৬.১৬ কার দ্বারা কে ক্ষতিগ্রস্ত হবে

 ভয়ংকর এই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে কোন কোন দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বা কারা কাকে (পারমাণবিক) আক্রমণ করবে ও ক্ষতিগ্রস্ত করবে এ ব্যাপারে খুব বিস্তারিত ভাবেই এসেছে। সেই হাদিসগুলো এখানে দেওয়া হলো-

হযরত হুযাইফা (রা:) বলেন, রসূলে পাক ﷺ বলেছেন, বিশ্বব্যাপী অধঃপতন শুরু হবে। এমনকি মিশরও অধঃপতনের সম্মুখীন হবে। তুরস্কের অধঃপতন হবে দায়লামীর পক্ষ থেকে বিস্ফোরণের মাধ্যমে। দায়লামীর অধঃপতন হবে, আর্মেনিয়ার পক্ষ থেকে। আর্মেনিয়ার অধঃপতন হবে, খাজার পক্ষ থেকে, খাজার অধঃপতন হবে, তুরস্কের পক্ষ থেকে। সিন্দের অধঃপতন হবে, হিন্দুস্তানের পক্ষ থেকে। হিন্দুস্তানের অধঃপতন হবে, তিব্বতের পক্ষ থেকে। তিব্বতের অধঃপতন হবে নাসারার পক্ষ থেকে। *

-       (আস-সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ৭৬৮; তাজকিরাহ, ইমাম কুরতুবী; আন নিহায়া ফিল ফিতান ওয়াল মালাহিম, ইবনে কাসীর; আস সুনানুল ওয়ারিদাতু ফিল ফিতান, আবু আমর আদ-দানী)

-   * বিভিন্ন দেশ বা অঞ্চলকে রসূলের জামানায় এই সকল নামেই অভিহিত করা হতো এবং বর্তমানে এই সকল দেশ বা অঞ্চলগুলো ভেঙ্গে নতুন নতুন দেশ বা রাষ্ট্রতে পরিণত হয়েছে। তাই বর্তমানে অঞ্চল ঠিক করা একটু কঠিন হয়। দায়লামী নামে ইরানের একটি প্রদেশও আছে। তবে এখানে দায়লামী বলতে কুর্দিকে বুঝিয়েছে। খাজার অর্থ রাশিয়া, সিন্দ হচ্ছে পাকিস্তান, হিন্দ হছে ভারত, তিব্বত হচ্ছে চীন।

হযরত হুজায়ফা (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ বলেছেন, বিশ্বব্যাপী অধঃপতন শুরু হবে। এমনকি মিশর অধঃপতনের সম্মুখীন হবে। আর মিশর নিরাপদ থাকতেই বসরার (ইরাক) অধঃপতন হবে। বসরা (ইরাকের) অধঃপতন হবে ডুবে যাওয়ার কারণে। মিশরের অধঃপতন হবে নিলনদ শুকিয়ে যাওয়ার কারণে। মক্কা ও মদিনার অধঃপতন হবে ক্ষুধার কারণে। ইয়েমেনের অধঃপতন হবে পঙ্গপালের কারণে। উবলা'র অধঃপতন ঘটবে অবরোধের মাধ্যমে। পারস্যের (ইরানের) অধঃপতন হবে রিক্তহস্ত ও চোরডাকাতের মাধ্যমে। তুর্কিদের (তুরস্কের) অধঃপতন হবে দায়লামীর (কুর্দি) পক্ষ থেকে। দায়লামী (কুর্দি) অধঃপতন হবে আর্মেনিয়ার পক্ষ থেকে। আর্মেনিয়ার অধঃপতন হবে "খাযার" (রাশিয়া) পক্ষ থেকে। "খাযার" (রাশিয়া) দের অধঃপতন হবে তুর্কির (তুরস্ক) পক্ষ থেকে। আর তুর্কি (তুরস্ক) অধঃপতন হবে বজ্রাঘাতের (পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ) এর মাধ্যমে। সিন্ধ (পাকিস্তান) এর অধঃপতন হবে হিন্দ (ভারত) এর পক্ষ থেকে। হিন্দের (ভারত) অধঃপতন হবে তিব্বতের (চীন) পক্ষ থেকে। তিব্বতের (চীন) অধঃপতন হবে "রমূল" (প্রাচীন রোমানদের একটি গোত্র বা আমরিকা) এর পক্ষ থেকে। হাবশার (ইথিওপিয়া) অধঃপতন হবে ভূমিকম্পের মাধ্যমে। "জাওরা" (বাগদাদ) এর অধঃপতন হবে সুফিয়ানীর তাণ্ডবের কারণে। "রাওহা" (বাগদাদ শহরের ছোট এলাকা) এর অধঃপতন হবে ভূমিধ্বসের মাধ্যমে। আর সম্পূর্ণ কুফা (ইরাক) এর অধঃপতন হবে হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে।
-       (তাজকিরাহ, ইমাম কুরতুবী; আন নিহায়া ফিল ফিতান, ইবনে কাসীর; আস সুনানুল ওয়ারিদাতু ফিল ফিতান)
-       হাদিসটিতে হাবশার পতন থেকে পরবর্তী বিষয়গুলো তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আরো পরে ঘটবে। কারণ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পরই সুফিয়ানীর প্রকাশ হবে।

হযরত ওহাব বিন মুনাব্বিহ (রা:) বলেন, আরব উপদ্বীপ (সৌদি আরব, কাতার, আরব আমিরাত, বাহরাইন, ওমান) ততক্ষন পর্যন্ত ধ্বংস হবে না, যতক্ষণ না মিশর ধ্বংস হয়। বিশ্বযুদ্ধ (আমাক প্রান্তের মহাযুদ্ধ) ততক্ষন পর্যন্ত শুরু হবে না, যতক্ষণ না কুফা(ইরাকের একটি শহর) ধ্বংস না হয়। বিশ্বযুদ্ধ (রোমদের সাথে আমাক প্রান্তরে) শুরু হলে বনু হাশেমের এক ব্যক্তির হাতে কুস্তুন্তুনিয়া (ইস্তাম্বুল) বিজয় হবে। আন্দালুস (স্পেন) ও আরব উপদ্বীপ (সৌদি আরব, কাতার, আরব আমিরাত, বাহরাইন ওমান) এর অধঃপতন ঘটবে ঘোড়ার পা ও সেনাবাহিনীর পারস্পরিক মতানৈক্যের কারনে। ইরাকের অধঃপতন হবে ক্ষুধা ও তরবারি (অস্ত্র) কারণে। আরমেনিয়ার অধঃপতন ঘটবে ভূমিকম্প ও বজ্রাঘাতের (সম্ভবত পারমাণবিক বোমা বা, মিসাইল নিক্ষেপের) কারনে। কুফা (ইরাকের একটি শহর) ধ্বংস হবে শত্রুদের পক্ষ থেকে। বসরা (ইরাক) ধ্বংস হবে ডুবে যাওয়া/নিমজ্জিত হওয়ার কারণে। "উবলা"র অধঃপতন হবে শত্রুদের পক্ষ থেকে। "রাই" (ইরানের একটি শহর) এর অধঃপতন হবে দাইলামের (তুরস্ক ও ইরানের উত্তর এলাকার একটি তুর্কি গোত্র বা, কুর্দি জাতি) এর পক্ষ থেকে। খোরাসানের (আফগানিস্তান ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকা) অধঃপতন ঘটবে তিব্বত (চীন) এর পক্ষ থেকে। তিব্বত (চীন) এর অধঃপতন ঘটবে সিন্ধ (পাকিস্তান) এর পক্ষ থেকে। সিন্ধ (পাকিস্তান) এর অধঃপতন ঘটবে হিন্দুস্তান (ভারত) এর পক্ষ থেকে। ইয়েমেনের অধঃপতন ঘটবে টিড্ডি (পঙ্গপাল) ও বাদশাহীর কারনে। মক্কার অধঃপতন ঘটবে হাবশা (ইথিওপিয়া) এর পক্ষ থেকে। আর মদিনার অধঃপতন ঘটবে ক্ষুধার কারনে। *
-       (আসসুনানুল ওয়ারিদাতু ফিল ফিতান, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৮৮৫)
-       * এই হাদিসটিতে ভবিষ্যতে ঘটবে আমাক প্রান্তরের যুদ্ধ ও তখনকার সময়ের অবস্থার সাথে ৩য় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের যুদ্ধকে মিলিয়ে ফেলেছে। আর কারা কাকে আক্রমণ করবে সেটিও অন্য হাদিস থেকে কিছুটা বিপরীত উল্লেখ হয়েছে। তাই শুধু মার্ক করা টুকুই এখন নেওয়া যায় যা ৩য় বিশ্বযুদ্ধের ব্যাপারে।

আগামী কথনে উল্লেখ রয়েছে

আগামী কথনে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কে ভবিষ্যৎবাণী করা হয়েছে যা হাদিসের হুবহু বর্ণনাই তুলে ধরেছে। এ ব্যাপারে আগামী কথনে যা বলা হয়েছে তা ব্যাখ্যা সহ তুলে ধরা হলো-

 

প্যারাঃ (২৭)

দ্বিতীয় বিশ্ব সমর শেষে, আশি বর্ষ পর।
শুরু হবে ফের অতি ভয়াবহ, তৃতীয় বিশ্ব সমর।

প্যারাঃ (২৮)

কুর্দিকে এ রণে করিবে ধ্বংস, কঠিন হস্তে আরমেনিয়া।
আরমেনিয়ায় ঝড় তুলিবে, সম্মুখ সমরে রাশিয়া।

ব্যাখ্যাঃ আশ-শাহরান বলেছেন, কুর্দিকে এই ৩য় বিশ্বযুদ্ধে ধ্বংস করবে আরমেনিয়া। এবং আরমেনিয়ার সাথে লড়াইয়ে মাতবে রাশিয়া। কুর্দি = যারা ইরাক, সিরিয়া, ও ইরানের উত্তরাঞ্চলীয় এবং তুরস্কের পূর্বাঞ্চলীয় বাসিন্দা। আরমেনিয়া = ইরানের উত্তরে এবং তুরস্কের পূর্বদিকে, কাস্পিয়ান সাগর ও কৃষ্ণ সাগরের মাঝে অবস্থিত। 

প্যারাঃ (২৯)

রাশিয়া পাইবে কঠিন শাস্তি, মাধ্যম হইবে তুরস্ক।
তাহার পরেই এই মাধ্যমকে, কুর্দি করিবে ধ্বংস।

ব্যাখ্যাঃ তারপর রাশিয়ায় আক্রমণ চালাবে তুরস্ক। আর ঠিক তখন তারপরই তুরস্ককে কুর্দি জাতি আক্রমণ করে ধ্বংস করে দিবে।

প্যারাঃ (৩০)

এর মাঝেই চালাবে তাণ্ডব, পার্শদেশকে হিন্দুস্তান।
বজ্রাঘাতে হইবে ধ্বংস, বেইমানের হাতে পাকিস্তান।

ব্যাখ্যাঃ এর মাঝেই ভারত তখন পাকিস্থানের উপর তাণ্ডব চালাবে। তারা বজ্রাঘাতে (পারমাণবিক বোমা হামলার মাধ্যমে) পাকিস্তানকে ধ্বংসপ্রাপ্ত করবে। তবে এর আগের প্যারাগুলোতে বলা আছে যে, হিন্দুস্তান মুমিনদের দখলে যাবে। এখানে প্যারা দিয়ে একটির পরে আরেকটি বুঝিয়েছে কিন্তু এইসব ঘটনা একসাথে চলতে থাকবে। যখন হিন্দুস্তান মুমিনদের দখলে যাওয়া শুরু হবে ঠিক তখনই হিন্দুস্তানের মুশরিকরা শেষ মারণাস্ত্র হিসেবে পারমাণবিক বোমা পাকিস্তানে ছুড়বে এবং পাকিস্তান ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হবে। তবে পুরোপুরি ধ্বংস হবে না তবে তা ব্যাপক ক্ষতির কারণ হবে। তবে এই হামলাটি হবে ভারতের মরণ কামড় হিসেবে। কারণ তখন ভারতে যুদ্ধ চলতেই থাকবে, হয়তো তখনও পুরোপুরি দখলে আসবে না এবং শেষ সময়ে পাকিস্তানে এই হামলা করে বসবে।

প্যারাঃ (৩১)

তাহার পরেই হিন্দুস্তানকে, ধ্বংস করিবে তিব্বত।
তিব্বত কে করিবে সে রণে তখন, একটি আলিফ বধ।

ব্যাখ্যাঃ আশ-শাহরান বলেছেন যে, যখন পাকিস্তানকে (পাকিস্তানের কিছু বা বড় অংশকে) ভারত ধ্বংস করে দিবে তখন চীন (তিব্বত) আবার ভারতকে ধ্বংস করে দিবে (বড় বা আংশিক একটি অংশ) অর্থাৎ হামলা চালাবে। এখানে ভারতকেও পারমাণবিক বোমা দ্বারা আঘাত করার কথা এসেছে। এইসব ঘটনাগুলো সমসাময়িক সময়েই হতে থাকবে। আর এখানে ভারতকে ধ্বংস মানে পুরোপুরি ধ্বংস নয় তবে তা ব্যাপক ক্ষতির কারণ হবে। এবং তার পরপরই চীনকে আবার একটি দেশ ধ্বংস করবে, বধ করবে। সে দেশটির নাম আরবীতে "আলিফ" হরফে শুরু।

প্যারাঃ (৩২)

চতূর্মূখী বজ্রাঘাতে সে, "আলিফ" হইবে নিঃশেষ।
ইতিহাসে শুধুই থাকিবে নাম, মুছে যাবে সেই দেশ।

ব্যাখ্যাঃ আলিফ নামক দেশটিতে তারপর চতুর্মূখী আক্রমন চালানো হবে। যার ফলে ইতিহাসে শুধু ঐ দেশটির নামই কেবল থাকবে, কিন্তু তার বিন্দু পরিমাণ চিহ্নও থাকবেনা। উল্লেখ্য যে সেই আলিফ নামক দেশটির পূর্ণ নাম হলো "অ্যামেরিকা"। শাহ নিয়ামাতুল্লাহ (র) তার কাসিদায় সওগাত এ বলেছেন যে,

এ রনে হবে আলিফ এরূপ, পয়মাল মিশমার,

মুছে যাবে দেশ, ইতিহাসে শুধু নামটি থাকিবে তার

(কাসিদায় সওগাত, প্যারা ৫২)

যে বেঈমান দুনিয়া ধ্বংস করিলো আপন কামে

নিপাতিত সে শেষকালে নিজেই জাহান্নামে।

(কাসিদায় সওগাত, প্যারা ৫৪)

অতএব বোঝা গেলো, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিভিন্ন দিক (দেশ) থেকে পারমাণবিক বোমার আক্রমণ হবে অ্যামেরিকার উপর, এতে অ্যামেরিকা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।

বিস্তারিত বিশ্লেষণ

হাদিসগুলো এবং আগামী কথন থেকে পাওয়া তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করলে একটা স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাবে। আগের কোন একটি পরিচ্ছেদে বলেছিলাম বর্তমান বিশ্বরাজনীতিতে একটি ব্লক সিস্টেম রয়েছে। সহজে বললে বলা যায় একটা গ্রুপিং রয়েছে, পক্ষপাতিত্ব রয়েছে। দেশগুলোর মধ্যে জোট ও পক্ষীয়-বিপক্ষীয় দল রয়েছে। আর্মেনিয়া আর আজারবাইজানের মধ্যে প্রায়ই সীমান্তে বড় বড় সংঘাত হয়। এর মধ্যে একটা সংঘাতে প্রায় যুদ্ধই শুরু হয়ে যাচ্ছিল। তখন এই দুই দেশের আবার পক্ষ নিয়েছিল আরো দুই দেশ। তখন আর্মেনিয়ার পক্ষে ছিল তুরস্ক। অর্থাৎ এ থেকে জানা যায় তুরস্ক আর্মেনিয়ার মিত্রদেশ। এখন কুর্দি জাতির বিষয়ে যদি বলি, এই কুর্দি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য তুরস্ক এখন পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। সিরিয়াতে কিছু কুর্দি বাহিনী রয়েছে আর তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করতে সিরিয়াতে তুরস্কের সমর্থক সৈন্য বাহিনী গঠন করে কুর্দিদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। তাহলে আর্মেনিয়া যদি কুর্দিদের ধ্বংস করে বা হামলা করে তাহলে এটা তুরস্কের জন্যই ভালো আর আর্মেনিয়া তো মিত্রদেশই। কিন্তু রাশিয়া আবার কুর্দিদের মিত্র। তাই যখন কুর্দিকে আর্মেনিয়া আক্রমণ করবে তখন রাশিয়া আর্মেনিয়াকে আক্রমণ করবে। আর আর্মেনিয়া যেহেতু তুরস্কের মিত্রদেশ তাই এর প্রতিশোধ নিতে রাশিয়াতে তুরস্ক হামলা চালাবে। আবার তখন তুরস্ককে পাল্টা হামলা করবে কুর্দি বাহিনী।

এভাবে সারা বিশ্বে যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার পর এই এশিয়া মহাদেশেও শুরু হয়ে যাবে এবং ইমাম মাহমুদ হাবীবুল্লাহর নেতৃত্বে হিন্দের যুদ্ধে পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে থেকে ভারত শেষ মরণ কামড় হিসেবে পাকিস্তানে পারমাণবিক হামলা করে বসবে। এরপর ভারতের উপর আবার চীন হামলা করবে। এরপর চীনের উপর আবার হামলা করবে অ্যামেরিকা। তারপর অ্যামেরিকাকে বিভিন্ন দেশ আবার হামলা করবে।

হাদিস ও আগামী কথনে যে সকল দেশের নাম এসেছে এরাই যে শুধু যুদ্ধে জড়াবে বিষয়টি এমন নয়, আরো অসংখ্য দেশই যুদ্ধে জড়াবে। কারণ আমরা আগেই দেখেছি ৩য় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই পুরো হিন্দে মুশরিকদের সাথে মুসলিমদের বড় ধরনের যুদ্ধ লেগে যাবে। আর সেটি চলমান অবস্থাতেই ৩য় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে। মূলত এখানে যেসব দেশ অন্য দেশকে হামলা করবে এই হামলাগুলো বেশির ভাগ বা পুরোটিই হবে পারমাণবিক হামলা। অর্থাৎ হাদিসে এক দেশ আরেক দেশের উপর পারমাণবিক হামলার বর্ণনাই উল্লেখ করেছে। এক দেশ আরেক দেশকে ধ্বংস করবে মানে পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে হামলা করে ধ্বংস করবে। ১ম বিশ্ব যুদ্ধে ৩০ টির বেশি দেশ যুদ্ধ করেছে। ২য় বিশ্বযুদ্ধে ৫০ টিরও বেশি দেশ যুদ্ধ করেছে। আর ৩য় বিশ্বযুদ্ধে কতগুলো দেশ করবে জানা নেই তবে প্রত্যেক দেশ বা অঞ্চলই মনে করবে আমার পার্শ্ববর্তী দেশ বা অঞ্চল হয়তো ধ্বংস হয়ে গেছে। হাদিসে বলেছে এক ধরনের কেয়ামত হয়ে যাবে পুরো বিশ্বে!

৬.১৬.১ যে দেশটি শুধু ইতিহাসেই থাকবে, বাস্তবে আর থাকবে না

হাদিসে বলা রয়েছে যে চীনকে একটি দেশ বা জাতি হামলা করবে। হাদিসে এসেছে- তিব্বতের অধঃপতন হবে নাসারার পক্ষ থেকে। অন্যত্র এসেছে- তিব্বতের (চীন) অধঃপতন হবে "রমূল" (প্রাচীন রোমানদের একটি গোত্র বা অ্যামেরিকা) এর পক্ষ থেকে।

এই অ্যামেরিকাতেও আবার আক্রমণ হবে। এরপর যখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বুঝবে যে এই বিগত সকল যুদ্ধের উস্কানি ও ষড়যন্ত্রকারী হচ্ছে ইউরোপের কান্ট্রিগুলো ও মূল অ্যামেরিকা তখন অ্যামেরিকাতে বিভিন্ন দেশ একযোগে পারমাণবিক হামলা চালাবে আর এর ধ্বংসের পরিমাণ এত হবে যে এই দেশটিরই আর কোন নাম নিশানা থাকবে না। শুধু ইতিহাস হয়ে থাকবে যে অ্যামেরিকা নামে অতীতে একটা দেশ ছিল। আরো হয়তো মনে রাখবে, যে বিশ্ব সুপার পাওয়ার ছিল এবং সব ষড়যন্ত্রের মূল ছিল ও ইসলামের ঘোর বিরোধী, বিভিন্ন মুসলিম দেশগুলো ধ্বংসের মূল পরিকল্পনাকারী, আক্রমণকারী ছিল আর তাদের হাতে লেগে ছিল অসংখ্য নিরপরাধ মুসলিমদের রক্ত, সেই দেশ আর নেই। আর আল্লাহর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হওয়ার পরিকল্পনা অনুযায়ী (এই দ্বীন কায়েম থাকবে, কেউ মিটাতে পারবে না) তারা নিজেদের বানানো গযবেই ধ্বংস হয়ে গেছে।

হ্যাঁ, সেই দেশটি হচ্ছে অ্যামেরিকা। বিভিন্ন দেশের আক্রমণের ফলে এই দেশটি একদমই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। এটিই তাদের জন্য একটা গযব হিসেবে চিহ্নিত হবে। সারা বিশ্বে ইসলামোফোবিয়া ছড়ানো সহ জিহাদকে সন্ত্রাসী-জঙ্গী কর্মকাণ্ড আখ্যা দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশে হামলা এবং যেগুলোতে হামলা করেনি সেগুলোতে পরিকল্পনা করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, মুসলিমদের মধ্যেই এমন প্রশাসন বানানো যে তারাই অন্য মুসলিমদের গুম, গ্রেফতার ও খুন করবে যারা ইসলামী শাসন চাইবে। বর্তমান বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরব হচ্ছে এই অবস্থার উদাহরণ। মুসলিম হয়ে মুসলিমদেরই গুম-খুন-গ্রেফতার করতেছে শুধু মাত্র এই কারণে যে তারা ইসলামী শাসন ও ইসলামী আইন চায়। আর মজার বিষয় হচ্ছে এইগুলো করছে কার কথায় জানেন? পশ্চিমা পথভ্রষ্ট খ্রিষ্টানদের কথায়, অ্যামেরিকা-ইউরোপের কথায়। যেখানে আল্লাহ অসংখ্যবার বলেছে তারা পথভ্রষ্ট, অভিশপ্ত, গোমরাহ, তাদেরকে বন্ধু বানিয়ো না, তারা তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন থেকে ফিরিয়ে দিতে চায় এটাই মূল পরিকল্পনা তাদের, তারা বন্ধু সাজলেও বন্ধু না। কিন্তু কে শোনে এই উপদেশ। অ্যামেরিকা ধ্বংসের ভবিষ্যৎবাণী যেমন শুনেছে তেমন বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরবের মুসলিম প্রশাসনরাও শুনে রাখুক যে তাদের জন্য ভবিষ্যতে দুনিয়াতেই কি অপেক্ষা করছে। ইসলামপ্রিয় মুসলিমদের উপর জুলুম-নির্যাতন আর কিছু সময় করে নিক যাতে এমন দলিল সাব্যস্ত হয়ে যায় যে যা দিয়ে তাদের দোষ প্রমাণ হয়। অসংখ্য লাখো কোটি মুসলিম তাদের বিরুদ্ধে আখিরাতে মামলা দায়েরের জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। তারাও যেন নিজেদের গ্রেফতারের প্রস্তুতি নেয়। এছাড়াও বিভিন্ন দেশকে জিম্মি করে মুসলিমদের উপর জুলুম করতে বাধ্যও করেছে এই অ্যামেরিকা। আফগানের সাথে সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। ইরাক ধ্বংস করেছে। ইরানে এখনো ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এক কথায় পুরো বিশ্বব্যাপী শয়তানের কার্যকলাপ ছড়ানোর, প্রচার করার মূল শিকড় হিসেবে কাজ করেছে এই অ্যামেরিকা। আর শেষ পর্যন্ত কি পাবে তা ভবিষ্যৎই বলে দিবে। আর তাদের অর্থনৈতিক সঙ্কট ও আফগান যুদ্ধে হারের পর হার ছাড়া কিছুই দেখা যাচ্ছে না। তাদের ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকার। শয়তান যত কৌশলই করুক না কেন তা ঠুনকো, ভঙ্গুর ও ক্ষণস্থায়ী।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ