১.৪ মূর্খ আলেমরা আজ উম্মতকে জাহান্নামে নিয়ে যাচ্ছে

কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে দ্বীনী ইলমের শিক্ষা ও চর্চা কমে যাবে এবং মানুষের মাঝে ব্যাপকভাবে দ্বীনী বিষয়ে মূর্খতা বিরাজ করবে। নবী বলেনঃ
إِنَّ مِنْ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ أَنْ يُرْفَعَ الْعِلْمُ وَيَثْبُتَ الْجَهْلُ

কিয়ামতের অন্যতম আলামত হচ্ছে ইলম উঠিয়ে নেয়া হবে এবং মানুষের মাঝে অজ্ঞতা বিস্তার লাভ করবে। এখানে ইলম বলতে ইলমে দ্বীন তথা কুরআন-সুন্নাহর জ্ঞান উদ্দেশ্য যা অন্য হাদিসে পাওয়া যায় আলেমদের (মৃত্যু) উঠিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে এই ইলম উঠে যাবে।

-        (বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ইলম)

বর্তমান জামানায় যাদেরকে আমরা আলেম হিসেবে চিনি তারা কতটুকু জ্ঞানী বা কতটুকু যোগ্য এ বিষয়ে জানা অতীব জরুরী কারণ হাদিসে শেষ জামানার আলেমদের নিয়ে অনেক বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে যাতে তাদের বেশির ভাগকে পথভ্রষ্ট বলা হয়েছে। এরকমও বলা হয়েছে যে তাদের ফিতনা দাজ্জালের ফিতনা থেকেও ভয়ংকর হবে! শেষ জামানায় আলেমদের সংখ্যা হবে কম অথচ দেখা যাচ্ছে সংখ্যায় বেশি। এর কারণগুলো জানতে এবং হকপন্থী আলেম চিনতে আমাদের সেই হাদিসগুলো অধ্যায়ন করা জরুরী।

১.২ মহানবী এর করা সমসাময়িক ভবিষ্যৎবাণী এর ৪ নং, ৫ নং ও ৯ নং পয়েন্টে কিছু বিশদ বর্ণনা করা হয়েছে যার মাধ্যমে জানা যায় শেষ জামানায় জ্ঞান উঠিয়ে নেওয়া হবে, আলেমদের মৃত্যুর মাধ্যমে দ্বীনী জ্ঞান উঠে যাওয়া, মুনাফিকরা জ্ঞানী সেজে ধর্ম ব্যবসা ও ভ্রান্ত মতবাদ প্রতিষ্ঠা, আলেম হলেও আমল খুঁজে পাওয়া যাবে না, অযোগ্য ব্যক্তি মুফতি সেজে ফতোয়া দিবে, দরবারী (জালিম শাসকদের কাছে গমন) আলেমদের সংখ্যা বেড়ে যাবে।

‘আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আম্‌র ইবনে আ'স (রা:) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ ﷺ -কে বলতে শুনেছি, “নিঃসন্দেহে আল্লাহ লোকদের নিকট থেকে ছিনিয়ে নিয়ে ইল্‌ম তুলে নেবেন না; বরং উলামা সম্প্রদায়কে তুলে নেওয়ার মাধ্যমে ইল্‌ম তুলে নেবেন (অর্থাৎ, আলেম দুনিয়া থেকে শেষ হয়ে যাবে)। অবশেষে যখন কোন আলেম বাকি থাকবে না, তখন জনগণ মূর্খ অনভিজ্ঞ ব্যক্তিদেরকে নেতা বানিয়ে নেবে এবং তাদেরকে ফতোয়া জিজ্ঞাসা করা হবে, আর তারা না জেনে ফতোয়া দেবে, ফলে তারা নিজেরাও পথভ্রষ্ট হবে এবং অপরকেও পথভ্রষ্ট করবে।”

-        (সহীহুল বুখারী ১০০, ৭৩০৭; সহীহুল মুসলিম ২৬৭৩; সুনান আত তিরমিযী ২৬৫২; সুনান ইবনু মাজাহ ৫২; মুসনাদে আহমাদ ৬৪৭৫, ৬৭৪৮, ৬৮৫৭; রিয়াদুস সলেহিন ১৪০০; দারেমী ২৩৯)

হযরত আবু যার (রা:) বলেন, আমি রসূল ﷺ এর নিকট একদিন উপস্থিত ছিলাম এবং আমি তাকে বলতে শুনেছি এমন কিছু রয়েছে যেটির ব্যাপারে আমি আমার উম্মতের জন্য দাজ্জালের চেয়েও অধিক ভয় করি। তখন আমি ভীত হয়ে পড়লাম, তাই বললাম, হে আল্লাহর রসূল ﷺ! এটি কোন জিনিস? যার ব্যাপারে আপনি আপনার উম্মতের জন্য দাজ্জালের চেয়েও অধিক ভয় পান? আল্লাহর রসূল ﷺ বললেন, পথভ্রষ্ট আলেমগণ।

-       (আস-সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস, ইবনে দায়লামী ১০৫২; মুসনাদে আহমাদ ২০৩৩৫)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আউস (রা:) থেকে বর্ণিত রসূল ﷺ বলেছেন, নিশ্চয়ই আমি আমার উম্মতের জন্য কোন কিছুই ভয় করি না। পথভ্রষ্ট আলেমগণ ব্যতীত।

-        (আস-সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ১০৫৩)

হযরত আলী ইবনে আবু তালিব (রা:) বলেন, রসূল ﷺ বলেছেন, শেষ জামানায় আল্লাহ তাঁর দ্বীনের ইলম উঠিয়ে নেবে, আর মানুষ দুনিয়ার এলেমের পিছনে ছুটবে। আর তখনই তারা মতবিরোধে লিপ্ত হবে।

-        (আস-সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ১০৮২)

হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা:) বলেন, আমি আল্লাহর রসূল ﷺ কে বলতে শুনেছি। এমন এক সময় আসবে যখন মানব সন্তান কুরআনের জ্ঞান থেকে দূরে সরে যাবে, আর তারা দুনিয়ার পেছনে পাগলের মত দৌড়াবে। যেমন কোন মাতাল ঘোড়া দৌড়ায়।

-        (আস-সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ১০৮৩)

এভাবেই শেষ জামানায় একটি দল দেখা যায় যাদের পথপ্রদর্শক বাহ্যিকভাবে একজন বা কিছু আলেম বা কোন সংগঠন আকারে হলেও সেই দলের পথপ্রদর্শক ও অনুসারী সবাইই জাহান্নামে যাবে।

আল্লাহর রসূল ﷺ বলেছেনঃ আমি অচিরেই লোকদের উপর এমন একটি সময় আসার আশংকা করছি যখন কেবলমাত্র নাম ছাড়া ইসলামের আর কিছুই থাকবে না এবং কুরআনের লিখিত রূপটি ছাড়া তার বাস্তবায়ন থাকবে না। মসজিদগুলো চাকচিক্যে ভরপুর হলেও হিদায়াত থেকে বঞ্চিত হবে। ঐ সময়কার আলেমরা হবে আসমানের নিচে বিচরণকারী সর্ব নিকৃষ্ট জীব। তাদের থেকেই বিভিন্ন ফিতনা ছড়াবে এবং তারা নিজেরাও সেই ফিতনায় আবর্তিত হবে।

-        (সহীহ, শু’আবুল ঈমান, বায়হাক্বী ১৯০৮; মিশকাত ২/৩৩ পৃঃ, হাঃ ২৫৮, ২৭৬)

এই হাদিসের ব্যাখ্যা থেকে পাওয়া যায় যখন কুরআনের বিধানের বাস্তবায়ন থাকবে না ও মসজিদগুলো সাজানোর প্রতিযোগিতা হবে সেই সময়ের আলেমরা পথভ্রষ্ট হবে আর খেয়াল করলে দেখা যায় যে এটাই সেই বর্তমান সময়।

রসূল ﷺ জানতেন যে, তারপর একদল আলেমদের জন্ম হবে যারা দ্বীনের ব্যাপারে যথেষ্ট জ্ঞান অর্জন করবে কিন্তু সে জ্ঞানকে দুনিয়াবানী স্বার্থে ব্যবহার করবে, জেনে শুনে ইলম গোপন করবে, জালেম-কুফফার শাসকদের বিরুদ্ধে কথা বলবে না। তাই তিনি আমাদেরকে এইসব দুনিয়ালোভী আলেমদের ব্যাপারে সতর্ক করে গেছেন।

রসূল ﷺ বলেছেনঃ “তিন শ্রেণীর মানুষকে সর্ব প্রথম জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। তার মধ্যে:- প্রথম শ্রেণীটা হলঃ একদল জ্ঞানী আলেম যারা দুনিয়াবী স্বার্থে ইলম গোপন করতো এবং জালিম শাসকদের বিরুদ্ধে কথা বলতো না।"

-        (সংক্ষেপিত, জামে আত তিরমিযী)

হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) বলেন, আল্লাহর রসূল ﷺ বলেছেন, আমার উম্মাতের মধ্যে এমন একদল লোক হবে, যারা ইলমে দ্বীনের গভীর জ্ঞান রাখবে (অর্থাৎ বড় বড় শায়েখ, আলেম) কুরআন তিলাওয়াত করবে, তারা বলবে, চলো চলো আমরা শাসক তথা রাষ্ট্রীয় সরকারের কাছে যাই এবং দুনিয়ার কিছু অংশ গ্রহণ করি এবং দ্বীনের ব্যাপারে তাদের বর্জন করে চলি। অথচ তা কখনও সম্ভব নয়। যেরূপ কাঁটাদার বৃক্ষ থেকে কেবল কাঁটার আঘাতই পাওয়া যায়, অনুরূপ তাদের নৈকট্য লাভে গুনাহ ছাড়া আর কিছুই অর্জিত হয় না।

-        (আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, ৩য় খণ্ড, পৃ: ২৩২, হা: ৮)

আবূ হুরায়রাহ্ (রা:) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ ﷺ বলেন, তোমরা ‘জুব্বুল হুযুন’ থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাও। ছাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! ‘জুব্বুল হুযুন’ কি? তিনি ﷺ বললেন, এটা হল জাহান্নামের মধ্যে একটি গর্ত। এ গর্ত হতে বাঁচার জন্য জাহান্নামও দৈনিক চারশ বার আল্লাহর কাছে আশ্রয় চায়। ছাহাবীগণ জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রসূল! এতে (এ গর্তে) কারা যাবে? তিনি ﷺ বললেন, যারা দেখানোর উদ্দেশ্যে ‘আমাল ও কুরআন অধ্যয়ন করে থাকে। কুরআন অধ্যয়নকারী (আলিম)-গনের মধ্যে তারাই আল্লাহর নিকট সর্বাপেক্ষা ঘৃনিত, যারা আমীর-ওমরাহদের (সম-সাময়িক শাসকগোষ্ঠীর) সাথে বেশী বেশী সাক্ষাত বা মেলামেশা করে।

-    (সুনান আত-তিরমিযী ২৩৮৩; সুনান ইবনু মাজাহ্ ২৫৬; য‘ঈফুত্ তারগীব ১৬; মিশকাতুল মাসাবিহ ২৭৫)

ইবনু ‘আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণিত, নবী ﷺ বলেনঃ 'যে লোক/আলিম রাজা-বাদশার নিকট আসা-যাওয়া করে সে ফিতনায় নিপতিত হয়।'

-        (সহীহ, সুনান আবু দাউদ ২৮৫৯)

ইবনু আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণিত, নবী ﷺ বলেন, আমার উম্মাতের কতক লোক ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করবে, তারা কুরআন পড়বে এবং বলবে, আমরা শাসকদের নিকট যাবো তাদের নিকট থেকে পার্থিব স্বার্থ প্রাপ্ত হবো এবং আমাদের দ্বীন থেকে তাদের সরিয়ে রাখবো। এরূপ কখনো হতে পারে না। যেমন কাঁটাদার গাছ থেকে ফল আহরণের সময় হাতে কাঁটা ফুটবেই, তদ্রূপ তারা তাদের কাছে গিয়ে গুনাহ থেকে বাঁচতে পারে না। মুহাম্মাদ ইবনুস সাব্বাহ (রহঃ) বলেন, অর্থাৎ গুনাহ ব্যতীত তারা কিছুই লাভ করতে পারে না।

-        (সুনানে ইবনে মাজাহ ২৫৫; মিশকাতুল মাসাবিহ ৬৩, ২৪৫, ২৬২)

তাবিঈ যিয়াদ ইবনু হুদায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একদা উমার (রা:) আমাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কি বলতে পারো ইসলাম ধ্বংস করবে কোন জিনিসে? আমি বললাম, আমি বলতে পারি না। তখন তিনি [উমার রাঃ] বললেন, আলিমদের পদঙ্খলন, আর আল্লাহর কিতাব কুরআন নিয়ে মুনাফিক্বদের ঝগড়া-বিবাদ বা তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত হওয়া এবং পথভ্রষ্ট শাসকদের শাসনই ইসলামকে ধ্বংস করবে।

-        (সহীহ, সুনানে দারিমী ২১৪; মিশকাতুল মাসাবিহ ২৬৯)

উমার বিন খাত্তাব (রা:) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল বলেন, ইসলাম বিজয় লাভ করবে। যার ফলশ্রুতিতে বণিকদল সমুদ্রে বাণিজ্য-সফর করবে। এমন কি অশ্বদল আল্লাহর পথে (জিহাদে) অবতরণ করবে। অতঃপর এমন একদল লোক প্রকাশ পাবে; যারা কুরআন পাঠ করবে (দ্বীনী ইলম শিক্ষা করে ক্বারী ও আলেম হবে)। তারা (বড়াই করে) বলবে, আমাদের চেয়ে ভালো ক্বারী আর কে আছে? আমাদের চেয়ে বড় আলেম আর কে আছে? আমাদের চেয়ে বড় ফকীহ (দ্বীন-বিষয়ক পন্ডিত) আর কে আছে? অতঃপর নবী সাহাবাগণের উদ্দেশ্যে বললেন, ওদের মধ্যে কি কোন প্রকারের মঙ্গল থাকবে? সকলে বলল, আল্লাহ এবং তাঁর রসূলই অধিক জানেন।তিনি বললেন, ওরা তোমাদেরই মধ্য হতে এই উম্মতেরই দলভুক্ত। কিন্তু ওরা হবে জাহান্নামের ইন্ধন।

-        (সহীহ, ত্বাবারানীর আউসাত্ব ৬২৪২; বাযযার; সহীহ তারগীব ১৩৫; হাদিস সম্ভার ১৬২১)

কাব ইবনু মালিক (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ বলেছেনঃ যে ব্যক্তি জ্ঞানার্জন করে আলিমদের ওপর গৌরব করার জন্য অথবা জাহিল-মূর্খদের সাথে তর্ক-বিতর্ক করার জন্য অথবা মানুষকে নিজের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য, আল্লাহ তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।

-    (সহীহ, সুনান আত-তিরমিযী ২৬৫৪; সহীহুল জামি ১০৬; মিশকাতুল মাসাবিহ হা/২২৫)

রসূল বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আমি আমার উম্মাহ্‌-এর জন্য কোন কিছুরই ভয় করি না, পথভ্রষ্ট আলিমগণ ব্যতীত। এরপর, যখন আমার উম্মাহ্‌-এর বিরুদ্ধে তলোয়ার উঠানো হবে, এটা তুলে নেওয়া হবে না বিচার দিবস পর্যন্ত।

-        (মুসনাদ আহমাদ ১৬৪৯৩, ২১৩৬০, ৩১৩৫৯, ২০৩৩৪; আদ্-দারিমী ২১১ ও ২১৬)

কুরআন এবং সুন্নাহ'র অর্জিত শিক্ষা ত্যাগকারী আলেমের ব্যাপারে শায়খূল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহিঃ) বলেছেনঃ

যদি কোন শায়খ কুরআন এবং সুন্নাহ হতে অর্জিত শিক্ষা অনুযায়ী আমল ত্যাগ করে এবং এমন বিচারকের অনুসরণ করে যে আল্লাহ তা'আলা ও তাঁর রসূলের শিক্ষা অনুযায়ী বিচার করে না, তখন সে একজন ধর্মত্যাগী এবং কাফের হিসেবে বিবেচিত হবে, যে দুনিয়া ও আখিরাতে শাস্তি পাওয়ার উপযুক্ত। (আল ফাতওয়া, ইবনে তাইমিয়া, খন্ডঃ ৩৫, পৃষ্টাঃ ৩৭৩)

দুনিয়াকে সবচেয়ে বেশি ধ্বংস করেছে আধা বক্তা, আধা ফকীহ, আধা ডাক্তার এবং আধা ভাষাবিদ। এদের একজন (আধা বক্তা) দ্বীনকে ধ্বংস করে, অপরজন (আধা ফকীহ) দেশ ও জাতিকে ধ্বংস করে। আধা ডাক্তার মানুষের শরীরকে নিঃশেষ করে। আর আধা ভাষাবিদ ভাষাকে বিনষ্ট করে। (মাজমাউল ফাতাওয়া: খণ্ড-৫, পৃষ্ঠা-১১৮)

দরবারি আলেমদের বৈশিষ্ট্য: দ্বীন কায়েমের কথা বলে না, জিহাদ-কিতালের কথা বলে না, জালিম ও কুফফার শাসকদের বিরুদ্ধে কথা বলে না, বরং যারা দ্বীন কায়েমের জন্যে প্রাণপণ চেষ্টা করছে, জালিম-কুফফার শাসকদের বিরুদ্ধে কথা বলছে, আল্লাহর রাস্তায় জান ও মাল দিয়ে জিহাদ ও কিতাল (যুদ্ধ) করছে তাঁদের বিরুদ্ধে এসি রুমে বসে উল্টো ফতোয়া দেয়। জালিম-মুরতাদ শাসকদের মুসলিম শাসক বলে এবং তাঁদের আনুগত্য করা ফরজ, তাঁদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা হারাম বলে ফতোয়া দেয় তারাই হচ্ছে দরবারী আলেম, তথা জালেম-তগুত শাসকদের পা চাটা আলেম। প্রকাশ্য হারাম (শরীয়তের বিলুপ্তি, মদ-জুয়া, নাইট ক্লাব), কবীরা গুনাহ এসব সম্পর্কে উনারা জনসাধারণকে কিছু বলবেন না, বললেও গোপনে।

আরও পরিস্কার করে বলি- আপনি যদি নামাজ রোজা, হজ্জ, যাকাত, বিবাহ, পারিবারিক জীবন ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে জানার জন্যে তাদের কাছে যান তাহলে সেটা নিয়ে তাদের কোন আপত্তি নেই। কিন্ত আপনি যখন দ্বীন প্রতিষ্ঠা, জিহাদ ইত্যাদি বুঝার জন্যে এইসব আলেমদের কাছে যাবেন তখন তাতে তাদের প্রবল আপত্তি আছে। কারণ, এদের কেউ দ্বীন প্রতিষ্টা বা জিহাদ নিয়ে কথা বলেনা, নিজেরাও দ্বীন প্রতিষ্ঠার তাগিদ অনুভব করেনা, জালেম এবং কুফফার শাসকদের বিরুদ্ধে কথা বলেনা। বরং উল্টো আরও ইসলামের বিরুদ্ধে বলে, ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য আজগুবি সব শর্ত জুড়ে দেয় যেসব সব শর্ত আল্লাহ রসূল , সাহাবায়ে কিরাম এবং সালফে সালেহীনরা যুক্ত করেননি। দরবারি আলেমদের জ্ঞান-গরিমা দেখে মোটেও বিচলিচ হবেন না, এই পৃথিবীতে এমন অনেক জ্ঞানী ছিল যারা বিচার দিবসে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে যদিও তারা কালেমা পড়েছিল, নামাজ-রোজা, হজ-যাকাত সবই করেছিল।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ