৬.৩৬ বায়দাহ প্রান্তরে ভূমিধ্বস

 বায়দাহ প্রান্তরে ভূমিধ্বস মাহদীর আবির্ভাবের একটি অন্যতম বড় গুরুত্বপূর্ণ আলামত। বায়দাহ প্রান্তরে ধ্বসে যাওয়া এবং কয়জন বাদে ধ্বসে যাবে এবং এর সাক্ষী কে হবে এটি নিয়ে অনেক মতবিরোধ পূর্ণ হাদিসে দেখা যায়। কোথাও এসেছে পাহাড়ের এক রাখাল ছাড়া কেউ এর সাক্ষী হবে না, আবার অন্যত্র এসেছে সেই দলেরই ১ জন বা ২ জন যারা পিছনে ছিল বা সামনে চলে গিয়েছিল তারা এর সাক্ষী হবে এবং মক্কাতে এই ভূমিধ্বসের খবর পৌঁছাবে। আবার কোথাও এসেছে স্বয়ং সেই সুফিয়ানীই ভূমিধ্বস থেকে বেঁচে যাবে এবং সেই মাহদীর প্রচার-প্রচারণা শুরু করবে ও এই ব্যাপারে খবর দিবে। তবে সুফিয়ানীর বেঁচে থাকার বিষয়টিই বেশি যৌক্তিক মনে হয়। (আল্লাহু আলিম)

তবে বেশির ভাগ বর্ণনাই এটি বলে যে- মক্কায় মাহদীর কাছে বায়াত চলাকালে, সিরিয়া থেকে সুফিয়ানী ইমাম মাহদীকে হত্যা করার জন্য সৈন্য নিয়ে আসতে থাকবে। এবং বায়দাহ প্রান্তরে এসে সবাই ধ্বসে যাবে সুফিয়ানী ব্যতীত। সে বেঁচে উঠেই পালাবে ও মাহদীর প্রচার করবে।

হযরত ইবনে ওহাব (রা:) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন আমি আবু ফারেস থেকে শুনেছি যে, তিনি বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাঃ কে বলতে শুনেছি যে, মাহদীর অবির্ভাবের আলামত বা নিদর্শন হল- খোলা প্রান্তর সৈন্য সহকারে ধ্বসে যাওয়া। আর সেটাই মাহদীর অবির্ভাবের আলামত।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৩৩, ৯৬১)

কুতাইবাহ ইবনু সাঈদ, আবু বাকর ইবনু আবূ শাইবাহ ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ..... উবাইদুল্লাহ ইবনু কিবতিইয়াহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হারিস ইবনু আবূ রাবীআহ এবং আবদুল্লাহ ইবনু সুফইয়ান (রহঃ) দুজনেই উম্মুল মুমিনীন উম্মু সালামাহ্ (রা:) এর কাছে গেলেন। আমিও তাদের সঙ্গে ছিলাম। তারা তাকে ঐ বাহিনী সম্বন্ধে প্রশ্ন করলেন, যারা ভূমিতে ধ্বসে যাবে। তখন ইবনু যুবায়র (রা:) এর খিলাফতকাল ছিল। উত্তরে তিনি বললেন, রসূলুল্লাহ বলেছেনঃ জনৈক আশ্রয় গ্রহণকারী বাইতুল্লাহ শরীফে আশ্রয় গ্রহণ করবে। তখন তার বিরুদ্ধে একটি বাহিনী প্রেরণ করা হবে। তারা যখন বাইদা নামক এক মাঠে অবস্থান নিবে তখন তারা ভূমিতে ধ্বসে যাবে। এ কথা শুনে আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! ঐ লোকের ব্যাপারে এ কি করে প্রযোজ্য হতে পারে যে অসন্তুষ্ট হৃদয়ে এ অভিযানে শামিল হয়েছে? উত্তরে তিনি বললেন, তাদের সঙ্গে তাকে সহ ধ্বসিয়ে দেয়া হবে। তবে কিয়ামতের দিন তার উত্থান হবে স্বীয় নিয়াতের ভিত্তিতে। বর্ণনাকারী আবু জাফার (রহঃ) বলেন, এ "বাইদা" হলো মদীনার নিকটবর্তী স্থান।
-       (সহীহ, সহীহুল মুসলিম হাঃ একাঃ ৭১৩২-(৪/২৮৮২) [ইঃ ফাঃ ৬৯৭৬, ইঃ সেঃ ৭০৩৩])

আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) ..... আবদুল আযীয ইবনু রুফাই (রহঃ) হতে এ সূত্রে অবিকল হাদীস বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তাতে আছে, আমি আবু জাফার (রহঃ) এর সঙ্গে দেখা করে বললাম, উম্মু সালামাহ্ (রা:) তো বাইদা নামক এক ময়দানের কথা বলেছেন। আবূ জাফার (রহঃ) বললেন, কক্ষনো নয়, আল্লাহর শপথ! এতো মদীনার "বাইদা" মাঠ।
-       (সহীহ, সহীহুল মুসলিম হাঃ একাঃ ৭১৩৩ [ইঃ ফাঃ ৬৯৭৭, ইঃ সেঃ ৭০৩৪])

আমর আন্‌ নাকিদ ও ইবনু আবূ উমার (রহঃ) ..... হাফসাহ (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি নবী কে এ কথা বলতে শুনেছেন যে, একটি বাহিনী এ কাবা গৃহের বিপক্ষে যুদ্ধ করার ইচ্ছা করবে। তারপর তারা যখন বাইদা নামক এক ময়দানে পদার্পণ করবে তখন তাদের মাঝের অংশটি ভূমিতে ধ্বসে যাবে। এ সময় অগ্রভাগের সৈন্যরা পশ্চাতের সৈন্যদেরকে উচ্চঃস্বরে ডাকতে থাকবে। অতঃপর প্রত্যেকেই ভূমিতে ধ্বসে যাবে। বেঁচে যাওয়া একটি ব্যক্তি ছাড়া তাদের কেউ আর বাকী থাকবে না। সে-ই তাদের সম্বন্ধে অন্যদেরকে খবর দিবে। এ কথা শুনে এক লোক বলল, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, তুমি হাফসাহ (রা:) এর উপর মিথ্যারোপ করনি এবং হাফসাহ (রা:) এর সম্বন্ধে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনিও নবী এর উপর মিথ্যারোপ করেননি।
-       (সহীহ, সহীহুল মুসলিম হাঃ একাঃ ৭১৩৪-(৬/২৮৮৩) [ইঃ ফাঃ ৬৯৭৮, ইঃ সেঃ ৭০৩৫]; সুনান ইবনু মাজাহ তাঃ পাঃ ১/৪০৬৩; সুনান নাসায়ী ২৮৭৯, ২৮৮০; আহমাদ ২৫৯০৫; সহীহাহ ২৪৩২)
-       উপরের মূল হাদিসে কাবা ঘরে আশ্রয়গ্রহণকারী হবেন ইমাম মাহদী রাঃ। এই ঘটনাটি ঘটবে ইমাম মাহদী -এর হাতে খিলাফতের বাইয়াত নেয়ার পর যখন সে খবর ছড়িয়ে পড়বে এবং একটি সৈন্যদল ইমাম মাহদীকে মোকাবেলা করার জন্য শাম থেকে আগমন করবে। আল্লাহ তাআলা তাদেরকে আরবের বায়দায় ভূ-গর্ভে ধসিয়ে দিবেন। বায়দা মূলত: মক্কা ও মদীনার মাঝামাঝি একটি স্থান। [ফাতহুল বারী, ইবনে হাজার- ৪/৩৪০; উমদাতুল কারী, আইনী- ১১/২৩৬]

মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম ইবনু মাইমূন (রহঃ) ..... উম্মুল মুমিনীন হাফসাহ (রা:) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ বলেছেনঃ অচিরেই এই ঘরের অর্থাৎ কাবা ঘরের পাশে একদল লোক আশ্রয় গ্রহণ করবে। যাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকবে না, থাকবে না তার উল্লেখযোগ্য সৈন্য সংখ্যা এবং থাকবে না তাদের আসবাব-সামগ্রী। তাদের বিপক্ষে একটি সৈন্যদল পাঠানো হবে। তারা উদ্ভিদ শূন্য এক ময়দানে আসতেই তাদেরকে ভূমিতে ধ্বসিয়ে দেয়া হবে। বর্ণনাকারী ইউসুফ (রহঃ) বলেন, এ সময় সিরিয়াবাসীরা মক্কাবাসীদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য আসছিল। আবদুল্লাহ ইবনু সাফওয়ান (রহঃ) বলেন, আল্লাহর শপথ। তারা এ সৈন্যবাহিনী নয়। বর্ণনাকারী যায়দ (রহঃ) উম্মুল মুমিনীন থেকে ইউসুফ ইবনু মাহিক-এর হাদীসের অবিকল বর্ণনা করেছেন। তবে আবদুল্লাহ ইবনু সাফওয়ান (রহঃ) যে সৈন্যদলের কথা বর্ণনা করেছেন তিনি সে বাহিনীর কথা বর্ণনা করেননি।
-       (সহীহ, সহীহুল মুসলিম হাঃ একাঃ ৭১৩৫ [ইঃ ফাঃ ৬৯৭৯, ইঃ সেঃ ৭০৩৬])

আবু বাকর ইবনু আবু শাইবাহ (রহঃ) ..... আয়িশাহ (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় রসূলুল্লাহ তার হাত পা নাড়ালেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল ! আজ রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় আপনি এমন আচরণ করেছেন, যা আগে আপনি কখনো করেননি। তিনি বললেনঃ আশ্চর্যের বিষয় এই যে, কুরায়শ বংশীয় জনৈক লোক বাইতুল্লাহ শরীফে আশ্রয় গ্রহণ করবে। তার কারণে আমার উম্মাতের একদল লোক বাইতুল্লাহর উপর আক্রমণের ইচ্ছা করবে। তারা রওনা হয়ে গাছপালাশূন্য ময়দানে আসতেই তাদের ভূমিতে ধ্বসিয়ে দেয়া হবে। এ কথা শুনে আমরা বললাম, হে আল্লাহর রসূল ! বিভিন্ন ধরনের মানুষই তো রাস্তা দিয়ে চলে। উত্তরে তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, তাদের মাঝে কেউ তো স্বেচ্ছায় আগমনকারী, কেউ অপারগ, আবার কেউ পথিক মুসাফির। তারা সবাই এক সঙ্গেই ধ্বংস হয়ে যাবে। তবে বিভিন্ন মিল্লাতের অনুসারী হিসেবে তাদেরকে পুনরুজ্জীবিত করা হবে। আল্লাহ তাআলা তাদেরকে তাদের নিয়াতের ভিত্তিতে উখিত করবেন।
-       (সহীহ, সহীহুল মুসলিম হাঃ একাঃ ৭১৩৬-(৮/২৮৮৪) [ইঃ ফাঃ ৬৯৮০, ইঃ সেঃ ৭০৩৭])

উছমান ইব্‌ন আবূ শায়বা (রহঃ) .... উম্মু সালামাহ (রা:) সূত্রে বর্ণিত। নবী ধ্বসে যাওয়া সে বাহিনীর ঘটনা প্রসঙ্গে বর্ণনা করলেন। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! যারা অনিচ্ছা সত্ত্বেও অংশগ্রহণ করতে বাধ্য হবে, তাদের কি হবে? তিনি বললেনঃ তাদেরও ধ্বসিয়ে দেয়া হবে; কিন্তু তারা তাদের নিয়্যাত অনুযায়ী কিয়ামতের দিন পুনরুত্থিত হবে।
-       (সহীহ, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত/আলবানী একাঃ) ৪২৮৯ [ইঃ ফাঃ ৪২৪০]; মুসনাদে আহমাদ)
-       (সহীহ, সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত/আল মাদানী প্রকাঃ) ২১৭১ [ইঃ ফাঃ ২১৭৪]; সুনান ইবনু মাজাহ তাঃ পাঃ ৩/৪০৬৫; মুসলিম)

মাহমূদ ইবন গায়লান (রহঃ) ...... সাফিয়্যা (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ বলেছেন, লোকেরা এই আল্লাহর ঘর নিয়েও লড়াই থেকে বিরত হবে না। শেষ পর্যন্ত এক বাহিনী যখন লড়াইয়ে আসবে আর তারা যখন খোলা ময়দানে উপস্থিত হবে তখন তাদের প্রথম ও শেষ সকলকে নিয়ে যমীন ধ্বসে যাবে। যারা মাঝে ছিলেন তারাও এ থেকে বাঁচতে পারবে না। আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ, যে ব্যক্তি তাদের মাঝে বাধ্য হয়ে শামিল হয়েছে তার কি হবে? তিনি বললেনঃ তাদের অন্তরের অবস্থা অনুসারে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে উত্থিত করবেন।
-       (সহীহ, সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত/আল মাদানী প্রকাঃ) ২১৮৪ [ইঃ ফাঃ ২১৮৭]; সুনান ইবনু মাজাহ তাঃ পাঃ ২/৪০৬৪)
-       উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু মুসলিম বিন সফওয়ান এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ২০২ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, ৩ টি খুবই দুর্বল, ৩০ টি দুর্বল, ৫১ টি হাসান, ১১৮ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ২১১৮, মুসলিম ২৮৮৪, ২৮৮৫, ২৮৮৬, তিরমিযি ২১৭১, ২১৮৪, আবু দাউদ ৪২৮৬, ৪২৮৯, আহমাদ ৭৮৫০, ৮০৫২, ৮১৫১, ৮৪০৫, ২৪২১৬, ২৬৩১৮, মু'জামুল আওসাত ১১৫৩, ৪০৩০, ৪১৬৪, ৪১৬৪, ৯৪৫৯।

হযরত মুহাম্মাদ ইবনে আলী হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন অচিরেই মক্কার আশ্রয়প্রার্থীর দিকে সত্তর হাজার সৈন্য প্রেরণ করা হবে। তাদের সম্মুখে কইসের এক ব্যক্তি থাকবে। এমনকি যখন তারা ছানিয়া পৌছবে তখন তাদের শেষ ব্যক্তি প্রবেশ করবে। আর সেখান থেকে তাদের প্রথম জন বের হবে না। হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম খোলা প্রান্তরকে ডেকে বলবেন- 'হে খোলা প্রান্তর! হে খোলা প্রান্তর! তার আওয়াজ পূর্বে পশ্চিমে সকলেই শুনবে'। তাদেরকে গ্রাস কর। ফলে তাদের কোন মঙ্গল থাকবে না (অর্থাৎ সুফিয়ানির সৈন্যগণ ধ্বসে যাবে)। পাহাড়ে অবস্থানরত একমাত্র ছাগলের রাখাল ব্যতীত তাদের ধ্বংসের কোন প্রকাশ্য আলামত থাকবে না। কেননা যখন তারা মাটিতে দেবে যাবে তখন সে তাদেরকে দেখবে। অতঃপর সে তাদের ব্যাপারে সকলকে সংবাদ দিবে। যখন আশ্রয়প্রার্থী (মাহদী) তাদের ব্যাপারে শুনতে পাবে তখন সে বের হয়ে যাবে।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৩৭)

হযরত হানাস ইবনে আব্দুল্লাহ হতে বর্ণিত যে, তিনি হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) কে বলতে শুনেছেন যে, মদীনার খলীফা মক্কার হাশেমীদের দিকে সৈন্য প্রেরণ করবে। উক্ত সৈন্য দল তাদেরকে পরাজিত করবে। অতঃপর সিরিয়ার খলীফা এব্যাপারে অবহিত হবে। তখন সে তাদের উদ্দেশ্যে সৈন্য প্রেরণ করবে। যে সৈন্যদলে অভিজ্ঞ ছয়শত সেনা থাকবে। যখন তারা খোলা প্রান্তরে আসবে ও সেখানে চাঁদনী রাতে অবতরণ করবে। কোন এক রাখাল সেখানে আসবে। এবং তাদেরকে দেখবে এবং আর্শ্চায্য বোধ করবে। আর সে বলবে হায় আফসোস!! মক্কাবাসীদের উপর কি আসছে (কি বিপদ আসছে)। অতঃপর সে তার পশুপালের কাছে যাবে। অতঃপর আবার ফিরে আসবে। কিন্তু তাদের একজনকেও দেখতে পাবে না। কেননা যমিন তাদের নিয়ে ধ্বসে গেছে। অতঃপর সে (আর্শ্চায্য হয়ে) বলবে সুবহান আল্লাহ। তারা সকলে এক মুহুর্তে চলে গেল। অতঃপর সে তাদের আবাসস্থলে আসবে। সেখানে সে মখমল বা এক প্রকার ফুল দেখবে যার কিছু অংশ ধ্বসে গেছে, আর কিছু অংশ যমিনের উপরে আছে। সে উহার চিকিৎসা করবে কিন্তু সে সক্ষম হবে না। অতঃপর সে বুঝবে যে, যমিন তাদের নিয়ে ধ্বসে গেছে। অতঃপর সে মক্কার খলীফার নিকটে আসবে। এবং তাকে সুসংবাদ দিবে। উক্ত রাখালের কথা শুনে মক্কার খলীফা বলবে সকল প্রসংসা আল্লাহ তাআলার জন্য। এটা সেই আলামত যার ব্যাপারে তোমাদেরকে আগে জানানো হয়েছে। অতঃপর তারা সিরিয়ার দিকে যাবে।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৩৪)

হযরত কাতাদা (রা:) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন রসূল বলেন সিরিয়া হতে মক্কার দিকে একদল সৈন্য প্রেরণ করা হবে। যখন তারা খোলা প্রান্তরে পৌছবে তখন উক্ত খোলা প্রান্তর তাদের নিয়ে ধ্বসে যাবে।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৩৯)

হযরত আবু জাফর (রা:) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, তাদের নিয়ে ধসে যাবে (সৈন্যদল নিয়ে যমিন ধসে যাবে)। ফলে বিকারগ্রস্তদের থেকে দুই জন ব্যতীত তাদের কেউই বাঁচবে না। তাদের দুই জনের নাম হল, ওবার এবং ওবাইর। তাদের দুই জনের চেহারাকে তাদের পশ্চাতের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৪১, ৯৪৬)

হযরত কাব (রা:) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন বার হাজার সৈন্য বিশিষ্ট একটি সৈন্যদল মদীনার মুখি হবে। অতঃপর খোলা প্রান্তর তাদের নিয়ে ধ্বসে যাবে।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৪৩)

হযরত আরতাত (রা:) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন একজন ব্যক্তি ব্যাতীত আর কেউ তাদের থেকে বেঁচে থাকবে না। আল্লাহ তাআলা তার চেহারাকে তার পিছনের দিকে ঘুরিয়ে দিবেন। সে (উল্টা দিকে) হাটবে যেমন সে পূর্বে তার সামনের দিকে সোজা ভাবে হাঁটতো।
-       (সহীহ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৪৯)

হযরত সাদ ইবনে আবী ওয়াক্কাস (রা:) থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ এই আয়াত তিলাওয়াত করলেন, অর্থাৎ হে নবী আপনি বলে দিনঃ তিনিই (আল্লাহ) শক্তিমান যে, তোমাদের উপর কোন শাস্তি উপর দিক থেকে অথবা তোমাদের পদতল থেকে প্রেরণ করবেন। (সূরাঃ আনআমঃ ৬৫)। অতঃপর রসূল বলেছেন, জেনে রেখ! নিশ্চয় তা সংঘটিত হবে। (বর্ণনাকারী বলেন) এর পর তার আর কোন ব্যাখ্যা করেননি। *
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৪৩; সুনান আত তিরমিজি ৩০৬৬)
-       * অন্যত্র এর ব্যাখ্যা এসেছে যে এটি হচ্ছে বায়দাহ প্রান্তরের ভূমিধ্বস যা নিচ থেকে সংঘটিত হবে।

হযরত আলী (রা:) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন যখন ঐসমস্ত লোককে অনুসন্ধানের জন্য সৈন্য অবতরণ করবে যারা মক্কার উদ্দেশ্যে বের হয়েছে। তখন তারা (সৈন্যদল) একটি খোলা প্রান্তরে অবতরণ করবে (আর তখনই) উক্ত খোলা প্রান্তর তাদের নিয়ে ধসে যাবে। এবং তাদের শেষ করে দিবে। আর আল্লাহ তআলার কথা (এই দিকে ইঙ্গিত করে) যদি তুমি দেখতে যখন তারা ভীত বিহ্বল হয়ে পড়বে। তখন কোন অব্যহতি থাকবে না। আর তাদেরকে নিকটবর্তী স্থান হতে পাকড়াও করা হবে (সূরা সাবা, আঃ ৫১)। তাদের পায়ের নীচ থেকে। আর সৈন্যদল থেকে এক ব্যক্তি উটের সন্ধানে বের হবে। অতঃপর ফিরে আসবে। কিন্তু তাদের একজন কেও পাবে না। তাদের অনুভূতিও পাবে না। (তাদের ঘ্রাণও পাবে না।) আর এই সেই ব্যক্তি যে মানুষের নিকট তাদের ব্যাপারে সংবাদ দিবে।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৪২)

হযরত ইবনে মাসউদ (রা:) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন একদল সৈন্য মদীনার উদ্দেশ্যে প্রেরণ করা হবে। দুই জামাও (স্থান) এর মধ্যবর্তী স্থান তাদের নিয়ে ধ্বসে যাবে। (এরপর) নিঃপাপ পবিত্র আত্মাকে হত্যা করা হবে।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৪০)

হযরত ফালান ইবনে মাআফেরী হতে বর্ণিত যে, তিনি আবু ফারেস থেকে শুনেছেন যে, তিনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা:) কে বলতে শুনেছেন যে, যখন খোলা প্রান্তর সৈন্য সহকারে ধ্বসে যাবে, আর সেটাই মাহদীর অবির্ভাবের আলামত বা নিদর্শন।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৫০)



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ