সম্পাদকের কথা

 بسم الله الرحمن الرحيم

নাহমাদুহু ওয়া নুছল্লি ‘আলা রসূলিহিল কারীম, আম্মা বা’দ,

পরম করুণাময় আল্লাহর নামে শুরু করছি যিনি আমাদের ও সব সৃষ্টিকুলের প্রতিপালক, যিনি ন্যায় বিচারক ও বিচার দিনের মালিক। যার সিদ্ধান্তে কোন ভুল নেই এবং তার ওয়াদা সত্য আর তা অতি শীঘ্রই বাস্তবায়িত হবে। অসংখ্য সালাম ও দুরূদ ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবী’য়ীন হযরত মুহাম্মাদ ﷺ এর প্রতি এবং তার পরিবারগণের প্রতি, সাহাবাদের প্রতি, শুহাদাগণের প্রতি ও সত্যের সৈনিকদের প্রতি।

এটাই শেষ জামানা, যেখানে সত্যকে মিথ্যায় আর মিথ্যাকে সত্যে রুপান্তর করা হচ্ছে। মানুষ ডুবে আছে পাপাচারে, অন্ধবিশ্বাসে আর এটাই সেই সময় যখন আল্লাহ আমাদেরকে আযাবের দ্বারা ধ্বংস করে দিবেন। এটা চূড়ান্ত কেয়ামত না হলেও বড় একটি জাতি কেয়ামত হবে। যার ফলে পৃথিবীর তিন ভাগের দুই ভাগ মানুষই মারা যাবে যা হাদিসে উল্লেখ এসেছে এবং তা এসেছে ইমাম মাহদীর আগমনের পূর্বের আলামত হিসেবে। আল্লাহ তা’য়ালা কুরআনে বলেন-

“এমন কোন জনপদ নেই, যাকে আমি কিয়ামত দিবসের পূর্বে ধ্বংস করব না অথবা যাকে কঠোর শাস্তি দেব না। এটা তো গ্রন্থে লিপিবদ্ধ হয়ে গেছে।”   
        -    সূরা বানী-ইসরাঈল (الإسرا), আয়াত: ৫৮

কিন্তু এই ধ্বংস আগের সেই বানী ইসরাঈল জাতি, সামুদ জাতি, ‘আদ জাতি আর লুত (আঃ) নাবীর জাতির মত হবে না। আমাদের শেষ নাবী ﷺ এসেছেন আমাদের জন্য রহমত হিসেবে, তাই আমাদেরকে সমূলে ধ্বংস করবেন না এবং আকাশ থেকেও আযাব দিবেন না। এই আযাব হবে আমাদের দুই হাতের কামাই এর ফলেই। এই আযাব দিবেন আমাদের উপর শত্রু (মুশরিক, ইহুদী-নাসারাদের) চাপিয়ে দিয়ে অথবা নিজেরা নিজেরাই ফিতনায়, যুদ্ধ-সংঘাতে লিপ্ত হয়ে।

উছমান ইব্‌ন আবূ শায়বা (রহঃ) .... আবূ মূসা (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্‌ ﷺ বলেছেনঃ আমার এ উম্মতের উপর আল্লাহ্‌র রহমত আছে। আখিরাতে তারা (স্থায়ী) আযাব ভোগ করবে না। বরং তাদের কাফ্‌ফারা এভাবে হবে যে, দুনিয়াতে তাদের শাস্তি হবে- ফিতনা, ভূমিকম্প এবং হত্যা।
- (সুনান আবূ দাউদ ইসঃ ফাঃ ৪২২৯, আলবানীর মতে সহীহ)

হাদিছের বর্ণিত সেই ফিতনার যুগ এটাই। পূর্ববর্তী যে সকল জাতিকে আল্লাহ তায়ালা যে সকল পাপের কারণে ধ্বংস করেছেন তার সব কয়টি পাপাচারই আমাদের এই বর্তমান সময়ে রয়েছে। তবে আর কিসের অপেক্ষা আযাব আসার? উম্মত বুঝতে বুঝতে অনেক দেরি হয়ে যাবে এবং তাদের জন্য যদি কোন সতর্ককারী আসে তাহলে তারা সেই সতর্ককারীকেও মিথ্যা প্রতিপন্ন করবে। সর্বশেষ ইসলামী খিলাফত ব্যবস্থা ১৯২৪ সালে ধ্বংস হয়ে যায়। আর হাদিছে রয়েছে ইসলামের বড় কোন ক্ষতি হওয়ার ১০০ বছরের মাথায় তথা প্রতি শতাব্দীতে আল্লাহ একজন মুজাদ্দিদ বা দ্বীন সংস্কারক পাঠান। আর সেই সময়টি এখন একদমই নিকটে, যখন সেই মুজাদ্দিদ এর আগমন ঘটবে, যিনি ইসলামকে পুনরায় সংস্কার করবেন ও সেই আগের মূল ইসলামে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন। তিনি এসেই চূড়ান্ত সতর্কবার্তা জানাবেন। আর আল্লাহ প্রত্যেক জাতিকে আযাব দেওয়ার আগে সেখানে সতর্ককারী পাঠায়। এটাই আল্লাহর নিয়ম। ধেয়ে আসা এই আযাব থেকে বাঁচতে হলে শিরক, পাপাচার, অন্ধবিশ্বাস, পীরপূজা ত্যাগ করে পরিপূর্ণ ইসলামে প্রবেশ করতে হবে। এবং সাথে সেই উম্মাহর রাহবার এর অপেক্ষায় যিনি আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করবেন ও এই জাতি কেয়ামত থেকে বাঁচার দিক-নির্দেশনা দিবেন যাতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আমাদেরকে এই আযাব থেকে মুক্তি দেন। এই মুক্তি যেন হয় দ্বীন ইসলামকে সাহায্য করার মাধ্যমে। কারণ আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, “যে তার দ্বীনের সাহায্য করবে আল্লাহ তার সাহায্য করবেন!” সুবহানাল্লাহ!

এই বইটিতে যারা সাহায্য করেছে এবং ওই সকল সত্যের সৈনিক, যারা সত্যের উপর অটল রয়েছে তাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। এই বইটিকে শেষ সতর্কবার্তা হিসেবে পাঠানো হলো এবং এই বইটি হচ্ছে এক সতর্ককারীর সতর্কবার্তার লিখিত রূপ। আপনি যেন বলতে পারেন, আমাদের কাছে সতর্ককারী বা সতর্কবার্তা এসেছিলো। সেই লক্ষ্যেই বইটি লিখিত হয়েছে।
                                                                                            - জিহাদুল ইসলাম

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ