৬.১৩ পশ্চিমেও ঘোরতর যুদ্ধ

 হিন্দের যুদ্ধ পুরোপুরি শেষ হবে না এর মধ্যেই পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলোতেও যুদ্ধের দামামা বেজে উঠবে। তারা যুদ্ধের জন্য মরিয়া হয়ে উঠবে। এই যুদ্ধগুলো করবে তারা বিশ্বে ক্ষমতা দখল করার জন্য এবং তাদের আর্থিক সঙ্কট ও দুর্ভিক্ষের অবস্থার কারণে পরিস্থিতি সামাল না দিতে পেরে এই অবস্থা ঘটাবে। পশ্চিমাদের অবস্থা সম্পর্কে হাদিসে এসেছে-

হযরক কাব (রহ:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আসমানের বুকে এক প্রকার লাল বর্ণের আত্মপ্রকাশ করবে। একটি তারকা উদিত হবে যেটা পূর্নিমার রাত্রির মত উজ্জল হয়ে হঠাৎ বাঁকা হয়ে যাবে। হাদীস বর্ণনাকার ওলীদ বলেন, আমার নিকট হযরত কাব থেকে সংবাদ এসেছে, তিনি বলেন, পূর্বদিকের এলাকায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিবে, পশ্চিমে জীর্ণতা প্রকাশ পাবে, আসমানে লালিমা দৃশ্যায়ন হবে এবং কেবলার দিকে ব্যাপকহারে মানুষ মারা যাবে।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬২২)

হযরত কাসীর ইবনে মুররা (রহ:) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ফিতনার সূচনা লক্ষন সমূহ প্রকাশ পাবে মূলতঃ রমযান মাসে, তীব্র আকার ধারন করবে শাওয়াল মাসে। জিলকদ মাসে এক এলাকার লোকজন আরেক এলাকার দিকে ধাবিত হবে এবং জিলহজ্ব মাসে এক শহরের বাসিন্দাগণ অন্য শহরের বাসিন্দাদের প্রতি যুদ্ধের লক্ষে ধেয়ে আসবে। এসব কিছুর চুড়ান্ত নিদর্শন হচ্ছে, আকাশে আলোকিত-উজ্জল কোনো পিলার (জুলফি তারকা) প্রকাশ পাওয়া।
-       (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬৪৭)

হযরত উমাইর ইবনে হানী (রা:) থেকে বর্ণিত। নবী করীম বলেছেন, তৃতীয় ফিতনা হলো অন্ধকারাচ্ছন্ন ফিতনা। সে ফিতনাতে লোকজন এমন ভাবে যুদ্ধ করবে যে, সে জানবেনা সে কি সত্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে? নাকি বাতিলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।
-       (মুরসাল, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১০৮)

হযরত আলী (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, তোমাদের নবী এর আহলে বাইতের (ইমাম মাহদী) আবির্ভাবের কতগুলো নিদর্শন রয়েছে, যা আখেরি জামানায় প্রকাশ পাবে। ঐ যুগে রোমানরা (আমরিকা-ইউরোপ) ও তুর্কিরা (ও রাশিয়া) একে অপরের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করবে, বিদ্রোহ করাবে, তোমাদের বিরুদ্ধে তাদের সেনাবাহিনীকে মোতায়েন করবে। আর তুর্কিরা (বা রাশিয়া) রোমানদের (আমরিকা) বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে এবং সমগ্র পৃথিবী জুড়ে যুদ্ধ, সংঘর্ষ ব্যাপক বৃদ্ধি পাবে।
-       (বিহারুল আনোয়ার, খন্ড ৫২, পৃষ্ঠা ২০৮; আসরে জুহুরী, পৃষ্ঠা ৪১)

আরবেও যুদ্ধ-বিগ্রহ দেখা যাবে

হযরত মুহাম্মদ বাকির (রহঃ) থেকে বর্ণিত, "ভয়-ভীতি, ভূমিকম্প, ফিতনা এবং যেসকল বিপদ আপদে (সমগ্র) মানবজাতি জড়িয়ে যাবে, তার পরপরই কেবল ইমাম মাহদীর আবির্ভাব হবে। এর আগে তারা (মানবজাতি) প্লেগ বা (দুর্ভিক্ষের কারণে), মহামারীতে আক্রান্ত হবে। এর পরে আরবদের মধ্যে যুদ্ধ ও রক্তপাত হবে। এমনকি বিশ্ববাসীর মধ্যেও মতবিরোধ দেখা দিবে। ধর্মে দ্বিধা বিভক্তি দেখা দিবে এবং অবস্থা এতটাই শোচনীয় হবে যে, একে অপরকে হত্যা করতে দেখে, সবাই সকাল সন্ধ্যা নিজের মৃত্যু কামনা করবে"।
-       (কামালুদ্দিন, শেখ সাদুক প্রণীত, পৃষ্ঠা ৪৩৪; আসরে জুহুরী, পৃষ্ঠা ১৮৮)

এই আলামতগুলো ঘটার সময়কাল হচ্ছে ইমাম মাহদীর আগমনের পূর্বের। আজকে বিশ্ব রাজনীতির দিকে খেয়াল করলে বুঝা যাবে যে, বিশ্বের দেশগুলো এক একটি ব্লকে ভাগ হয়ে আছে অর্থাৎ গ্রুপ হয়ে আছে। চীন-রাশিয়া যেমন মৈত্র তেমন আবার ভারত-অ্যামেরিকা-ইউরোপিয়ান কান্ট্রিগুলো। প্রতিনিয়ত দ্বন্দ্ব চলছে এই গ্রুপে গ্রুপে। বর্ডারে বিভিন্ন সময়ই দেখা যায় ছোট বড় সংঘাত। একটি সময় যখন অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়বে এবং খাদ্য সঙ্কট দেখা দিবে তখনই শুরু হবে বিশৃঙ্খলা ও মতবিরোধ। এর সূত্রপাত থেকেই শুরু হবে বিভিন্ন দেশের সাথে দেশের যুদ্ধ। বর্তমান সময়েও বিভিন্ন দেশেই চলছে যুদ্ধ, গৃহযুদ্ধ। সিরিয়া, আফ্রিকার দেশগুলোতে এগুলো দেখা যায়। সামনে পশ্চিমা দেশগুলোতেও এরকম যুদ্ধ দেখা যাবে যা বিভিন্ন হাদিস থেকে পাওয়া যায়। এভাবেই ৩য় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হয়ে যাবে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ