৬.১১ গাজওয়াতুল হিন্দে বিজয়

 ৪.১১ গাজওয়াতুল হিন্দে বিজয় এর কারণ পরিচ্ছেদটি আশা করি পড়েছেন।

মুশরিক বাহিনীদের তুলনায় মুসলিমদের শক্তি, সৈন্য এবং অস্ত্র-রসদপাতি কম হওয়ার পরও ইমাম মাহমুদ হাবীবুল্লাহর নেতৃত্বে বিশাল এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে ইসলাম-প্রিয় খাটি মুসলিমরা বিজয় অর্জন করবে। এই যুদ্ধের আগে ও যুদ্ধের সময়ও অনেক মুসলিম নিহত হবে। এমনকি হাদিসে বলা হয়েছে হিন্দের পূর্ব ভূখণ্ডে মুসলিমদের সাথে সংঘর্ষ-যুদ্ধ হওয়ার আগেই মুশরিকরা গণহত্যা চালাবে। যেহেতু তা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা মুসলিমদের হবে না, তাই তারা প্রচুর হারে নিহত হবে। এই গণহত্যায় বেশির ভাগ নামে মুসলিমরাই মারা পড়বে। যারা আল্লাহর মনোনীত আমীরকে গ্রহণ করেনি উল্টো বিরোধিতা করেছে এবং উল্টো জুলুম করেছে তাদের উপরও এই গণহত্যা আসবে মুশরিকদের পক্ষ থেকে। কিন্তু যারা আল্লাহর মনোনীত আমীরের নেতৃত্ব মেনে নিয়ে তার পরিকল্পনা অনুযায়ী নিরাপদ জায়গায় থাকবে তারা মুশরিকদের আক্রমণ থেকে বেঁচে যাবে এবং তারা কৌশল মতো যুদ্ধ চালিয়ে যুদ্ধে মুশরিকদের পরাজিত করে বিজয় ছিনিয়ে আনবে। আগামীতে ঠিক এরকমই একটি অবস্থা হতে যাচ্ছে এবং এরপরই সেই কাঙ্ক্ষিত বিজয় মুসলিমদের কাছে ধরা দিবে।

রসূল হিন্দুস্তানের যুদ্ধকে গাজওয়া নামকরণ করে যেমন এর মর্যাদা বাড়িয়েছেন তেমনই এটিতে মুসলিমদের বিজয় এর সুসংবাদ দিয়েছেন এবং বলেছেন এই যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীরা জাহান্নাম থেকে মুক্ত হিসেবে চিহ্নিত হবে। সেই ভবিষ্যৎবাণীটিই সত্য হবে সামনে। হাদিসে এসেছে-

মুহাম্মাদ ইবন আবদুল্লাহ ইবন আব্দুর রহীম (রহঃ) ... রসূলুল্লাহ এর গোলাম ছাওবান (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ বলেছেনঃ আমার উম্মতের দুটি দল আল্লাহ্ তা'আলা তাদেরকে জাহান্নাম হতে পরিত্রাণ দান করবেন, একদল যারা হিন্দুস্তানে জিহাদ করবে, আর একদল যারা ঈসা ইবনে মারিয়াম (আঃ) এর সঙ্গে থাকবে (সঙ্গী হবে)।
-       (সহীহ, সূনান নাসাঈ ৩১৭৫ (ইঃ ফাঃ ৩১৭৮); সহীহাহ ১৯৩৪; সহীহ জামে' আস-সগীর ৪০১২; আস সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ৮৬৫)

হিন্দের যুদ্ধের বিজয়ের মাধ্যমেই মুসলিমরা ঘুরে দাঁড়াবে। ইমাম মাহমুদ হাবীবুল্লাহ ও শামীম বারাহ (সাহেবে কিরান) এর নেতৃত্বের মাধ্যমে মুসলিম জাতি আবার বিজয় অর্জন শুরু করবে আর তার শুরুই হবে হিন্দের যুদ্ধের বিজয় দিয়ে। আর সেই কথারও বাস্তবায়ন করবে যে- এই শতাব্দী ইসলামের বিজয়ের শতাব্দী এবং আল্লাহ যে মুসলিম জাতিকে ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে লাঞ্ছিত করেন না সেই কথারও।

হযরত মাস্তুরিদ ইবনে শাদ্দাদ (রা:) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন আমি রসূল কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেন প্রত্যেক উম্মতেরই নির্দিষ্ট একটি সময় রয়েছে। আর আমার উম্মতের সময় হল একশত বছর। সুতরাং যখন আমার উম্মতের উপর একশত বছর অতিবাহিত হয়ে যাবে তখন তাদের উপর আল্লাহ যা অঙ্গীকার করেছেন তা আসবে (ঘটতে শুরু করে)।
-       (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১৯৩৭ [পথিক প্রকা: ১৯৪২; তাহকীক: যঈফ])

এরপরই দিক বিদিক মুসলিমরা বিজয় করতে ছুটে যাবে এবং মুসলিমদের লাঞ্ছনার-পরাজয়ের জীবন শেষ হবে। হাদিসে এসেছে-

হযরত বুরাইদা (রা:) বলেন, আমি রসূলে পাক কে বলতে শুনেছি। খুব শীঘ্রই মুশরিকরা তাদের বন্ধু অঞ্চলের মুসলমানদের উপর অত্যাচার বৃদ্ধি করে দেবে। আর তাদের অসংখ্য মানুষকে হত্যা করবে। তখন সেখানকার বালাদিলিল উছরা অর্থাৎ দুর্গম অঞ্চল থেকে একজন দুর্বল বালক যার নাম হবে মাহমুদ, তাদের মোকাবিলা করবে। আর তাঁর নেতৃত্বেই মুমিনদের বিজয় আসবে। রাবি বলেন, তিনি আরো বলেছেন, তাঁর একজন বন্ধু থাকবে যার উপাধি হবে সৌভাগ্যবান।
-       (আস সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ৮৮১)

আবু হুরায়রা (রা:) বলেন, আমি রসূল কে বলতে শুনেছি, অদূর ভবিষ্যতে হিন্দুস্তানের মুশরিকরা মুসলিমদের উপরে খুবই অত্যাচার করবে। সে সময়ে হিন্দুস্তানের পূর্ব অঞ্চল হতে একটি মুসলিম জামাতের প্রকাশ ঘটবে। যাদের পরিচালনা করবে একজন দুর্বল বালক। যার নাম হবে মাহমুদ, উপাধি নাম হবে হাবীবুল্লাহ। তিনি হিন্দুস্তান বিজয়ের পর কাবার দিকে ধাবিত হবে। আমি (আবু হুরায়রা) জিজ্ঞেস করলাম, "হে আল্লাহর রসূল , সে কাবার দিকে ধাবিত হবে কেন? সেই সময় কি বাইতুল্লাহ ইহুদী-খ্রিষ্টানদের দখলে থাকবে?" তিনি বলেন, না। বরং সে আল্লাহর খলীফা মাহদীর হাতে বাইয়াত নিতে আসবে।
-   (আখীরুজ্জামানা আল মাহদী ফিল আলামাতিল কিয়ামাহ, অধ্যায়ঃ গাজওয়াতুল হিন্দ ২৩১; কিতাবুল আক্বিব ১২৫৬; ক্বাশ্ফুল কুফা ৭৩২; আল-‘আরিফুল ফিল ফিতান ১৭০৩)

হিন্দের যুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে মুশরিকদের চিরতরে পতন হবে। এই যুদ্ধ শুরু করেছিল মুশরিকরা আর বিজয়ের মাধ্যমে শেষ করবে মুসলিমরা। মূর্তিপূজারী আর কোন জাতি পৃথিবীতে থাকবে না ঈসা (আঃ) এর মৃত্যু পর্যন্ত। কারণ হাদিসে এসেছে কেয়ামতের আগে অর্থাৎ ঈসা (আঃ) এর মৃত্যুর পর আবার মানুষ গোমরাহ হবে এবং প্রকাশ্যে মূর্তিপূজা করবে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ