৬.৩১ আকাশ হতে জিবরাঈল (আঃ) এর ডাক

 আবু জাফর ইবনে মুহাম্মদ ইবনে আলী (রহঃ) বলেন, "যখন পূর্বাকাশে ৩ দিন থেকে ৭ দিন পর্যন্ত আগুনের অগ্নিশিখা দেখতে পাবে, তখন আহলে মুহাম্মদ এর (ইমাম মাহদীর) জন্য অপেক্ষা কর। একপর্যায়ে আল্লাহ তায়ালা (হযরত জিবরাঈল আঃ এর মাধ্যমে) মাহদীর নাম ঘোষণা করবেন। যা পৃথিবীর সকল মানুষ শুনতে পাবে।

-       (আল বুরহান ফি আলামত আল মাহদী -আল মুত্তাকী আল হিন্দি, পৃষ্ঠাঃ ৩২)

হযরত আলী (রা:) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন ভূমি ধসের পর আকাশ হতে একজন সম্বোধনকারী (জিবরাঈল) দিনের প্রথমভাগে সম্বোধন করে বলবে নিশ্চই হযরত মুহাম্মাদ এর পরিবারবর্গের মাধ্যে সত্যতা রয়েছে। অতঃপর আরেকজন সম্বোধনকারী দিনের শেষাংশে সম্বোধন করে বলবে নিশ্চই সত্যতা রয়েছে হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের বংশধরের মধ্যে। এর সেটা তার অনুরূপ হবে শয়তানের থেকে।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৮৩)

হযরত সাঈদ ইবনে মোসায়েব (রা:) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, একটা যুদ্ধ হবে যার শুরুতে থাকবে শিশুদের খেলা (ছোটদের খেলা থেকেই যুদ্ধ শুরু হবে)। যুদ্ধটা এমন হবে যে, এক দিক হতে থামলে অন্যদিক হতে তা আরো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে। যুদ্ধ থামবে না এমন অবস্থায় আসমান থেকে জিবরাঈল (আঃ) বলবেন, অমুক ব্যক্তি তোমাদের নেতা। আর ইবনে মোসায়েব (রা:) বলেন, তাঁর দুই হাত গুটাবেন ফলে তাঁর হাত দুটা সংকুচিত হয়ে যাবে। অতঃপর তিনি এই কথাটি তিনবার বললেন, সেই নেতাই সত্য। *
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৭৩; আস সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ৭৫৭)
-       * ছোটদের খেলাধুলা নিয়ে সিরিয়ায় ২০১১ সালে যুদ্ধ শুরু হয় যা এখনো চলমান আছে।

সাঈদ ইবনুল মুসাইয়াব (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, শাম দেশে ব্যাপক ফিতনা দেখা দিবে। যখনই উক্ত দেশের কোনো প্রান্তের ফিতনা একটু শান্ত হবে, তখনই অন্য প্রান্তে উত্তপ্ত হয়ে উঠবে। এভেবে চলতে থাকবে যা কখনো স্থিতিশীল হবেনা, এক পর্যায়ে একজন ঘোষক আসমান থেকে ঘোষনা করবে, হে লোকসকল! নিঃসন্দেহে অমুক হচ্ছে, তোমাদের আমীর।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬৭৩; মুজামুত তাবারানী ৪৬৬৬)

হযরত বাকির (রহঃ) বলেছেন, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যবাসী পরস্পর মতভেদ করবে। কিবলাপন্থীরা (মুসলমানরা) এবং বিশ্ববাসীও অসহনীয় ভয়-ভীতি ও আতংকের সম্মুখীন হবে। আর আকাশ থেকে আহবানকারীর (জিবরাঈল আঃ) আহবান করা পর্যন্ত তারা এ অবস্থার মধ্যেই থাকবে। যখন আকাশ থেকে গায়েবী আহবান ধ্বনি শোনা যাবে তখন তোমরা হিজরত করবে (মক্কার দিকে)।
-   (আসরে জুহুরি)

হযরত আলী (রা:) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন যখন আকাশ হতে এক সম্বোধনকারী সম্বোধন করে বলবে যে, হযরত মুহাম্মাদ এর পরিবারে সত্যতা। আর সে সময়ই মাহদী মানুষের সম্মুখে বের হবে। এবং মানুষ তার ভালবাসা (এর শরবত) পান করবে। তাদের নিকট তার আলোচনা ব্যাতীত আর কোন আলোচনা থাকবে না।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৬৫)

হযরত আবু জাফর (রা:) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন একজন সম্বোধনকারী আকাশ থেকে সম্বোধন করে বলবে হযরত মুহাম্মাদ এর পরিবারবর্গে সত্যত রয়েছে। আরেকজন সম্বোধনকারী যমিন থেকে সম্বোধন করে বলবে যে, হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের পরিবারবর্গে সত্যতা রয়েছে। অথবা ইবেন আব্বাস (রা:) বলেন আমি এ ব্যাপারে সন্দিহান। আর নিচের আওয়াজ টা হবে শয়তানের। আর সেটা মানুষদেরকে সন্দেহের মধ্যে ফেলে দিবে। আবু আব্দুল্লাহ নুয়াইম সন্দেহ করেছে।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৭৪)

হযরত ইবনে শিহাব থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন দ্বিতীয় আবু সুফিয়ানের পরিবারবর্গের থেকে একজন ব্যক্তিকে মাওসেম নামক এলাকার আমীর বা নেতা বানানো হবে। অতঃপর তার সাথে এক সৈন্যদল প্রেরণ করা হবে। অতঃপর তারা যখন মাওসেম নামক এলাকায় থাকবে তখন তারা আকাশ হতে এক সম্বোধনকারীর আওয়াজ শুনবে। (সম্বোধনকারী বলবে) তোমরা ভালভাবে জেনে রাখ যে, আমীর বা নেতা হল অমুক। আরেকজন সম্বোধনকারী যমিন থেকে সম্বোধন করে মিথ্যা বলবে। আকাশ থেকে সম্বোধনকারী সম্বোধন করে সত্য কথা বলবে। এভাবে বিষয়টি দীর্ঘ হবে। ফলে তারা উপলব্ধি করতে পারবে না যে, তারা কার অনুসরণ করবে। আর প্রকৃতপক্ষে সত্য কথা বলবে যে সম্বোধনকারী আকাশে থাকবে। তার দ্বিতীয় আওয়াজটা যা সে আকাশ থেকে সম্বোধন করে প্রথম বার বলবে। যখন তোমরা উহা শুনবে তখন তোমরা ভালভাবে স্বরণ রাখবে যে, আল্লাহ তাআলার কালিমা বা কথা হল উচ্চ। আর শয়তানের কালিমা হল নিচু।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৭৫)

হযরত আব্দুর রহমান তার মাতা থেকে বর্ণনা করেন, তার মাতা ছিনের বৃদ্ধা। তিনি বলেন আমি (আমার মাতাকে) ইবনে যুবাইরের যুদ্ধের কথা বললাম যে, এটা এমন একটি যুদ্ধ যাতে মানুষ হালাক বা বরবাদ হয়েছে। তখন তিনি আমাকে বললেন হে বৎস! কখনো নয়। বরং উহার পরে এমন এক যুদ্ধ হবে (অনেক) মানুষ বরবাদ হবে। তাদের যুদ্ধ থামবে না, আর এরই মাঝে আকাশ থেকে এক সম্বোধনকারী সম্বোধন করে বলবে তোমাদের উপর অমুক ব্যক্তির আনুগত্য আবশ্যক। (তোমাদের আমীর অমুক ব্যক্তি)
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৭৬)

হযরত ইবনুল মুসাইয়িব (রা:) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন সিরিয়ায় একটি যুদ্ধ হবে। যার শুরুটা হবে শিশুদের খেলাধূলা (দিয়ে)। অতঃপর তাদের এ যুদ্ধ কোন ভাবেই থামবে না। আর তাদের কোন দলও থাকবে না। এমনকি আকাশ থেকে এক সম্বোধনকারী সম্বোধন করে বলবে, তোমাদের উপর অমুক ব্যক্তি। এবং সুসংবাদদাতার হাত উত্থিত হবে।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৭৭)

হযরত ইবনুল মুসাইয়িব (রা:) হতে এরূপই বর্ণিত হয়েছে। তবে তিনি (স্পষ্ট করে) বলেছেন যে, আকাশ থেকে একজন সম্বোধনকারী সম্বোধন করে বলবে যে, তোমাদের আমীর বা নেতা অমুক।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৭৮)

হযরত শাহর ইবনে হাওসাব হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন রসূল মুহাররামে বলেছেন আকাশ থেকে একজন সম্বোধনকারী সম্বোধণ করে বলবে- তোমরা ভালভাবে জেনে রাখ যে, আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি জগতে তার শ্রেষ্ঠাংশ হল অমুক। সুতরাং তোমরা তার কথা শোন ও তাকে মান্য করো এই (সময়ে) হাহাকার ও হট্টগোলের (যুদ্ধের সময়ে) বছরে।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৮০)

হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসির (রা:) হতে বর্ণিত যে, যখন নিঃপাপ আত্মা ও তার ভাইকে হত্যা করা হবে। তাদের হত্যা করা হবে মক্কার এক ছোট গ্রামে। আকাশ থেকে এক সম্বোধকারী সম্বোধন করে বলবে নিশ্চয়ই তোমাদের আমীর হল অমুক। আর সে হল মাহদী। যিনি সমস্ত পৃথিবীকে সত্য ও ন্যায় দ্বারা পরিপূর্ণ করে দিবেন।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৮১)

হযরত সাঈদ ইবনে মুসাইয়িব (রা:) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন (পৃথিবীতে) অনেক দল ও মতানৈক্যতা হবে। এমনকি আকাশে হাতের তালু উদিত হবে। আর একজন সম্বোধনকারী সম্বোধন করে বলবে তোমরা ভালভাবে জেনে রাখ যে, নিশ্চই তোমাদের আমীর বা নেতা হল অমুক।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৮২)

হযরত যুহরী থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন যে, যখন সুফিয়ানী ও মাহদীর দল যুদ্ধের জন্য একত্রিত হবে। সেদিন আকাশ থেকে একটা আওয়াজ শোনা যাবে। আর তা হল তোমরা ভালভাবে জেনে রাখ যে, নিশ্চই আল্লাহ তাআলার বন্ধুরা হল অমুক ব্যক্তির সাথী অর্থাৎ মাহদীর সাথী। হযরত যুহরী বলেন হযরত আসমা বিনতে উমাইস বলেন সেদিনের আলামত হল সেদিন আকাশে হাতের তালু ঝুলন্ত থাকবে। যা মানুষ দেখতে থাকবে। (আল্লাহর নিদর্শন থাকবে)
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৮৪)

হযরত আরতাত থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন যখন মানুষ মিনা ও আরাফাতে থাকবে এবং সেখানে গোত্র দলভূক্ত হওয়ার পর একজন সম্বোধনকারী সম্বোধন করে বলবে- তোমরা ভালভাবে জেনে রাখ যে, তোমাদের আমীর বা নেতা হল অমুক। আর ইহার পরপরই আরেকটি আওয়াজ হবে। যাতে বল হবে- তোমরা ভালভাবে জেনে রাখ যে, সে মিথ্যা বলছে। এবং ইহার পরপরও আরেকটি আওয়াজ হবে। যাতে বলা হবে- যে সে (প্রথম আওয়াজ) সত্য বলেছে। অতপর তারা ভীষণ যুদ্ধ করবে। অতপর বারাযেআ এর অস্ত্র-সস্ত্র মহিমান্বিত হবে। আর সেটা হল বারাযেআ এর সৈন্য। আর ঐ সময় তারা আকাশে শিক্ষা দানকারী হাতের তালু দেখবে। অতঃপর তাদের যুদ্ধ ভীষণাকার ধারণ করবে। এমনকি আহলে বদরের (বদর যুদ্ধের মুসলমানদের সংখ্যার) পরিমাণ ব্যতীত সত্যের সাহায্যকারী একজনও থাকবে না। অতঃপর তারা চলে যাবে। এমনকি তাদের সঙ্গী বা নেতার নিকট বাইয়াত গ্রহণ করবে।
-       (সহীহ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৮৫)

হযরত শাহর ইবনে হাওসাব (রা:) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন রসূল বলেন একবার যিল কাদাহ মাসে অনেক গোত্র দলভুক্ত হবে। আর যিল হাজ্বাহ মাসে হাজীদের লুট করা হবে। আর মুহাররামে আকাশ থেকে এক সম্বোধনকারী সম্বোধন করবে (ডাকবে)।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৮৯)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ