
-       (যঈফ, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত/ আলবানী একাঃ) ৪২৯৫ [ইঃ ফাঃ ৪২৪৫; য'ঈফ আবূ দাউদ ৯২৫]; সুনান আত তিরমিজী (আল মাদানী প্রকাঃ) ২২৩৮ [ইঃ ফাঃ ২২৪১]; সুনান ইবনু মাজাহ তাঃ পাঃ ৪০৯২ [য'ঈফ ইবনু মাজাহ ৮৯০]; মিশকাত হাঃ একাঃ ৫৪২৫; যইফ আল-জামি' ৫৯৪৫; মুসনাদে আহমাদ ২২০৯৮; আল মু'জামুল কাবীর লিত্ব তবারানী ১৬৬০১; আল মুসতাদরাক লিল হাকিম ৮৩১৩)

-       সনদে আবূ বাকর ইবনু আবূ মারইয়াম রয়েছে। তার হাদীস দ্বারা দলীল গ্রহণ করা যাবে না। অনুরূপ কথা বলেছেন মুনযিরী। হাফিয বলেনঃ যঈফ। ইমাম তিরমিযী বলেনঃ হাসান গরীব। তবে এ বিষয়ে সাব ইবন জাছছামা, আবদুল্লাহ ইবন বুসর, আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ, আবূ সাঈদ খুদরী (রা:) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান। এ সূত্র ছাড়া এটি সম্পর্কে আমরা অবহিত নই।

আব্দুল্লাহ ইবনু বুসর (রা:) সূত্রে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ বলেনঃ মহাযুদ্ধ (রোম তথা খ্রিষ্টানদের সাথে বড় যুদ্ধ) এবং (কন্সটান্টিনোপল) শহর বিজয়ের মধ্যে ছয় বছরের ব্যবধান হবে। আর সপ্তম বছরে মাসীহ দাজ্জাল আবির্ভূত হবে। *
-       (যঈফ, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত/ আলবানী একাঃ) ৪২৯৬ [ইঃ ফাঃ ৪২৪৬]; সুনান ইবনু মাজাহ তাঃ পাঃ ৪০৯৩; মিশকাত হাঃ একাঃ ৫৪২৬; মুসনাদে বাযযার ৩৪০৫; মুসনাদে আহমাদ ১৭৭২৭; আল ফিতান ১৪৬২, ১৪৭৮; আস-সুন্নাহ, দানী ৪৮৯, ৬১৪, ৬৫৯)
-       * দুইটি হাদিসে সংঘটিত হওয়ার সময়কাল বলা হয়েছে। একটিতে ৭ মাস অন্যটি ৭ বছর। এখানে তথ্য বিভ্রান্তি হয়েছে। তবে এই দুটি ছাড়া আর মত পাওয়া যায় না। আরেক জায়গায় এসেছে ৭২ মাসের মধ্যে হবে এবং পরের বছর দাজ্জাল বের হবে।

সাওবান (রা:) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ বলেছেনঃ খাদ্য গ্রহণকারীরা যেভাবে খাবারের পাত্রের চতুর্দিকে একত্র হয়, অচিরেই বিজাতিরা তোমাদের বিরুদ্ধে সেভাবেই একত্রিত হবে। এক ব্যক্তি বললো, সেদিন আমাদের সংখ্যা কম হওয়ার কারণ কি এরূপ হবে? তিনি বললেনঃ তোমরা বরং সেদিন সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে; কিন্তু তোমরা হবে প্লাবনের স্রোতে ভেসে যাওয়া আবর্জনার মতো। আর আল্লাহ তোমাদের শত্রুদের অন্তর থেকে তোমাদের পক্ষ থেকে আতঙ্ক দূর করে দিবেন, তিনি তোমাদের "আল-ওয়াহন" (অন্তরে ভীরুতা) ভরে দিবেন। এক ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহর রসূল! 'আল-ওয়াহন' কি? তিনি বললেনঃ দুনিয়ার মোহ এবং মৃত্যুকে অপছন্দ করা।
-       (সহীহ, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত/ আলবানী একাঃ) ৪২৯৭ [ইঃ ফাঃ ৪২৪৭]; মুসনাদে আহমাদ)

বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, জনৈক শাসক রোমানদের শাসন ক্ষমতা গ্রহণ করবে। তাৎক্ষণিৎভাবে কেউ তার বিরোধিতা করবেনা এবং ভবিষ্যতেও এমন কোনো আশঙ্কা নেই। তিনি তার সৈন্যদেরকে নিয়ে সামনে অগ্রসর হতে হতে একটি এলাকায় কিছু দিনের জন্য ছাউনি ফেলবে। বর্ণনাকারী বলেন, গেইটের মধ্যে লেখা থাকবে, নিশ্চয় মুমিনদেরকে আদন এলাকা থেকে সাহায্য করা হবে যা তাদের উটের উপর প্রকাশ পাবে। এভাবে তারা চলতে থাকবে এবং দশজনকে হত্যা করবে। এভাবে চলতে গিয়ে তারা নিজেদের রসদপত্র থেকে ভক্ষণ করেছে এবং রাত্র ব্যতীত কোনো বস্তুই তাদের জন্য বাঁধা হয়নি। তাদের তীর, তলোয়ার কামান ইত্যাদি সর্বদা প্রস্তুত অবস্থায় থাকবে। এক পর্যায়ে আল্লাহ তাআলা তাদের উপর পরাজয় চাপিয়ে দিবেন। তখন এমন এক যুদ্ধ সংগঠিত হবে যা সাধারণতঃ দেখা যায়না, ভবিষ্যতেও দেখা যাবে কিনা সন্দেহ। অবস্থা এমন হবে যে, কোনো একটি পাখি তার ডানার সাহায্যে উড়তে থাকলে মৃত মানুষের দুর্গন্ধের কারণে মারা যাবে। সে দিনের শহীদদের জন্য দুটি অবস্থা হবে, একটি হচ্ছে, পূর্বে শাহাদাত বরণ করা শহীদদের মত হবে। অথবা সেদিন মুমিনদের জন্য এমন অবস্থা হবে যা পূর্বে অতিবাহিত হওয়া মুমিনদের ন্যায় হবে। তাদের আর কখনো আগমন হবেনা। আর অবশিষ্ট লোকজন দাজ্জালের সাথে মোকাবেলা করবে। উক্ত হাদীসের বর্ণনাকারী মুহাম্মদ ইবনে সীরিন (রহ:) বলেন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে হাদীসটি বর্ণনা করতে গিয়ে বলতেন। যদি আমি উক্ত যুগ পর্যন্ত জীবিত থাকি, আর সে যুদ্ধে যোগ দেয়ার মত কোনো শক্তি আমার মাঝে মজুদ না থাকে তাহলে আমাকে একটি খাটিয়ার উপর রেখে সেটা বহন করে যুদ্ধে দু দলের ঠিক মাঝখানে রেখে দিবে।

মুহাম্মদ ইব্নে সীরিন (রহ:) বলেন, হযরত কাবে আহবার (রহ:) বলতেন, আল্লাহর কসম! খ্রিষ্টানদের মাঝে দুটি গণহত্যা হবে, তার একটি চলে গিয়েছে, অন্যটি এখনো বাকি আছে।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১২৫০ [পথিক প্রকা: ১২৪৮; মাকতু, মুয়াল্লাক])

হযরত কাব (রহ:) থেকে বর্ণিত, মুসলমানদের ইমাম বায়তুল মোকাদ্দাসে অবস্থান করাকালীন মিশর ও ইরাকের বাসিন্দাদের নিকট সাহায্য চেয়ে অনেক লোক পাঠাবেন। কিন্তু তারা কেউ সাহায্য করবেনা। বুরাইদা হিমসের একটি শহরে পৌঁছলে সেখানে দেখতে পায় যে, অনারব ও রোমানরা সে শহরের নারী-শিশুকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। তার কাছে এটা খুবই মারাত্মক একটা ঘটনা মনে হল। যার ফলে সে উপস্থিত মুসলমানদের সাথে নিয়ে আকা নগরীতে কাফেরদের গতিরোধ করে এবং উভয় দলের মাঝে তীব্র যুদ্ধ সংগঠিত হয়। আল্লাহ তাআলা কাফেরদের পরাজিত করবেন। তাদেরকে ধাওয়া করতে করতে তাদের শহর পর্যন্ত নিয়ে যাবে এবং হিমস পৌঁছে সেটাও কাফেরদের হাত থেকে মুক্ত করবে।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১২৫৫ [পথিক প্রকা: ১২৫৩; তাহকীক: যঈফ])

হযরত হাসসান ইবনে আতিয়্যাহ (রহ:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আকার সমতলভূমিতে রোমানরা ছাউনি ফেললে ফিলিস্তিন, জর্দান এবং বায়তুল মোকাদ্দাসের উপর জয়লাভ করলেও দীর্ঘ চল্লিশ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও আফীক গিরিপথ অতিক্রম করতে পারবেনা। এদিকে মুসলমানদের ইমাম তাদেরকে আকা নগরীর টীলাতে অবরুদ্ধ করে রাখবে এবং কাফেরদেরকে গণহারে হত্যা করবে, যার কারনে ঘোড়ার অর্ধেক অংশ পর্যন্ত রক্তে ভিজে যাবে। আল্লাহ তাআলা কাফেরদেরকে পরাজিত করবেন এবং তাদের সকলকে হত্যা করা হবে। তবে তাদের একটি দল প্রথমে লেবনানের পাহাড়ে চলে যাবে, পরবতীর্তে রোমান আধ্যূষিত একটি পাহাড়ে আশ্রয় নিয়ে প্রাণে বেঁচে যাবে।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১২৫৬ [পথিক প্রকা: ১২৫৪; তাহকীক: সহীহ])

বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর আবনুল আস (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নিঃসন্দেহে তোমাদেরকে রোমবাহিনী ছিন্নভিন্ন করতে করতে বের করে দিবে। এমনকি তোমাদেরকে লাখম ও জুযাম এলাকায় ছাউনি ফেলতে বাধ্য করবে। একপর্যায়ে তোমাদেরকে পৃথিবীর একপ্রান্তে কোনঠাসা হতে বাধ্য করবে।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১৩১৮ [পথিক প্রকা: ১৩১৬; তাহকীক: যঈফ])

 

৬.৪৯.১ রোমকদের সাথে চুক্তি ও চুক্তিভঙ্গ হবে

বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আউফ ইবনে মালেক আমজাঈ (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমাকে রসূলুল্লাহ এরশাদ করেছেন, হে আউফ! কিয়ামতের পূর্বে ছয়টি ফিতনা প্রকাশ পাবে। তার মধ্যে প্রথম ফিতনা হচ্ছে, তোমাদের নবীর ওফাত পাওয়া, রসূলুল্লাহ এর কথা শুনে আমি কেঁদে উঠলাম। অতঃপর তিনি বললেন, দ্বিতীয় ফিতনা হচ্ছে, বায়তুল মোকাদ্দাসের বিজয় হওয়া। তৃতীয় ফিতনাটি এত ব্যাপক হবে যা শহর এবং গ্রামের প্রতিটি ঘরকেই গ্রাস করে নিবে। চতুর্থ ফিতনা হচ্ছে, মানুষের মধ্যে গণহারে মৃত্যু দেখা দিবে, যেন সকলে ছাগলের মাড়কের ন্যায় মহামারীতে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। পঞ্চম ফিতনা হচ্ছে, লোকজন প্রচুর সম্পদের মালিক হবে। এমনকি কাউকে একশত দিনার দান করা হলেও যে কম মনে করে রাগে ক্ষোভে ফেটে পড়বে। আর ষষ্ঠ ফিতনা হলো, তোমাদের এবং রোমবাসীদের মাঝে একটা চুক্তি হবে। অতঃপর তারা আশি দলে বিভক্ত হয়ে প্রতিটি দলে বারো হাজার সৈন্যের বিশাল কাফেলা সহকারে তোমাদের দিকে ধেয়ে আসবে।
-       (যঈফ; মাজহুল রাবী থাকায়, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১০৪)

বিশিষ্ট সাহাবী হযরত যু মিখবার ইব্নে আখী নাজ্জাশী (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, আমি রসূলুল্লাহ কে বলতে শুনেছি, তোমাদের এবং রোমানদের মাঝে বিশেষ এক চুক্তি সম্পাদিত হবে। তোমাদের সকলের দুশমনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তোমরা উভয় দল গনীমত প্রাপ্ত হবে।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১২৬০ [পথিক প্রকা: ১২৫৮; তাহকীক: সহীহ])

আওফ ইবনে মালেক আল-আশজাঈ (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ বলেছেনঃ অরিচেই তোমাদের ও বনু আসফারের (রোমক) মধ্যে চুক্তি হবে। অতঃপর তারা তোমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবে। তারা তোমাদের বিরুদ্ধে (যুদ্ধের জন্য) আশিটি পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হবে। প্রতিটি পতাকার অধীন থাকবে বারো হাজার সৈন্য।
-       (সহীহ, সুনান ইবনু মাজাহ তাঃ পাঃ ৪০৯৫; সহীহুল বুখারী ৩১৭৬; আবূ দাউদ ৫০০০; মুসনাদে আহমাদ ২৩৪৫১, ২৩৪৫৯, ২৩৪৬৫, ২৩৪৭৬; সহীহ আল-জামি' ২৯৯১; সুনানুল কুবরা, বাইহাকী ৯/৩৭৪ হাঃ ১৮৮১৬)

আওফ ইবনু মালিক (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তাবুকের যুদ্ধের সময় আমি নবী -এর খিদমতে আসলাম। এ সময় তিনি একটি চামড়ার তাঁবুতে অবস্থান করছিলেন। তখন তিনি বললেন কিয়ামতের আগের ছয়টি নিদর্শনকে তুমি গণনা করে রাখ।

১. আমার মৃত্যু।

২. অতঃপর বায়তুল মাক্বদিস বিজয়।

৩. ব্যাপক মহামারি যা তোমাদেরকে বকরির মড়কের মতো আক্রমণ করবে।

৪. ধনসম্পদের এত প্রাচুর্য হবে যে, কোন ব্যক্তিকে একশত দীনার (স্বর্ণমুদ্রা) প্রদান করলেও সে (নগণ্য মনে করে) অসন্তুষ্টি প্রকাশ করবে।

৫. অতঃপর এমন ফিতনা প্রকাশ পাবে যা থেকে আরবের কোন ঘর বাদ যাবে না।

৬. অতঃপর রূমকদের (রোমানদের) সাথে তোমাদের একটি সন্ধিচুক্তি হবে, পরে তারা উক্ত চুক্তি ভঙ্গ করে তোমাদের বিরুদ্ধে আশিটি পতাকার নীচে অবস্থান নিয়ে বারো হাজার করে সৈন্য থাকবে।
-       (সহীহ, মিশকাত হাঃ একাঃ ৫৪২০; সহীহুল জামি' ১০৪৫; হিলইয়াতুল আওলিয়া ৫/১২৮; আল মু'জামুল কাবীর লিত্ব তবারানী ১৪৫০০; আল মুসতাদরাক লিল হাকিম ৮২৯৫; আস সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯২৯০)

হযরত আব্দুল্লাহ ইব্নে আমর ইবনুল আস (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কুস্তুনতুনিয়া অর্থাৎ, ইস্তামবুল এলাকায় তোমরা তিন প্রকারের যুদ্ধ করবে, প্রথম যুদ্ধে তোমরা অনেক বালা-মসীবতের সম্মুখীন হবে, দ্বিতীয়তঃ তোমাদের এবং তাদের মাঝে বিশেষ এক চুক্তি সম্পাদিত হবে, যার ফলে তাদের শহরে তোমরা মসজিদ প্রতিষ্ঠা করতে পারবে এবং তারা এবং তোমরা মিলে তৃতীয় আরেক দল শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, অতঃপর তোমরা ফিরে এসে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হবে। তৃতীয়তঃ রোমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আল্লাহ তাআলা মুসলমানদেরকে বিজয় দান করবেন।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১২৬১ [পথিক প্রকা: ১২৫৯; তাহকীক: যঈফ])

হযরত যু মিখবার (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লহ কে বলতে শুনেছি, তোমরা সাহায্যপ্রাপ্ত ও গনীমতের মাল নিয়ে ফেরৎ আসবে এবং টীলা বিশিষ্ট একটি পর্বতে ছাউনি ফেলবে। যেখানে জনৈক লোক বলে উঠবে, ক্রুশের জয় হয়েছে, একথা শুনে অন্য এক মুসলমান বলবে, না, বরং আল্লাহ তাআলারই জয় হয়েছে। এভাবে কিছুক্ষণ তর্কবিতর্ক চলতে থাকলে হঠাৎ একজন মুসলমান তার কাছে থাকা ক্রুশের দিকে ছুটে গিয়ে ক্রুশটি ভেঙ্গে চুরমার করে ফেলবে। সে একাজটি করার সাথে সাথে সকল খ্রীষ্টান তার উপর হুমড়ি খেয়ে পড়বে এবং তাকে নির্মমভাবে হত্যা করবে। এ অবস্থা দেখে মুসলমানরা তাদের অস্ত্রের প্রতি ধাবিত হবে এবং আল্লাহ তাআলা মুসলমানদের এই দলকে শাহাদত নসীব করার মাধ্যমে সম্মানিত করবেন। অন্যদিকে কাফেররা তাদের সম্রাটের কাছে এসে বলবে, আমরা আপনার পক্ষ থেকে আরবদেরকে উত্তম শায়েস্তা করে এসেছি। এরপর তার চুক্তি ভঙ্গঁ করতঃ গাদ্দারী করে ভয়াবহ যুদ্ধের জন্য সৈন্য সমাগম করবে।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১২৬২ [পথিক প্রকা: ১২৬০; তাহকীক: সহীহ])

হযরত কাব (রহ:) বলেন, রোমানরা তাদের সাথে থাকা লোকজনের সাথে গাদ্দারী করবে, অতঃপর তোমরা সৈন্যের জমায়েত করবে। ইতোমধ্যে একজন রোমীর নেতৃত্বে সমুদ্র পথে রোমানদের বিশাল এক বাহিনী এসে উপস্থিত হবে। যার নেতৃত্বে এই বাহিনী রয়েছে তাকে আল-জামাল বলা হয়। তার পিতামাতার একজন শয়তান কিংবা জ্বিন ছিল। জাহাজের সাহায্যে চলতে চলতে আকা নগরীর আমাক এলাকার এক গীর্জার পার্শ্বে ছাউনি ফেলবে।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১২৬৩ [পথিক প্রকা: ১২৬১; তাহকীক: যঈফ])

হযরত ইউনুস ইবনে সাইফ (রহ:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমরা রোমানদের সাথে নিরাপত্তা মূলক এক চুক্তিতে আবদ্ধ হবে। এক পর্যায়ে তোমরা এবং রোমানরা তুর্কী ও ফিরমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হবে। ফলে আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে বিজয়ী করবেন। একপর্যায়ে রোমানরা তাদের ক্রুশ জয় হওয়ার ঘোষণা দিবে। তাদের এ আচরণ দেখে মুসলমানরা ক্ষেপে যাবে এবং একদল অন্য দলের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়বে। উভয় দলের মাঝে পর্বতের উচু স্থানে ভয়াবহ এক যুদ্ধ সংগঠিত হবে। আল্লাাহ তাআলা মুসলমানদেরকে কাফেরদের বিরুদ্ধে বিজয়ী করবেন। এরপর ছোট্ট-বড় আরো অনেক যুদ্ধ হবে।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১৩৭৪ [পথিক প্রকা: ১৩৭৩; তাহকীক: সহীহ])

হযরত যি মিখবার ইব্নে আখী আন-নাজ্জালী (রহ:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ কে বলতে শুনেছি, রোমানদের সাথে তোমরা দীর্ঘ দশ বৎসরের জন্য চুক্তি করবে, তবে তারা সে চুক্তি কেবল দুই বছর পর্যন্ত মেনে চলবে এবং তৃতীয় বছরই গাদ্দারী করবে, আবার চতুর্থ বছর চুক্তি মেনে চললেও পঞ্চম বৎসর আবারো গাদ্দারী করবে। তাদের অবস্থা দেখে তোমাদের একদল সৈন্য তাদের শহরে পৌছবে। তবে কিছুদিন পর তোমরা এবং রোমানরা মিলে অন্য আরেকজন দুশমনের সাথে যুদ্ধ করবে এবং আল্লাহ তাআলা তোমাদেরক বিজয়ী করবেন। অতঃপর তোমরা সওয়াব এবং গনীমত অর্জনের মাধ্যমে সাহায্য প্রাপ্ত হবে। এরপর তোমরা টীলা বিশিষ্ট এক এলাকায় ছাউনি ফেলবে। ঐসময় তোমাদের একজন বলবে, আল্লাহ জয়লাভ হয়েছে, একথা শুনে তাদের থেকে একজন বলে উঠবে ক্রুশই বিজয়ী হয়েছে। এটা নিয়ে উভয়ের মাঝে কিছুক্ষণ তর্কাতর্কি চলতে থাকবে। এদিকে মুসলমানরা রাগে-ক্ষোভে ফেসে উঠবে, ঐ ক্রুশটি কিন্তু মুসলমানদের পার্শেই রাখা ছিল। যা দেখে একজন মুসলমান রাগ সামলাতে না পেরে উক্ত ক্রশটি ভেঙ্গে চুরমার করে ফেলবে। এর সাথে সাথে যে মুসলমান উক্ত ক্রুশ ভেঙ্গেছে সকলে তার উপর আক্রমন করে শহীদ করে ফেলবে। অন্যদিকে মুসলমানদের উক্ত দলটিও অস্ত্র হাতে উঠিয়ে নিবে এবং রোমানরাও হাতে অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হবে। উভয় দল যুদ্ধ করতে থাকবে। আল্লাহ তাআলা মুসলমানদের এজামাআতকে শাহাদাত নসীব করার দ্বারা সম্মানিত করবেন। পরবর্তীতে তারা তাদের বাদশাহের কাছে এসে বলবে, আমরা আপনার দেশের সীমানা এবং রণশক্তি প্রদর্শনের জন্য যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছি। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কি? জবাবে বাদশাহ প্রত্যেককে এক লোকের বোঝায় সামানা দিয়েছেন। এরপর তারা আশিটি দল নিয়ে তোমাদের বিরুদ্ধে এগিয়ে আসবে, প্রত্যেক দলে বার হাজার করে সৈন্য থাকবে।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১৩৭৬ [পথিক প্রকা: ১৩৭৪, সহীহ]; তাবারানী)

হযরত আউফ ইব্নে মালেক আল-আশজাঈ (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রসূলুল্লাহ এরশাদ করেন, ৬ষ্ঠ ফিতনা হবে মূলতঃ যুদ্ধবিরতী চুক্তির মাধ্যমে। যা তোমাদের এবং রোমানদের মাঝে সংগঠিত হবে। অতঃপর তারা আশি দলে বিভক্ত হয়ে তোমাদের দিকে আগিয়ে আসবে। সাহাবায়ে কেরাম বলবেন, ইয়া রসূলুল্লাহ গায়াহ কি জিনিস, জবাবে রসূলুল্লাহ বলবেন গায়াহ হচ্ছে, ঝান্ডার নাম। প্রত্যেক ঝান্ডার অধীনে বার হাজার করে সৈন্য থাকবে।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১৩৯৬ [পথিক প্রকা: ১৩৯৫; তাহকীক: সহীহ])

হযরত খালিদ ইবনে মাদান হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনে বাছারকে বললাম কুসতুনতুনিয়া (বর্তমান কনোস্টান্টিনোপল) বিজিত হয়েছে। তিনি বললেন ততক্ষণ পর্যন্ত বিজিত হতে পারেনা যতক্ষণ পর্যন্ত মুসলমান ও তাদের মাঝে সন্ধি হয়। অতঃপর তারা সকলে যুদ্ধ করবে। অতঃপর তারা যুদ্ধলব্ধ মাল পেয়ে ফিরে যাবে। এমনকি তাদের মাঝে বিশৃংখলা সৃষ্টি হবে। অতঃপর তাদের মধ্য থেকে এক ব্যক্তি ক্রুশ উচু করে বলবে ক্রুশের জয় হয়েছে। অতঃপর মুসলমানদের কিছু লোক তাদের আক্রমণ করবে। এবং তাদের ক্রুশ আঘাত করবে এবং তা টুকরো টুকরো করে ফেলবে। আর মুসলমানগণ যুদ্ধ করা অবস্থায় ছড়িয়ে পড়বে। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা তাদের বিজয় দান করবেন। আর তখনই প্রকৃত বিজয়।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১৪১৫ [পথিক প্রকা: ১৪১৪; তাহকীক: সহীহ])

ইমাম নুআইম বিন হাম্মাদ (মৃ: ২৮৮ হি:) রহ. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর -এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন, রসূলুল্লাহ এরশাদ করেন, যখন দুটি পুরানা (আমলের) শাসন ক্ষমতা (তাদের উত্তরসূরীদের দ্বারা পুণরায় চালু) হবে -পুরাণা আরব এবং পুরাণা রোম (সম্রাজ্য), (তখন ঘটনা প্রবাহে একসময় মহাযুদ্ধ) মালহামাহ তাদের দুপক্ষের হাতেই সংঘটিত হবে।
-       (আল-ফিতান, ইমাম নুআইম বিন হাম্মাদ, হাদিস/আছার ১৩০৬, ১৩৪০, ১৩৪৯, ১৪১০ ; মুজামু শুয়ূখলি কাবির, যাহবী ৫২৪; কাঞ্জুল উম্মাল ১১/১৬২, হাঃ ৩১০৪৫; জামউয যাওয়ামে ১/৯০)

৬.৪৯.২ আমাক প্রান্তরের যুদ্ধটিই হবে বড় মালহামা

হযরত আবু হুরায়রাহ (রা:) থেকে বর্ণিত,  রসূলুল্লাহ এরশাদ করেন- (শেষ জামানায়) রোমরা আমার পরিবারভুক্ত এক উত্তরসূরীর বিপক্ষে সৈন্যবাহিনী পাঠাবে, তার নাম হবে আমার নামে নাম। পরে তারা মাক নামক একটি জায়গায় অবতরণ করে (তার মুজাহিদ বাহিনীর সাথে) যুদ্ধ করবে। এতে মুসলমানদের এক তৃতীয়াংশ বা ওই পরিমাণ (মুজাহিদ) শহীদ হবে। পরের দিন আবারও তারা (মুসলমানদের সাথে) যুদ্ধ করবে। এতেও মুসলমানদের ওই পরিমাণ (মুজাহিদ) শহীদ হবে। এরপর (আবারো) তারা তৃতীয় দিন যুদ্ধ করবে। এবারে তারা (তথা মুজাহিদগণ) রোমদের উপর (চড়াও হবে ও বিজয় লাভ করবে)। তারপর তারা কুস্তুনতুনিয়া (কনস্টেন্টিনোপোল তথা তুরষ্কের ইস্তাম্বুল) জয় না করা পর্যন্ত অদম্য হয়ে থাকবে। এরপর তারা নিজেদের মাঝে (গণীমতের সম্পদ) বন্টন করবে যার মধ্যে বিভিন্ন কচ্ছপও থাকবে। এমন সময় তারা আওয়াজ শুনতে পাবে যে দাজ্জাল তোমাদের পরিবার পরিজনের পিছনে পড়েছে। *
-       (আল-মুত্তাফিক, খতীব ৬৮; আল-হাবী, ইমাম সুয়ূতী ২/১৩৮)
-       * এটা দিয়ে অনেকে মাহদীকে মনে করতে পারেন তবে অন্যান্য হাদিস থেকে জানা যায় জাহজাহ বনু হাশেম থেকেই অর্থাৎ নবীর পরিবার থেকেই একজন হবে। তার নামও মাহদী এসেছে এবং কিছু জায়গায় মুহাম্মাদ। তবে সহীহ হাদিস মতে জাহজাহ ই প্রকৃত নাম।

হযরত আরতাত্ (রহ:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উক্ত ইয়ামানী (জাহজাহ) খলিফার হাতে এবং তার খেলাফতকালীন সময়ে রোমানদের বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন হবে।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১১৪৭ [পথিক প্রকা: ১১৪৪; তাহকীক: সহীহ])

হযরত কাবে আহবার (রহ:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রোম বিজয় হওয়ার পর সমুদ্রে আর কখনো জাহাজ চলবেনা। এর পর হযরত কাব (রহ:) বলেন, আমাক এলাকার যুদ্ধ যাবতীয় ফিতনার অন্তর্ভুক্ত। (সংক্ষিপ্ত)
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১২৫৩ [পথিক প্রকা: ১২৫১; তাহকীক: যঈফ])

আবু ওয়াহাব (রহ:) থেকে বর্ণিত, তিনি মাকহুলকে বলতে শুনেছেন, ভয়াবহ যুদ্ধ দশটি হবে, তার মধ্যে একটি হচ্ছে, ফিলিস্তিনের কায়সারিয়া নগরীর যুদ্ধ। আর সর্বশেষ হচ্ছে, এন্তাকিয়ার আমাক এলাকার যুদ্ধ।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১৪০৮ [পথিক প্রকা: ১৪০৭; তাহকীক: যঈফ])

হযরত আতিয়া ইব্নে কাইস (রহ:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ এরশাদ করেছেন, ভয়াবহ যুদ্ধ (আমাক) সংগঠিত হলে দামেশক থেকে বিশাল এক বাহিনী প্রকাশ পাবে, তারাই হবেন দুনিয়া এবং আখেরাতের সর্বোত্তম বান্দা।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১৪০৪ [পথিক প্রকা: ১৪০৩; তাহকীক: যঈফ])

হযরত কাব (রহ:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ভয়াবহ যুদ্ধ (আমাক), কুস্তুনতিনিয়া নগরী ধ্বংস হওয়া এবং দাজ্জালের আবির্ভাব প্রায় সাত মাসের মধ্যেই হবে, অথবা আল্লাহ তাআলা যে কয়দিনের ভিতরে ইচ্ছা করেছেন।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১৪০৭ [পথিক প্রকা: ১৪০৬; তাহকীক: যঈফ])

কোথাও যুদ্ধরত অবস্থায় দাজ্জাল বের হওয়ার সংবাদ এলে তার কারণে গণিমত ছেড়ে কোথাও যাওয়া ঠিক হবে না।

হযরত যুবায়ের ইবনে নুফাইর (রহ:) থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, মুসলমানগন, আল্লাহু আকবর তাকবীর দ্বারা কাফেরদের একটি শহর দখল করবে, উক্ত শহরের তিনটি দেয়াল আল্লাহ তাআলা তিন দিনে ধ্বংস করে দিবেন। এভাবে যুদ্ধ চলাকালীন তাদের কাছে দাজ্জালের অবির্ভাব হওয়ার খবর এসে পৌঁছবে। উক্ত খবর যেন তোমাদের মাঝে কোনো অতংক বিরাজ না করে, কেননা সংবাদটি মিথ্যা হবে। সুতরাং উল্লিখিত খবর শুনে দৌড় না দিয়ে গনীমতের মাল সংগ্রহ করতে থাকবে।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১৩৯৩ [পথিক প্রকা: ১৩৯২; তাহকীক: যঈফ])

হযরত বশির (রহ:) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে বুছর আল-মাজনীকে বলতে শুনেছি, যদি তোমাদের কাছে দাজ্জালের আবির্ভাবের খবর আসে এবং তোমরা যুদ্ধকালীন অবস্থায় থাক, তাহলে তোমরা তোমাদের গনীমতের মাল সংগ্রহ করা থেকে বিরত থেকোনা। কেননা, দাজ্জাল তখনো বের হবে না।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১৩৯৪ [পথিক প্রকা: ১৩৯৩; মাকতু, মুয়াল্লাক])


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ